আ. লীগ যখন খুনের রাজনীতি শুরু করে তখন বিএনপির জন্ম হয়নি : মির্জা আব্বাস
প্রথম নিউজ , ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আজকে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন বিএনপি খুনের রাজনীতি শুরু করেছে। আরে যখন খুনের রাজনীতি শুরু হয় তখনতো বিএনপির জন্মই হয়নি। খুনের রাজনীতি দেখেছি ৭৪-৭৫ সালে। শাহজাহানপুরে আমার সামনে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনকে ধরে নিয়ে যায় এসপি মাহবুব, সার্জেন কুদ্দুস, সার্জেন্ট কিবরিয়া। এদের টিম লিডার ছিলো এসপি মাহবুব। আবুল হোসেনকে আর পাওয়া যায়নি। সে ঘটনার সাক্ষী হিসেবে এখনো আমি বেচে আছি।
তিনি বলেন, ৭২ থেকে ৭৫ সালে ত্রিশ হাজার যুবকের রক্তে রঞ্জিত আওয়ামী লীগের হাত।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের ঢাকা মহানগর দক্ষিণে মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ, রমনা ও শাহজাহানপুর থানা বিএনপি উদ্যাগ্যে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু এবং ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশ চলাকালে জেলখানায় আটক ১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আবুল বাসারের লাশ জানাযার জন্য নয়াপল্টনে আনা হয়।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।
মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি কখনই খুনের রাজনীতি করে নাই। বরং শহিদ জিয়া ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে দেশ অনেক ভালো অবস্থানে গিয়েছিলো। এদেশ তখন বিশ্বের কাছে ইমাজিন টাইগার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিলো। চোর-বাটপার ছিলো না। আজকে সেই বাংলাদেশকে বলা হচ্ছে লুটেরাদের রাষ্ট্র।
তিনি বলেন, মাঝখানে কয়েকদিন নেতাকর্মীদের উপর অন্যায় অবিচার জেল জুলুম বন্ধ ছিল। কি কারনে বন্ধ ছিল তা জানি না। এখন সব শুরু হয়েছে। জীবিত গ্রেপ্তার হচ্ছে, আর মৃত্যু বেরুচ্ছে। আমাদের কর্মী আবুল বাসার, ইদ্রিস মন্ডলকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো। আর লম্বা লম্বা কথা বলেন আমরা খুনি রাজনীতি করি না। খুনের রাজনীতি দিয়ে শুরু করেছেন এই রাজনীতি শেষ করবেন। এ সরকারকে সরানোর জন্য, দেশে গণতন্ত্র কায়েমের জন্য যতটুকু যাওয়া প্রয়োজন বিএনপি নেতাকর্মীরা ততটুকুই যাবে।
আব্বাস বলেন, নতুন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিছুদিন যাবত সরকারী কর্মকর্তাদের বক্তব্যে মনে হচ্ছে তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী নন, এরা আওয়ামী লীগের চাকর-বাকর। তারা ফরমায়েশী কথা বলছেন। ফরমায়েশি রায় দিচ্ছেন। বিএনপি নেতাকর্মীরা জেল-মৃত্যকে ভয় পায় না। সারাদেশে পোষাকি সন্ত্রাস চলছে। জনগণের টাকায় বেতন নিয়ে জনগণের উপরেই অত্যাচারের স্টিমরোলার চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, গতকাল দেখলাম তারেক রহমানের নামে তথাকথিত বিশিষ্টজনেরা নানারকম কথা বলছেন। আসলে তাদের কোনো পরিচয় নেই। এরা আওয়ামী লীগার। কোনো ভদ্রলোক আওয়ামী লীগ করে না। যারা ভদ্র তারা এ দল করতে পারে না, চলে আসতে বাধ্য হয়।
সমাবেশে সালাম বলেন, এ সরকার পতন নিশ্চিত দেখে আন্দোলনের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। শুরু করছে জঙ্গি নাটক। আরো অনেক নাটক করবে। আমরা সববিষয়ে সজাগ আছি। কোনো ফন্দিফিকির করে লাভ নেই। ক্ষমতা ছাড়তেই হবে। এবং অন্যায়ের বিচার এই বাংলার মাটিতেই হবে।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর মোড় ঘুরে আবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এছাড়াও ঢাকা মহানগর দক্ষিণে বিভিন্ন থানা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে মহানগর বিএনপি নেতারা।