অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাড়াতে প্রয়োজন বাণিজ্য প্রক্রিয়া সহজ করা

অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাড়াতে প্রয়োজন বাণিজ্য প্রক্রিয়া সহজ করা

প্রথম নিউজ, ঢাকা : দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাড়াতে শক্তিশালী আঞ্চলিক সংযোগ, সহযোগিতা এবং বাণিজ্য প্রক্রিয়া সহজ করার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

শনিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শেরাটন হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ১৪তম সাউথ এশিয়া ইকোনমিক সামিটে (এসএইএস ১৪) বক্তারা এ কথা বলেন।

বাণিজ্য, ভিসা ও নীতি-সংক্রান্ত সব প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য স্টেকহোল্ডারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা অর্থনৈতিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রযুক্তি গ্রহণ, বাণিজ্য নীতির উন্নয়ন এবং ঔপনিবেশিক সিভিল সার্ভিস থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছেন।

সিপিডির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস ফর ডেভেলপিং কান্ট্রিজের (আরআইএস) মহাপরিচালক অধ্যাপক শচীন চতুর্বেদী বলেন, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সুবিধা গ্রহণের জন্য এই অঞ্চলে আঞ্চলিক অখণ্ডতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট পলিসি ইনস্টিটিউটের (এসডিপিআই) নির্বাহী পরিচালক আবিদ কাইয়ুন সুলেরি বলেন, আঞ্চলিক সংঘাত ও জলবায়ু পরিবর্তন এ অঞ্চলের প্রধান সমস্যা।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বিশ্বের মোট বাণিজ্যের পরিমাণের মাত্র ৮ শতাংশ বাণিজ্য এই অঞ্চলে হয়। সম্ভাবনা বাড়াতে সব বাধা অপসারণ করতে হবে। বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। আমরা আমাদের অবকাঠামো উন্নয়ন করেছি। এখন আমরা ভারত, নেপাল ও ভুটানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে অবাধে চলাচল করতে চাই।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পার্লামেন্টের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, চতুর্থ শিল্প গ্রহণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে আঞ্চলিক দেশগুলোর এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।

চলতি বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশের তৈরি পণ‍্য বিশ্ববাজারে রপ্তানি কমেছে। আগের বছরের তুলনায় রপ্তানি আয় কমেছে ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

ইপিবির তথ‍্য মতে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পণ্য রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৭৬ কোটি ২০ লাখ ডলার। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৯ কোটি ৪৬ লাখ ডলার বা ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ কম।

এর আগে ২০২২ সালের অক্টোবরে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৪৩৫ কোটি ৬৬ লাখ ডলার সমপরিমাণ। শুধু গতবছরের তুলনায় কমেনি বরং অক্টোবর মাসে রপ্তানি আয়ে সরকারের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তাও পূরণ হয়নি। উল্লেখিত মাসে সরকারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫২৫ কোটি ১০ লাখ ডলারের পণ্যের। সেই হিসেবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ কম রপ্তানি হয়েছে। ফলে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৩- ২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস ভালো ইতিবাচক থাকার পর চতুর্থ মাসে রপ্তানি আয় নেতিবাচক ধারায় ফিরল।

চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে অক্টোবরে মোট ১ হাজার ৭৪৪ কোটি ৭৪ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তাতে প্রথম চার মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৫২ শতাংশ। তবে প্রথম তিন মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত রপ্তানি প্রবৃদ্ধির এ হার ছিল ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রতি মাসেই রপ্তানি আয় হয়েছে ৪০০ কোটির বেশি। এর মধ্যে আগস্টে এসেছিল সবচেয়ে বেশি ৪৭৮ কোটি ডলার। জুলাইয়ে যা ছিল ৪৫৯ কোটি এবং সেপ্টেম্বরে ৪৩১ কোটি ডলার।

২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছিল ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে ৬২ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।

রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকেও অক্টোবরের রপ্তানি আয় কমেছে। এ বিষয়ের তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্বব্যাপী মন্দার কারণে পোশাক রপ্তানি কমেছে। এটি আমরা আগেই আশঙ্কা করেছিলাম। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা কমার পাশাপাশি বিদেশের অর্থনৈতিক মন্দা কাটলে পোশাক রপ্তানি আরও বাড়বে।