সাড়ে ৭ কোটি টাকার এফডিআর স্ত্রীসহ পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে চার্জশিট

সাড়ে ৭ কোটি টাকার এফডিআর স্ত্রীসহ পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে চার্জশিট

প্রথম নিউজ, ঢাকা : অবৈধভাবে আয় করা সাড়ে ৭ কোটি টাকার এফডিআর থাকার প্রমাণ পাওয়ায় ফরিদপুরের সাবেক পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা (বর্তমানে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত) ও তার স্ত্রী রিনা চৌধুরীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বেসরকারি ওয়ান ব্যাংকের তিনটি শাখায় ১৯টি এফডিআরে ওই অর্থের প্রমাণ পাওয়া গেছে। দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক ইসমাইল হোসেন আদালতে এ সংক্রান্ত চার্জশিট দাখিল করেছেন। 

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সুভাষ দম্পতির বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর রাজধানীর বংশাল থানায় দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন। দীর্ঘ ৬ বছর পর মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হলো। এই দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকে আরও মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। 

তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী রিনা চৌধুরীর যৌথ নামে এফডিআর পাওয়া যায়। যা ওয়ান ব্যাংকের রাজধানীর বংশাল শাখা ও এলিফ্যান্ট রোড শাখা এবং যশোরের ওয়ান ব্যাংক শাখায় গচ্ছিত ছিল। কিন্তু পুলিশ সুপার ওই অর্থ দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণী কিংবা আয়কর নথি উপস্থাপন না করে গোপন রেখেছেন। এমনকি দুদকের অনুসন্ধানেও ওই আয়ের যথাযথ উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি। গচ্ছিত টাকার মধ্যে ওয়ান ব্যাংকের বংশাল শাখার ৬টি এফডিআরে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, এলিফ্যান্ট রোড শাখায় ১টি এফডিআরে ১৮ লাখ টাকা এবং যশোরের ওয়ান ব্যাংক শাখাতে ১২টি এফডিআরে ৫ কোটি ৪ লাখ টাকা পাওয়া যায়। সুদ ব্যতীত ৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকার বিনিয়োগ পাওয়া গেছে।

আসামি সুভাষ চন্দ্র ও তার স্ত্রী রিনা চৌধুরীর আয়কর নথি এবং আয় সংক্রান্ত অন্যান্য রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় ৫৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯ টাকা সঞ্চয়ের হিসাব পাওয়া যায় দুদকের তদন্তে। অর্থ্যাৎ সুদ ব্যতীত ৭ কোটি ৩৮ লাখ ৪৬ হাজার ৯৯১ টাকার যথাযথ হিসাব পাওয়া যায়নি। যার মাধ্যমে আয়ের অবৈধ প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন করতে স্থানান্তর, রুপান্তর ও হস্তান্তরের মতো কৌশল গ্রহণ করেছেন আসামিরা।

অন্যদিকে আসামি রিনা চৌধুরী সম্পৃক্ত অপরাধ হতে অর্জিত অর্থ জেনেও স্বামীর সাথে যৌথ নামে এফডিআর হিসাবে টাকা জমা করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে দুদকের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। যে কারণে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।