সরিষাবাড়ীতে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে পিটিয়েছে এমপি’র ক্যাডার বাহিনীঃ থানায় অভিযোগ
গত ২৪ আগস্ট পৌরসভার শিমলা বাজার গণ ময়দান এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রথম নিউজ. জামালপুর প্রতিনিধিঃ জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে দুই লাখ টাকা চাঁদা না দেয়ায় বিএনপি সমর্থিত ব্যবসায়ীকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এমপির ক্যাডার বাহিনীর বিরুদ্ধে। গত ২৪ আগস্ট পৌরসভার শিমলা বাজার গণ ময়দান এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। গত ২৬ আগষ্ট আবারও শিমলা বাজার এলাকার ইস্পাহানীর (থানা রোড়ে) বাসায় উক্ত ব্যসায়ীকে তুলে নেয়ার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় শহিদুল ইসলাম এর স্ত্রী সিনথিয়া আক্তার রিনি বাদী হয়ে শনিবার ২৬ আগষ্ট রাতেই সরিষাবাড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে সরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের বড়বাড়ীয়া গ্রামের যুবলীগ নেতা মৃত মিজান খা‘র পুত্র স্থানীয় এমপি’র ক্যাডার নাঈমুর রহমান দূর্জয় খানকে প্রধান বিবাদী করে ৬ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক আরোও ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাতনামা বিবাদী করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী পরিবার সূত্রে জানাগেছে, সরিষাবাড়ী পৌরসভার শিমলা বাজারস্থ (ইস্পাহানী) থানা রোড় এলাকার মরহুম হাবিবুর রহমান এর পুত্র মেসার্স আরাফাত ট্রেডার্স এর মালিক যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম ও কামরাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সেলিম মিয়া গত ২৪ আগষ্ট বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মোটর সাইকেল চালিয়ে নিজ বাসায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে শিমলা বাজার গণময়দান মাঠ এলাকায় এমপির ক্যাডার ও চাঁদাবাজ নাঈমুর রহমান দূর্জয় খান নিজের বাহিনী নিয়ে শহিদুল ইসলাম এর নিকট দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। তাদের দাবীকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নাঈমুর রহমান দূর্জয় খান এর নেতৃত্বে তার সহযোগী ফজলে রাব্বী, জীবন মিয়া, মামুন মিয়া, সাজ্জাদ হোসেন, আতিক মিয়া ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম ও সেলিম মিয়াকে এলোপাথারি পেটাতে থাকে। সুযোগ পেয়ে সেলিম মিয়া দৌড়ে পালিয়ে গেলেও সন্ত্রাসীরা শহিদুল ইসলামকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শিমলা বাজার মন্দির রোড়স্থ ফজলে রাব্বীর নির্মানাধীন ভবনে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে।
হামলার সময় এলাকার লোকজন দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখলেও কেউই এগিয়ে এসে উদ্ধার করতে সাহস পাননি বলে জানা গেছে। ৯৯৯-এ খবর পেয়ে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় তাকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে সরিষাবাড়ী ঝালুপাড়া ঘাট এলাকার আমেনা মেমোরিয়াল প্রইভেট হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসার পর সামান্য সুস্থ্য হলে শহিদুল ইসলামকে তার ইস্পাহানীর (থানা রোড়ে) নিজ বাসায় আনা হয়। এরপর গত শনিবার (২৬ আগষ্ট) শহিদুল ইসলামের ইস্পাহানীর বাসায় দুপুর দেড়টার দিকে নাঈমুর রহমান দূর্জয় খান ও তার সহযোগীরা বাসায় প্রবেশ করে খাটে শায়িত অসুস্থ্য ব্যাবসায়ী শহিদুল ইসলামএর নিকট আবারও দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না পেয়ে ভাঙ্গা ডান পা ধরে টেনে হেচড়ে বের করে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে তার স্ত্রী সিনথীয়া আক্তার রিনি, মাতা জোসনা বেগম, প্রতিবেশী রঞ্জু মিয়া, আপেল মিয়া, খালা শাশুড়ী লিলি আক্তার এর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ মহব্বত কবীরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় এলাকায় আতংক, হতাশা ও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানতে চাইলে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ মহব্বত কবীর জানান, ব্যাবসায়ীকে মারপিট করার ঘটনায় অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে দোষীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।