স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির ভিডিও করে টিকটকে ভাইরাল করলো সহপাঠী

স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির ভিডিও করে টিকটকে ভাইরাল করলো সহপাঠী

প্রথম নিউজ, বরগুনা: বরগুনার পাথরঘাটায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর জোরপূর্বক শ্লীলতাহানি করে আপত্তিকর-ভিডিও টিকটকে ভাইরাল করেছে নাঈম নামে এক সহপাঠী। ভিডিও ভাইরাল করা ওই সহপাঠীর বিচার না হলে আত্মহত্যা করবে বলে হুমকি দিয়েছে ভুক্তভোগী ছাত্রী।

পরিবারের স্বজনদের অভিযোগ, এ ঘটনায় মামলা নেয়নি পাথরঘাটা থানা পুলিশ। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।

আনোয়ার হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ভুক্তভূগী ওই শিক্ষার্থী জানান, দীর্ঘদিন ধরে সহপাঠী নাঈম তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করতো। বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) স্কুল ছুটির পর ক্লাস থেকে বের হওয়ার আগেই নাঈম ওই ছাত্রীর স্কুল ব্যাগ নিয়ে বাহিরে বের হয়ে যায়।

এ সময় শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে নাঈমের কাছে ব্যাগ আনতে গেলে জোরপূর্বক শ্লীলতাহানি করে নাঈম। এই দৃশ্য পাশ থেকে একই শ্রেণির সবুজ নামে এক সহপাঠী গোপনে মোবাইল দিয়ে ভিডিও করে। যা পরবর্তীতে টিকটক ভিডিও বানিয়ে টিকটক ও ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা বলেন, তার মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে বিরক্ত করতো বখাটে নাঈম। স্কুল থেকে ফিরে তার মেয়ে এসব বলার পরে স্কুলের শিক্ষকদেরকে জানিয়েছিলেন তারা। কিন্তু তখন শিক্ষকরা নাঈমকে শুধু মৌখিকভাবে সতর্ক করে দিলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আল-আমিন হোসেন বলেন, ইভটিজিং এর অপরাধে আগেও একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছিল অভিযুক্ত নাঈমকে। শুধু এই শিক্ষার্থী নয়, একাধিক শিক্ষার্থীকে বিরক্ত করতো নাঈম। বয়স কম, তাই তাকে শোধরানোর সুযোগ দিয়েছিলেন তারা। তবে এমন ভয়ানক কাজ যে সে করে ফেলবে তা তাদের ধারনার বাইরে ছিল। এবার নাঈম এবং সবুজের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অন্যান্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলছেন, নাঈমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে বাকি ছাত্রীরাও ইভটিজিং এর শিকার হতে পারে। তাই ছাত্রীদের নিরাপদ রাখতে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার মুঠোফোনে অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মৌখিকভাবে অভিযোগ দিলেও তারা মামলা করেনি। তবে ভিডিও ডিলেট করানোর জন্য এবং আইনি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য পুলিশ কাজ শুরু করেছে। অভিযুক্ত নাঈম ও সবুজ পলাতক আছে। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে।

পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম কবির মুঠোফোনে বলেন, এর আগে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের ইভটিজিং এর অভিযোগে পাথরঘাটার কেএম মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করেছিল বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে অভিভাবকরা গাইড করতে না পারায় এসব ছেলেরা খারাপ পথে পা বাড়ায়। প্রত্যেকের অভিভাবককে সচেতন হতে হবে। সন্তানরা কি করে, কোথায় যায়, কাদের সাথে চলা-ফেরা করে সেদিকে নজড় রাখতে হবে।

বখাটে নাঈম পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাজির খাল গ্রামের সৌদি প্রবাসী সগির খানের ছেলে।