শিশুকে হত্যার অপরাধে চাচির যাবজ্জীবন
সিলেটে সায়েল আহমদ সোহেল নামে সাড়ে তিন বছরের এক শিশুকে হত্যার দায়ে সুরমা বেগম (৩৭) নামে এক গৃহবধূকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত
প্রথম নিউজ, সিলেট : সিলেটে সায়েল আহমদ সোহেল নামে সাড়ে তিন বছরের এক শিশুকে হত্যার দায়ে সুরমা বেগম (৩৭) নামে এক গৃহবধূকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মামলার আরেকটি ধারায় তাকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (২৮ মে) দুপুরে আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন সিলেট দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী।
দণ্ডপ্রাপ্ত সুরমা বেগম সিলেটের বিয়ানীবাজারের উত্তর আকাখাজনা গ্রামের রুনু মিয়ার স্ত্রী।
এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত এই মামলার অপর দুই আসামি রুনু মিয়া ও নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিমকে খালাস দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘চাচির অনৈতিক কার্যকলাপ দেখে ফেলায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় শিশু সোহেলকে। এ ঘটনায় বিয়ানীবাজার থানায় শিশুটির বাবা খসরু বাদী হয়ে ২০২০ সালের ৮ জুন তিন জনকে আসামি করে মামলা করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় আদালত ঘটনায় জড়িত সুরমা বেগমকে এ দণ্ড দিয়েছেন। হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিও দেন সুরমা।’
রায়ে সন্তুষ্ট জানিয়ে মামলার বাদী খসরু মিয়া বলেন, ‘আমি আমার ছেলে হত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচার পেয়েছি।’
আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৭ জুন বাড়ির সামনে ভোরবেলা আম কুড়ানোর পর হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায় শিশু সোহেল। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ওইদিন তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে সোহেলের বাবা গৃহবধূ সুরমার ঘরে তল্লাশি চালিয়ে গোসলের কক্ষে একটি ড্রামে সোহেলের লাশ কম্বল দিয়ে ঢাকা অবস্থায় দেখতে পান। সুরমার সঙ্গে অপর আসামি নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিমের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিন সকাল ৬টার দিকে নাহিদুল সুরমার ঘরে প্রবেশ করে। আম কুড়ানোর একপর্যায়ে সোহেল চাচির ঘরে ঢুকে তাদের অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত অবস্থায় দেখতে পায়। এরপর সোহেলকে গাছের ডাল দিয়ে পিঠিয়ে হত্যা করে ড্রামে রাখা হয়।