মিয়ানমারের ৩৭ শহরে মার্শাল ল জারি
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের দুই বছর পর জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়িয়েছে দেশটির জান্তা সরকার
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের দুই বছর পর জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়িয়েছে দেশটির জান্তা সরকার। এ ঘোষণার পরপরই এবার ৩৭টি শহরে মার্শাল ল জারি করা হলো।
শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমারের ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি কাউন্সিলের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গেছে। দেশটিতে আগে থেকেই রাষ্ট্রদ্রোহ থেকে শুরু করে ‘মিথ্যা খবর ছড়ানো’ সবকিছুর জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সামরিক ট্রাইব্যুনালে বিচার করা হচ্ছে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের এই আইনে বিচারের জন্য অনুমতি নিতে হবে। এতে বলা হচ্ছে, ৩৭টি শহরে সামরিক ট্রাইব্যুনালের রায়ের জন্য কোনো আপিলের অনুমতি দেওয়া হবে না, যেখানে মৃত্যুদণ্ড আরোপ করা হয়েছে এবং যা অবশ্যই সামরিক প্রধান কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।
এই আইনটি করার পেছনে যে কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে তা হলো, সামরিক বাহিনী সেই অঞ্চলে প্রতিরোধ বন্ধ করার নতুন উপায় খুঁজছে যেখানে স্থানীয় লোকজন দুই বছর আগে ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল।
মিয়ানমারের ওই গণমাধ্যমটি বলছে, ‘নিরাপত্তা, আইনের শাসন ও স্থানীয়দের মাঝে শান্তি নিশ্চিত করার জন্য আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সামরিক আইনের সম্প্রসারণ প্রয়োজন ছিল।’কঠোর নতুন পদক্ষেপের অধীনে, সামরিক ট্রাইব্যুনালগুলো রাষ্ট্রদ্রোহ থেকে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ ফৌজদারি মামলার শুনানি করবে। যেখানে দেশটির সেনাবাহিনী এরইমধ্যে কয়েক ডজন সাংবাদিককে কারাগারে বন্দী করতে আইনের অপব্যবহার করেছে।
সামরিক আইন জারি করা ৩৭টি শহর, আটটি রাজ্য ও অঞ্চলজুড়ে অবস্থিত। এসব অঞ্চল হলো সাগাইং, চিন, ম্যাগওয়ে, বাগো, মন, কারেন, তানিনথাই এবং কায়া।
এর আগে, বুধবার দেশটির সামরিক সরকার ঘোষণা দেয়, জরুরি অবস্থা আরও ৬ মাস বাড়ানো হচ্ছে। ক্ষমতা দখলের পর গত আগস্টে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছিল মিয়ানমার জান্তা সরকার।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী তার নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার সময় নোবেল জয়ী সু চি গ্রেফতার হন। সে সময় জান্তা সরকার ক্ষমতা দখল করলেও দেশটির সিংহভাগ জনগণ বিষয়টি মেনে নেয়নি।
রাস্তায় বিক্ষোভ, সরকারি কাজকর্ম বয়কটসহ সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে দেশটির বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। এখনও প্রায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জান্তা সরকারের সদস্যদের লড়াইয়ের খবর পাওয়া যায়।