বাগেরহাটে গ্রামরক্ষাবাঁধ ভেঙ্গে ভেসে গেছে ঘেরের মাছ, পানিবন্দি ৩ শতাধিক পরিবার
মুহূর্তেই ভৈরবের পানিতে প্লাবিত হয় ভদ্রপাড়া, বৈটপুর ও বেমরতা গ্রামের অধিকাংশ স্থান।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: বাগেরহাট সদর উপজেলার ভৈরব নদীর তীরে থাকা গ্রামরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে তিনটি গ্রাম। শুক্রবার দুপুরের জোয়ারে পানির চাপে ভদ্রপাড়া নামকস্থান থেকে গ্রামরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে যায়। এরপর মুহূর্তেই ভৈরবের পানিতে প্লাবিত হয় ভদ্রপাড়া, বৈটপুর ও বেমরতা গ্রামের অধিকাংশ স্থান।
অতিরিক্ত পানিতে ২০ থেকে ২৫টি মাছের ঘের ও বেশকিছু পুকুর তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। একইসঙ্গে তিনটি গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে। অনেকের বাড়িঘর ও রান্না ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় খাওয়া-দাওয়া বন্ধ রয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রামরক্ষা বাঁধ সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ভদ্রপাড়া এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত চিংড়ি ঘের মালিক মশিউর রহমান বাদশা বলেন, দুপুরে জোয়ারের পানির চাপে গ্রামরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢোকে। পানিতে তিনটি মাছের ঘের ডুবে আমার ১০ লাখ টাকার মাছ বের হয়ে গেছে। আলমগীর হোসেন বলেন, জোয়ার ও বৃষ্টিতে বাড়ির আঙ্গিনায় হাটু পানি জমে রয়েছে। রান্না-বান্না বন্ধ রয়েছে। পানিতে পুকুর, বাথরুম, রান্নাঘর, উঠোন, বাগান সব একাকার হয়ে গেছে।
একই এলাকার বৃদ্ধা হায়াতুন্নেছা বেগম বলেন, নদীর পানি ঠেকানোর জন্য কোনো বেরিবাঁধ নেই। এলাকাবাসী মিলে ছোট বাঁধ দিয়ে কোনোমতে বসবাস করছি। জোয়ারের পানিতে ঘরের বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। সব জায়গাতে পানি, আমাদের দুর্ভোগ কোনোভাবে কমছে না। বাঁধ না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে এরকম মানবেতর জীবনযাপন করে আসছি। দুর্ভোগ লাঘবের জন্য ভদ্রপাড়া এলাকায় একটি বেরিবাঁধ দেয়ার দাবি জানান এই নারী।
এদিকে ভদ্রপাড়া, বৈটপুর ও বেমরতা ছাড়াও সদরন উপজেলার হাড়িখালি, মাঝিডাঙ্গা, মোরেলগঞ্জ উপজেলার ঘষিয়াখালী, বহরবুনিয়া, সানকিভাঙ্গা, খাওলিয়া, গাবতলা, মোংলার জয়মনির ঘোলসহ বেশকিছু এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব এলাকায় সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি রয়েছেন।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মাসুম বিল্লাহ বলেন, দড়াটানা ও ভৈরব নদীর পানি বিপদ সীমার ১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন নদী ও খালের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর যেসব এলাকায় বেরি বাঁধ নেই, সেসব এলাকার নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার খবর পেয়েছি। পানি কমে গেলে প্লাবিত হওয়া এলাকাগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে রিং-বেরিবাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।