নয়া মডেলেও পুরনো কায়দা

দিনের ভোট, রাতের ভোট, জাল ভোটের পর গতকাল নয়ামডেলের ভোট প্রত্যক্ষ করলো জাতি। বলতে গেলে নির্বাচনের নতুন এক মডেল।

নয়া মডেলেও পুরনো কায়দা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গতকাল একটি ফাঁকা ভোট কেন্দ্র-সংগৃহীত

প্রথম নিউজ ডেস্ক: দিনের ভোট, রাতের ভোট, জাল ভোটের পর গতকাল নয়ামডেলের ভোট প্রত্যক্ষ করলো জাতি। বলতে গেলে নির্বাচনের নতুন এক মডেল। সরকারি দলের প্রার্থী সরিয়ে নেয়া হয় আগেই। বিরোধী শিবিরের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে মাঠে নামেন আওয়ামী লীগের নেতারা। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির একজন প্রার্থীকেও বসিয়ে দেয়া হয়। ভোটের আগে নিখোঁজ হন প্রতিদ্বন্দ্বী আরও এক প্রার্থী। সব মিলিয়ে নয়া এক মডেলই দাঁড়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপ-নির্বাচনে। মডেল নতুন হলেও পুরনো কায়দায়ই ভোট হয়েছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে বিশেষ প্রার্থীর লোকজনকে দিনভর সরব দেখা গেছে। যদিও সকাল থেকেই ভোটার ছিল না কেন্দ্রে। দিনভর ভোটার খরা ছিল। 
অন্যদিকে সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম বগুড়া–৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে ফল পাল্টানোর গুরুতর অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ‘বগুড়া-৪ আসনে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। তবে ফলাফলে এসে গন্ডগোল করেছে। নির্বাচন কমিশন আমার বিজয় ছিনতাই করে মশালের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে।’ ফল পাল্টানোর কারণ কী, এমন প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, ‘শিক্ষিত সমাজের কিছু লোক আছেন, যাঁরা আমাকে মেনে নিতে চান না। তাঁরা মনে করেন, আমি পাস করলে বাংলাদেশের সম্মান যাবে, তাঁদের সম্মান যাবে। আমরা এত শিক্ষিত, হিরো আলমের মতো মূর্খকে স্যার বলে ডাকতে হবে। এ জন্য তাঁরা আমাকে মানতে চান না। তাঁরা আমার বিজয় মেনে নিতে পারেননি। 
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপ-নির্বাচনে দিনশেষে ভোটের যে হিসাব মিলেছে তা হতাশার। অর্ধ লাখের মতো ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন নির্বাচনে। সংখ্যা বিবেচনায় এটি একেবারেই কম। এতো অল্প ভোটার কেন্দ্রে গেলেও গোপন কক্ষে বিশেষ কায়দায় ভোট আদায় করার চিত্র ধরা পড়েছে দিনভর। দিনভর ভোটারদের অপেক্ষা। নির্বাচনী কর্মকর্তাদের হেসে খেলে সময় পার। একজন বিশেষ প্রার্থীর সমর্থকদের আনাগোনা কেন্দ্রে কেন্দ্রে। এমন পরিস্থিতিতে হয়েছে ভোট।
সরাইল-আশুগঞ্জ নিয়ে গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের এমপি ছিলেন আবদুস সাত্তার। গতকালের নির্বাচনে তিনিই আবার এমপি হলেন। মাঝখানে কয়টি দিন তার আসন ছিল শূন্য। আর এই ক’দিন  উকিল সাত্তারকে নিয়ে নানা নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে। গতকাল ভোটের দিনেও নাটকের কমতি ছিল না। সকাল সাড়ে ৮ টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। শীতের সকালে নির্বাচনী কর্মকর্তারা ভোটারের অপেক্ষায়। কিন্তু কোন কোন কেন্দ্রে ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও ভোটারের দেখা মেলেনি। ভোটারদের উপস্থিতি বাড়াতে সরকার দলীয় লোকজন মাইকিং করে ভোটার ডাকলেও তাতে তেমন একটা পরিবর্তন আসেনি। তবে এই নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বলেছেন- ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনার দায়িত্ব প্রার্থীদের। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীরা ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে পারেনি।  
সকাল সাড়ে ৮টা। আশুগঞ্জের শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রে নির্বাচনী কর্মকর্তারা ইভিএম মেশিন নিয়ে অপেক্ষা করছেন। ভোটারশূন্য কেন্দ্র। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেন্দ্রের বাহিরে টহল দিচ্ছেন। পেরিয়ে গেছে আরো ১৫ মিনিট। তখনো কোনো ভোটার আসেনি।  ৮টা ৫০ মিনিটে প্রথম ভোট দেন একজন। সকাল ১০টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ভোট সংগ্রহ হয় ১২টি। তবে দুপুরের পর ভোটারের উপস্থিতি বাড়তে থাকলেও সরকার দলীয় আশিবাদপুষ্টু আবদুস সাত্তারের এজেন্টারা ভোটারদের সঙ্গে গোপন কক্ষে প্রবেশ করেতে দেখা গেছে। একই সঙ্গে এ কেন্দ্রে পোলিং অফিসারদের সামনে প্রার্থীদের নামসহ প্রতীক আঁকা ইভিএম মেশিন রাখা হয়েছে। সেখানে এজেন্টরা কলার ছড়ি প্রতীক দেখিয়ে ভোট দিতে চাপ প্রয়োগ করেন। ভোটাররা বিষয়টি প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সৈয়দ রাফিউদ্দিনের নজনে আনলে, সেটি সরিয়ে নেয়া হয়। দুপুরে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সৈয়দ রিয়াদউদ্দিন বলেন, কলার ছড়ি প্রতীকের এজেন্টরা ভোটারদের সঙ্গে গোপন কক্ষে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। নিষেধ করলেও তারা শোনেননি। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপনির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা অরবিন্দ বিশ্বাস এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। 
সকাল ১০টা ৪৩ মিনিট। আশুগঞ্জের রওশন আরা জলিল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রের বাইরে জনশূন্য। ভিতরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন। ভোটকেন্দ্রের কক্ষগুলো অধিকাংশই ফাঁকা। সেই সুযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ভোটগ্রহণকারী নির্বাচনী কর্মকর্তারা খোশ গল্পে মেতেছেন। ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে কেউ কেউ হাসি ঠাট্টাও করেছেন।  তারা বলছেন, ভোটারদের উপস্থিতি না থাকায় অনেকটাই অলস সময় পার করছেন তারা। এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আশিক কায়সার গণমাধ্যমকে বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোটারদের উপস্থিতি খুবই কম। এ কেন্দ্রে ভোটার রয়েছেন ৩১৮৩ জন। প্রথম সোয়া দুই ঘণ্টায় ভোট সংগ্রহ হয়েছে ৪০টি। দিন শেষে মোট ভোট পড়েছে ২৭৫টি।  ২নং চর চারতলা ইউনিয়ন পরিষদ। উপনির্বাচনের ভোটকেন্দ্র এটি। গতকাল ভোট শুরুর প্রথম আড়াই ঘণ্টায় ভোট দিয়েছেন ৩০ জন। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১২৭৬ জন। অর্থাৎ ভোট পড়েছে  ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। প্রিজাইডিং অফিসার ফয়সাল আলম মানবজমিনকে বলেন, বেলা ১১টা পর্যন্ত ৩০ জন ভোট দিয়েছেন। ভোট নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ খুবই কম। 
সরকারি হাজী আব্দুল জলিল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রের একটি বুথে সোয়া তিন ঘণ্টায় ভোট পড়ে ২টি। পৌনে ১২টার দিকে কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটারশূন্য কেন্দ্র। নির্বাচনী কর্মকর্তারা ভোটারের অপেক্ষা করছেন। ভোটের দায়িত্বে থাকা প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বাহিরে ঘারাঘুরি করছেন। বেলা ১২টা পর্যন্ত পাঁচ শতাংশের মতো ভোট পড়ে। 
সরাইলের অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়ন। উকিল আবদুস সাত্তারের নিজ এলাকা। বলা হয় এই দুই ইউনিয়ন তার নির্বাচনী ভোট ব্যাংক। গতকাল এই এলাকায় তার এজেন্ট ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ট দেখা যায়নি। সেখানেও নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন অন্য প্রার্থীরা। তাদের অভিযোগ ওই দুই ইউনিয়নের তিনটি ভোটকেন্দ্রের ১৪টি ভোটকক্ষের গোপন কক্ষে ভোটারদের সঙ্গে সরকারদলীয় লোকজন প্রবেশ করেছেন। দুপুরে পাকশিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্র এবং অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায়, কেন্দ্রের গোপন কক্ষে ভোটার ছাড়াও অন্য ব্যক্তিরা ঢুকছেন। ভোটারদের সঙ্গে উচুস্বরে কথা বলছেন তারা। অরুয়াইল বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের পুরুষ ২ নম্বর কক্ষে ভোটারের জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের জন্য আঙ্গুলের ছাপ মেলান কলারছড়ির এজেন্ট বাচ্চু মিয়া। পরবর্তীতে ভোটারদের সঙ্গে গোপন কক্ষেও যান তিনি। একইভাবে মহিলা ভোটকক্ষের গোপন কক্ষে একাধিকবার ঢুকেছেন জয় রায় নামের আরেক এজেন্ট। তিনিও কলারছড়ি মার্কার এজেন্ট। সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, ভোট নিচ্ছিলেন পোলিং এজেন্ট। আমি বাহিরে ছিলাম। ভোট দিতে আসা সাধারণ ভোটাররা বলছেন- ভোট কেন্দ্র ফাঁকা। মাঝে মধ্যে দু’একজন ভোটার আসলেও তাদের ভোট ডাকাতি করছে সরকার দলের লোকজন ও প্রার্থী সাত্তারের এজেন্টরা। এই কারণেই সাধারণ মানুষ ভোট দিতে আসছে না। ইভিএমে ভোট হলেও জোর করে গোপন কক্ষে ঢুকে তাদের পছন্দের প্রতীকে, তারাই বাটন চেপে ভোট দেন। সাধারণ ভোটারদের কিছুই করার সাহস থাকে না। ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করছে না। এ ছাড়া অন্য কোনো দলের এজেন্ট না থাকায় ফাঁকা মাঠে তারা গোল দিচ্ছেন। যদিও ভোটকক্ষে ‘ভোট ডাকাতি’ হবে এমন আশঙ্কা করে আগেই রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন সাত্তারের প্রতিদ্বন্দ্বী তিন এমপি প্রার্থী। 
এদিকে আবদুস সাত্তারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আবু আসিফ আহমেদ নিখোঁজ থাকায় ২/১টি ভোট কেন্দ্র ছাড়া তার কোনো এজেন্ট দেখা যায়নি। তার স্ত্রী মেহেরীন আসিফ অভিযোগ করে বলেন, আমাদের এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি। আসিফ নিখোঁজ থাকায় তার কর্মীরা নিজ উদ্যোগেই কয়েকটি কেন্দ্রে এজেন্ট দেয়। তবে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়। 
মেহেরীন গতকাল দুপুরে বাড়ির নিকটবর্তী ভোটকেন্দ্র শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন। তবে তিনি ভোট না দিয়ে ফিরে যান। বলেন, এটি একটি অসুস্থ নির্বাচন। কিছুক্ষণ আগে এসে দেখলাম, একজন ভোটারের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে অন্যজন ভোট দিচ্ছেন। দিনভর সব কেন্দ্রেই এমন হচ্ছে। কর্মীদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিচ্ছে। আগেও এজেন্টদের ভয় দেখানো হয়েছে। তাদেরকে বের করে দেয়া হয়েছে। যেহেতু নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না, সেহেতু রেজাল্টটা কী আসবে জনগণ বুঝতে পারছে। 
গতকাল বিকাল ৩টার দিকে অরুয়াইল ইউনিয়নের এক আওয়ামী লীগ নেতা মসজিদের মাইকে ভোটারদের কেন্দ্রে এসে সাত্তারকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। না আসলে জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল হয়ে যাওয়ার হুমকিও দেন। আওয়ামী লীগ নেতা মাইকে প্রথমে অরুয়াইল এলাকার লোকজনকে ডাকেন। পরে বারপাইকা কেন্দ্রে গিয়ে ভোটার উপস্থিতি খুবই কম দেখে মাইকে বলেন, ‘বারপাইকা গ্রামের নারী পুরুষরা আপনারা তাড়াতাড়ি ভোট কেন্দ্রে আসেন। সময় নেই। এক ঘণ্টার মধ্যে সবাইকে আসতে হবে। সাত্তার সাহেবকে ভোট দিয়ে যান। আপনারা ঘরে বসে থাকলে বেড়িবাঁধ হবে না। ভোট না দিলে আপনাদের আইডি কার্ড বাতিল হয়ে যাবে। সবই হিসাব হইতেছে। পশ্চিমপাড়ার সবাই এসেছে। উত্তর পাড়ার লোকজন এখনো আসেননি। সরকার আওয়ামী লীগের। তারা আপনাদের জন্য কাজ করছেন। সাত্তার সাহেব বুড়া মানুষ। শেষ বয়সে উনাকে ভোট দিয়ে উনার ইজ্জত রক্ষা করুন। শেখ হাসিনার উন্নয়নের দিকে তাকাইয়া আবদুস সাত্তারকে ভোট দিতে কেন্দ্রে আসুন।’
বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে শাহবাজপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে দেখা যায় অনেক আওয়ামী লীগ নেতারা বাহিরে অবস্থান করছেন। আর বলছেন, কাস্টিং বাড়াও। বাড়ি থেকে লোকজন আনার ব্যবস্থা কর। তখন ওই কেন্দ্রে ৪৪০৫ ভোটের মধ্যে কাস্ট হয়েছে ৪৫০ ভোট। বিকাল ৪টায় দেওড়া পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, মাঠে বসে একজন পুলিশ কর্মকর্তা মুঠোফোন চালাচ্ছেন। বারান্দায় বসে গল্প করছেন ৩-৪ জন পুলিশ সদস্য। অবসর থাকায় বুথে বসে ছটফট করছেন অন্যরা। সেখানে ২৩৮১ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ২৪০ টি। সোয়া ৪টায় মলাইশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটার শূন্য কেন্দ্রে তখন ৩৫৯১ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ৫৪৫ টি। এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে ইভিএমের ভোটগ্রহণ শেষে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিখোঁজ স্বতন্ত্রপ্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের স্ত্রী মেহেরুন নিছা মেহেরীন। তিনি বলেন, এ যাবৎকালের এ পর্যন্ত এই ধরনের এমপি নির্বাচনে এত কম ভোটার কখনই হয়নি। কোনো কেন্দ্রে সাতটা, কোনো কেন্দ্রে ২০টা ভোট পড়েছে। নির্বাচন কমিশন এখানে একটি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতো, তাহলে একটি আমেজ থাকতো। 
জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুল হামিদ ভাসানী (লাঙ্গল) বলেন, ভোটারদের মধ্যে আগে থেকেই আতঙ্ক ছিল। ভোটের রেজাল্ট আগেই নির্ধারিত হয়েছে এমনটাই জানা গেছে। আমি চেষ্টা করেছি ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে। তবে তারা আমার কথাও বিশ্বাস করতে পারেনি।
উল্লেখ্য দলীয় সিদ্ধান্তে বিএনপির সাতজন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করায় শূন্য ঘোষিত ছয়টি আসনে গতকাল বুধবার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও ৩ এবং বগুড়া-৬ আসনে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। বগুড়া-৪ আসনে জিতেছেন আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) প্রার্থী। আওয়ামী লীগের সমর্থন পেলেও ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে জিততে পারেননি ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী। এখানে জয়ের দেখা পেয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী। এসব নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল একেবারে কম। এছাড়াও নানা অনিয়ম পরিলক্ষিত হয় নির্বাচনগুলোতে। 

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: