নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে দালালের কথায় ইনজেকশন পুশ করে রোগীর মৃত্যু!
চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে ইনজেকশন না থাকা সত্ত্বেও দালালের কথায় একটি ব্যথানাশক ইনজেকশন পুশ করায় ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
প্রথম নিউজ , নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে দালালের খপ্পরে পড়ে ভুল ইনজেকশন পুশ করায় হানিফ নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে ইনজেকশন না থাকা সত্ত্বেও দালালের কথায় একটি ব্যথানাশক ইনজেকশন পুশ করায় ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের সামনে ফার্মেসি পয়েন্ট থেকে ওই র্যাঙ্কস গ্রুপের ওরিস নামে একটি ইনজেকশন কিনে পুশ করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের চিহ্নিত দালাল শান্তকে আর খুঁজে পওয়া যাচ্ছে না। মৃত হানিফ (২৫) ফতুল্লা থানাধীন পঞ্চবটি এলাকার কাশেম মাদবরের ভাড়াটিয়া আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
হানিফের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শরীর ব্যথা নিয়ে দুপুরে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে আসে হানিফ ও তার সঙ্গে থাকা বেশ কয়েকজন বন্ধু। এসময় হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক নাসরিন সুলতানা তাকে ব্যবস্থাপত্রে দুইটি ওষুধ লিখে দেন। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে কোনো ইনজেকশন না থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালে চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে অবস্থান নেওয়া দালালদের একজন ইয়ামিন শান্ত তাদের সুলভে ওষুদ কিনে দেবার কথা বলে ফার্মেসি পয়েন্ট নামের একটি ওষুধের দোকানে নিয়ে যান। এসময় তিনি ব্যবস্থাপত্রে দেওয়া ওষুধসহ একটি ইনজেকশন হানিফের শরীরে পুশ করেন। এরপরই হানিফের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটা শুরু হয়। পরে চিকিৎসকদের বিষয়টি জানালে তারা হানিফকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। এরই মধ্যে হানিফের মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে হানিফের ভাই মো. লাদেন হোসেন জানান, আমার ভাইকে ভুল পুশ করিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসকের কামড়ার সামনে কি করে দালালরা দাঁড়িয়ে থাকে? এ বিষয়ে কী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের করণীয় কিছু নেই। আমি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) শেখ ফরহাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি হাসপাতালে ঘটেনি। রোগী শরীর ব্যথা নিয়ে এখানে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে ওই সময় বহিঃর্বিভাগে দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার নাসরিন সুলতানা তাকে ব্যবস্থাপত্রে দুটি ওষুধ লিখে দেন। ব্যবস্থাপত্রে কোনো ইনজেকশন দেওয়া হয়নি। রোগী কেন তার শরীরে ব্যথানাশক ইনজেকশন নিলেন?
এ ঘটনায় জড়িত হাসপাতালের চিহ্নিত দালাল শান্ত কীভাবে চিকিৎসকের কামড়ার সামনে দাঁড়িয়ে রোগীদের হয়রানি করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এই বিষয়ে অবগত নই। আর রোগীই কেন হাসপাতালের দালালদের কথায় ওষুধ নেবেন? আমরা পরে স্বজনদের থেকে এমন অভিযোগ শুনেছি। কিন্তু ঘটনার পর থেকে সেই অভিযুক্ত শান্তকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা হাসপাতালকে দালালমুক্ত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।