দুই দশক অপেক্ষার অবসান, মুক্তি পাচ্ছে ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’

দুই দশক অপেক্ষার অবসান, মুক্তি পাচ্ছে ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’
‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’র দৃশ্য, ছবি সংগৃহীত

প্রথম নিউজ, বিনোদন ডেস্ক : হাওর অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষের জীবন সংগ্রাম ও সেখানকার সংস্কৃতির ওপর ভিত্তি করে মুহাম্মদ কাইউম নির্মাণ করেছেন “কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া”। এই সিনেমাটি তৈরির গল্পও যেন আরেকটি সিনেমার মতো। ২০ বছর ধরে তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে এই সিনেমাটি বানানোর জন্য। অপেক্ষার প্রহর হয়তো শেষ। তবে সিনেমাটি নিয়ে আগ্রহ দেখায়নি দেশের প্রেক্ষাগৃগুলো। অনেক ঘুরে ঘুরে আলাপ করেও পাননি কাঙ্খিত প্রেক্ষাগৃহ। তবে আশার সংবাদ, সিনেমাটি অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সে। গত ২৯ অক্টোবর সিনেমাটির প্রিমিয়ার শো হয়েছে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ১১৭ মিনিটের এই সিনেমাটি বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পাবে। প্রতিদিন দুটি শোর একটি শুরু হবে বেলা ১১টায় এবং দ্বিতীয় শো বিকাল সাড়ে ৪টায়। সিনেমাটি দেখানো হবে আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। সিনেমাটি নির্মাণের যে দীর্ঘ গল্প সেটির শুরু প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান না পাওয়া থেকে। এরপর তিন বছর ধরে হাওরের দুর্গম এলাকায় শুটিং, ডাবিং না করে সম্পূর্ণ সংলাপ লোকেশনে রেকর্ড করা, কেবল সিনেমার জন্যই মৌলিক গল্প লেখা এবং শেষে যুক্ত হয়েছে প্রেক্ষাগৃহ না পাওয়ার গল্প। অনেক ঘুরেও সিনেমাটি মুক্তির জন্য প্রেক্ষাগৃহ পাচ্ছিলেন না জানিয়ে তিনি অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, “ঢাকা এবং বিভিন্ন জেলা শহরের সিনেমা হল মালিকদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তারা কেউ সিনেমাটি প্রদর্শনে আগ্রহী নন। অনুরোধ করেই স্টার সিনেপ্লেক্সকে রাজি করানো হয়েছে। হল মালিকরা  বলছেন, ‘এ ধরনের সিনেমা প্রদর্শন করে ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হওয়া যায় না। লোকসান গুণতে হবে'। কিন্তু এ ধরনের নিরীক্ষাধর্মী সিনেমা প্রদর্শনের তাহলে ব্যবস্থা কী? সরকার কি ব্যাপারটি নিয়ে ভাবছে?” আক্ষেপ করে কলকাতার প্রেক্ষাগৃহ “নন্দন”র উদাহরণ টেনে কাইয়ুম বলেন, “আমাদের কেন এ রকম একটি বিকল্প ‘ফিল্ম সেন্টার' গড়ে উঠল না? যেখানে সব রকম সিনেমা প্রদর্শনের সুযোগ থাকবে। ভিন্ন গল্পের সিনেমা হলেই আমাদের হল মালিকরা নিতে চান না। সরকারও বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করেননি। তাহলে ভিন্ন গল্পের নিরীক্ষাধর্মী সিনেমা নির্মাণ করে লাভ কী? সব কি শুধু নাচ-গানে.. সরকারের ভাবা উচিৎ।”

সিনেমাটি নির্মাণের পেছনের গল্প বলতে গিয়ে ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টার বলেছে, পরিচালককে তার স্বপ্নের প্রকল্প তৈরি করতে পর্যাপ্ত অর্থ সংগ্রহের জন্য প্রায় ২০ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। তিনি কোনো প্রযোজক পাননি। বা এমন কোনো অর্থের উৎস ছিল না তার যা তাকে সহায়তা করতো। তবে, “ক্রাউড-ফান্ড”র মাধ্যমে তিনি অর্থ সংগ্রহ করতে পারতেন। কিন্তু কেন করেননি- এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “কাউড-ফান্ডিং সহজ প্রক্রিয়া নয়। চলচ্চিত্র নির্মাণে ক্রাউড-ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের একটি ভালো সুযোগ রয়েছে। তবে আমি স্বনামধন্য চলচ্চিত্র নির্মাতা নই। এইভাবে, সম্ভবত আমি চলচ্চিত্রের জন্য অর্থ পেতাম না। এছাড়া সত্যি বলতে, অন্য কারও কাছে অর্থ ভিক্ষাও করতে চাইনি। আমি আমার নিজের টাকা দিয়ে নিজের ছবি বানাতে চেয়েছিলাম।” সিনেমাটির গল্প প্রসঙ্গে নির্মাতা বলেন, “বিরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশে বৈষম্য-বঞ্চনার মাঝে টিকে থাকা প্রান্তিক মানুষের সম্মিলিত লড়াইয়ের গল্প নিয়ে ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া' সিনেমাটি বানানো হয়েছে। হাওরের জল ও কাদায় মেশা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উঠে এসেছে কাহিনীতে। দেশ ও সমাজের ভিত্তিমূলে যে শ্রমজীবী মানুষ, তাদের জীবন সংগ্রামের কথা নাটকীয় দৃশ্যরূপে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।” “কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া” সিনেমায় অভিনয় করেছেন জয়িতা মহলানবীশ, উজ্জ্বল কবির হিমু, সুমী ইসলাম, সামিয়া আকতার বৃষ্টি, বাদল শহীদ, মাহমুদ আলম ও আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom