ঢাবিতে অবৈধভাবে শিক্ষকের কক্ষ দখলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ 

বুধবার (১৪ জুন) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।

ঢাবিতে অবৈধভাবে শিক্ষকের কক্ষ দখলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ 

প্রথম নিউজ, ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের এক শিক্ষকের কক্ষ দখলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ওই বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৪ জুন) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। পরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা।

কক্ষে তালা দেওয়া ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকের নাম অধ্যাপক ড. ইসরাফিল শাহীন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ওই বিভাগের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক।
প্রতিবাদে বিভাগের শিক্ষার্থী বর্ণালী ঘোষ বলেন, ঢাবি অধ্যাপকের কক্ষ অবৈধভবে দখলের মাধ্যমে সংস্কৃতির ওপর আঘাত করা হয়েছে। আমাদের শিক্ষকরা আমাদের দেবতাতুল্য। তাদের প্রতি এরকম লাঞ্ছনা আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বিভাগের এমফিল গবেষক সবুজ তালুকদার বলেন, এই বিভাগ আমাদের পরিবার। আমরা এই প্রশাসনকে হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, এই ভাঙা তালার ওপরে যদি আবার তালা লাগে, যেখান থেকে আপনারা তালা লাগান, সেই রুমে তালা ঝুলিয়ে দেব। আর কার এজেন্ডা আপনারা বাস্তবায়ন করেন, আমরা দেখব। বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ড. সাইদুর রহমান লিপন বলেন, আমি এই বিভাগের প্রথম শিক্ষার্থী। এই রুম থেকেই আমাদের বিভাগের পথচলা শুরু। এই আঘাত আমাদের অস্তিত্বের ওপর আঘাত। তাই এই কক্ষ আমরা কখনোই অন্য কারও হাতে যেতে দেব না।

বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদুল কবির বলেন, আজকে আমাদের এখনে দাঁড়ানোর কথা না, ক্লাসে থাকার কথা। আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনকে জানিয়ে এসেছি ২০ বছর ধরে একজন অধ্যাপক বিভাগের সৃষ্টিলগ্ন থেকে এই রুমে বসেন। আরেকটি বিভাগের রুম বড় করার জন্য এই রুম সিলগালা করে দেওয়া হলো! এটা জ্ঞানের ওপরে আঘাত, সংস্কৃতির উপরে মৌলবাদের আঘাত। আমরা উপাচার্যের কাছে বিচার চাই, তদন্ত করা হোক, কারা এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছে?

বিভাগের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান লিয়ন, বারবার আমাদের কাছে চিঠি আসে, বার বার আমরা চিঠি দিয়ে জানিয়েছি এটা দখল কেন অযৌক্তিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সৌন্দর্য আছে, ভদ্রতার মানদন্ড আছে। এটা কেমন ভদ্রতা! এই ধরনের কাজ আমাদের মর্মাহত করেছে। একটি বিভাগকে সুবিধা দেওয়ার জন্য আরেকটি বিভাগের পাঠ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বিষয়টি দেখার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের কক্ষ বিভাজন কমিটির। যে যেটার প্রাপ্য সে অনুযায়ী কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়ে থাকে। এখন কেউ অযৌক্তিকভাবে অন্য কারো কক্ষ দখল করতে পারে না, এটা সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম বহির্ভূত একটি কাজ। বিষয়টি কমিটির সদস্যরা ডিনের সাথে বসে, শিক্ষকদের সাথে বসে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবে।

প্রতিবাদ কর্মসূচিতে থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান লিয়নের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. আহমেদুল কবির, সহকারী অধ্যাপক কাজী তামান্না হক সিগমা, তানভীর নাহিদ খান সহ বিভাগের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।