ঢাকা মেডিকেলে ভোগান্তি কমাবে ই-টিকেটিং ব্যবস্থা
জানা যায়, এখন থেকে বাসায় বসেই নির্ধারিত সময়ের অনলাইনে টিকিট কেটে সরাসরি এসে চিকিৎসককে দেখাতে পারবেন রোগীরা। গত সোমবার(১৯ জুন) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এটির উদ্বোধন করেছেন।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: রাজধানীসহ সারাদেশ থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী চিকিৎসা নিতে আসে ঢাকা মেডিকেল কলেজ(ঢামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগে। এসেই দাঁড়াতে হয় দীর্ঘ লাইনে। অপেক্ষা করতে হয় টিকিটের জন্য। এরপর আবার শুরু হয় চিকিৎসক কক্ষের বাইরের সিরিয়াল। সেইসব ভোগান্তি কমাতে এবার ঢামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে চালু হয়েছে ই-টিকিটিং সিস্টেম।
জানা যায়, এখন থেকে বাসায় বসেই নির্ধারিত সময়ের অনলাইনে টিকিট কেটে সরাসরি এসে চিকিৎসককে দেখাতে পারবেন রোগীরা। গত সোমবার(১৯ জুন) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এটির উদ্বোধন করেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চালু হওয়ার পর মঙ্গলবার (২০ জুন) পর্যন্ত ই-টিকিট রেজিস্ট্রেশন করেছেন ২৪৩৩ জন। এদের মধ্যে ৫৪ জন মঙ্গলবার(২০ জুন) চিকিৎসক দেখিয়েছেন। বুধবার(২১ জুন) ওয়েবসাইটে ভিজিট করেছেন ৮৪৫ জন এবং টিকিট কেটে রোগী দেখিয়েছেন ২৩ জন। রোগীদের ই-টিকিট কাটার জন্য হাসপাতালে বিভিন্ন পোস্টার লাগানো হয়েছে বলেও জানা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, ই-টিকিটিং সিস্টেম চালু করায় আমরা পরিচালক মহোদয়কে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। এটি একটি ভালো উদ্যোগ। এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে ই-টিকিট কেটে কেউ যেন হয়রানি ও প্রতারণার শিকার না হন। এটা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে আস্তে আস্তে এটির প্রচার বাড়লে আশা করি রোগীরা আরও ভালোভাবে সেবা নিতে পারবেন।
এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, গত সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ই-টিকিটিং সিস্টেমের উদ্বোধন করেছেন। উদ্বোধনের দুদিনে আমরা মোটামুটি সাড়া পাচ্ছি। মঙ্গলবার আমাদের এখানে ৫৪ জন চিকিৎসা নিয়েছেন এবং বুধবার ২৩ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া প্রায় তিন হাজার জনের বেশি এটিতে রেজিস্ট্রেশন করেছেন। তারা হয়ত বিভিন্ন দিনে শিডিউল নিয়েছেন পরে ডাক্তার দেখাবেন।
তিনি আরও বলেন, এখানে আপনি খুব সহজেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওয়েবসাইট বা কিউআর কোডের মাধ্যমে প্রবেশ করে আপনার মোবাইল নাম্বার দিয়ে পর্যায়ক্রমে এটি রেজিস্ট্রেশন করে টিকিট ডাউনলোড করবেন। এরপর সেটি এনে সংশ্লিষ্ট বিভাগে দেখাতে হবে। এটি আমাদের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এটির সফলতা আসলে দেশের সমস্ত জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ব্যবহার করা হবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, অনলাইনে টিকিট কেটে আসার পরে সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক দেখাবেন। যেহেতু আমাদের এখানে প্রতিটি বিভাগে ৩-৪ জন করে চিকিৎসক থাকেন যারা ই-টিকিট কেটে আসবেন তাদের জন্য একজন চিকিৎসক আলাদাভাবে চিকিৎসা দিবেন।
তিনি আরও বলেন, আপনি অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন গেটওয়েতে টাকা পেমেন্ট করে খুব সহজেই ঘরে বসে টিকিট কেটে চিকিৎসককে দেখাতে পারবেন। এতে আমাদের ভোগান্তি অনেকটাই কমবে। আমরা যদি এটাতে সাকসেসফুল হই তাহলে স্মার্ট বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
ই-টিকিট কাটার পদ্ধতি
১। ই-টিকিট কাটার জন্য আপনাকে প্রথমেই https://dmch.bindu.health এই ওয়েবসাইটে ঢুকতে হবে অথবা কিউআর কোড দিয়ে সরাসরি আপনি এই ওয়েবসাইটে ঢুকতে পারবেন।
২। আপনি আপনার একটি সচল মোবাইল নাম্বার দিয়ে এটি লগইন করবেন। সেক্ষেত্রে আপনার মোবাইলে একটি ওটিপি কোড নাম্বার আসবে। সেই কোডটি দিয়ে আপনি পরবর্তী স্টেপে যেতে পারবেন।
ই-টিকিট কাটার পদ্ধতি
৩। সেখানে আপনার নাম, জন্ম তারিখ, কোন বিভাগের চিকিৎসককে দেখাতে চান, কোন তারিখে দেখাতে চান ওই তারিখের তিনটা স্লটের কোন টাইমে চিকিৎসককে দেখাতে চান, আপনি কোন বিভাগের কোন জেলা উপজেলা ইউনিয়ন থেকে এসেছেন, আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার(প্রযোজ্য নয়) সেটি সিলেক্ট করে পরবর্তী স্টেপে যাবেন। আপনার পছন্দমতো তারিখ দিয়ে টিকিট কাটতে পারবেন।
৪। আপনাকে টিকিটটি কনফার্ম করার জন্য ব্যাংকের কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং এবং ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের যেকোনো একটি সিলেক্ট করে টিকিট কনফার্ম করবেন।
৫। দেশের প্রচলিত অধিকাংশ অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করেই আপনি টিকিটের ১০ টাকা মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত কোন টাকা রোগীকে পরিশোধ করতে হবে না। এরপর সেই টিকিটটি প্রিন্ট করে এনে আপনি সরাসরি সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসককে দেখাতে পারবেন।