জ্বালানি তেলের শুল্ক-কর প্রত্যাহারে এনবিআরের সামনে মানববন্ধন
আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টায় তারা এনবিআরের প্রধান ফটকের পাশে মানবন্ধন শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুরোধে তারা সেখান থেকে চলে যান।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: জ্বালানি তেলে বিদ্যমান ৩৭ শতাংশ শুল্ক ও কর প্রত্যাহার চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে মানববন্ধন করেছেন ‘দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত জনতা’র ব্যানারে বেশ কিছু তরুণ। হাতে থালা-গামলা নিয়ে সেখানে অবস্থান নেন তারা।
আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টায় তারা এনবিআরের প্রধান ফটকের পাশে মানবন্ধন শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুরোধে তারা সেখান থেকে চলে যান।
মানববন্ধনে তারা বলেন, লকডাউন, বন্যা, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এমনিতেই দেশের অর্থনীতি ভালো নেই। সবকিছুর দাম বাড়তি। গরিবরা ঠিকমতো খেতে পাচ্ছেন না, মধ্যবিত্তরা খাবার কম খাচ্ছেন। সংসার চালাতে মা তার সন্তানকে বিক্রি করছেন, বাবা কিডনি বিক্রি করে মেয়ের বিয়ে দিচ্ছেন। ঋণের চাপে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটছে দেশে। মূল্যস্ফিতিতে দেশের প্রতিটি জনগণ এখন দিশেহারা।
তারা বলেন, এর মধ্যে হঠাৎ করে মরার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো অতি উচ্চহারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করেছে সরকার। এর কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয়ের কথা বলা হলেও এই মূল্য প্রকৃত মূল্য নয়। সরকারের নানা প্রকার শুল্ক ও কর সহকারে মূল্য অস্বাভাবিক বেড়েছে। এখন তেলের বাড়তি মূল্যের মধ্যে শুল্ক ১০ শতাংশ, ভ্যাট ১৫ শতাংশ, অগ্রীম আয়কর ৫ শতাংশ, অগ্রীম ভ্যাট ৫ শতাংশসহ মোট শতকরা ৩৭ শতাংশ সরকারি শুল্ক ও কর বিদ্যমান। সেটা যেন রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে এক বিরাট লাভজনক ব্যবসা।
‘যে কারণে ডিজেল প্রকৃত মূল্য ৮৩ টাকার সঙ্গে শুল্ক ও কর ৩১ টাকা যোগ হয়ে ১১৪ টাকা হয়েছে। একইভাবে পেট্রলে ৩৬ টাকা, অকটেনে ৩৭ টাকা করে শুল্ক-কর নিচ্ছে সরকার। এ পরিস্থিতিতে সরকারকে অতি লাভজনক এ ব্যবসা থেকে সরে আসতে হবে। জ্বালানি তেল থেকে ৩৭ শতাংশ শুল্ক-কর বাদ দিতে হবে। জ্বালানি তেল শতভাগ কর ও শুল্কমুক্ত করে প্রকৃত মূল্য হিসেবে ডিজেল ৮৩ টাকা, পেট্রল ৯৪ টাকা এবং অকটেন ৯৪ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।’
বক্তারা আরও বলেন, জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে ব্যাপকহারে বেড়েছে পরিবহন ভাড়া। আর যেহেতু পরিবহনের সঙ্গে দৈনন্দিন সব মৌলিক খাত জড়িত, তাই জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ জীবনযাপনের সব ব্যয় কয়েকগুন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মৃত্যু ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। জনগণের জন্য রাষ্ট্র, জনগণের জন্য সরকার। সেই জনগণকে শোষণ করে রাষ্ট্র তার লাভজনক ব্যবসা অব্যাহত রাখতে পারে না।
তারা বলেন, যদি কোনো সাধারণ ব্যবসায়ী ১০০ টাকায় ৩৭ টাকা লাভ করতেন, তবে সরকার সেটাকে অতি মুনাফা হিসেবে দেখাতো। ম্যাজিস্ট্রেট ঐ ব্যবসায়ীর ব্যবসা সিলগালা করতেন। তবে রাষ্ট্র কীভাবে কোটি কোটি জনগণের কাছ থেকে ৩৭ শতাংশ লাভে ব্যবসা করে? এ ব্যবসা চলতে থাকলে দেশে দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত, যেখানে কোটি কোটি দরিদ্র ও মধ্যবিত্তের মৃত্যু অবধারিত।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews