ছাত্রদল নেতাসহ আটক ৫, ছাড়িয়ে নিতে থানা ঘেরাও

প্রথম নিউজ, অনলাইন: ইফতারের আগে মসজিদে হুজুরের বয়ান নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মারধরের ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ ৫ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে ওই ছাত্রদল নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে থানা ঘেরাও করেছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
আজ রবিবার (১৬ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে কালিগঞ্জ থানায় এ ঘটনা ঘটে।
আটককৃতরা হলেন- কালীগঞ্জ সরকারি শ্রমিক কলেজ শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ভাদার্ত্তীর এলকার আবুল হোসেন প্রিন্স (২২), ছাত্রদলের কর্মী ভাদার্ত্তীর রিদয় (২৪), বালীগাঁও এলাকার চয়ন (১৬) আরাফাত (২০) ও সিহান (১৮)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল শনিবার (১৫ মার্চ) ইফতারের আগে কালিগঞ্জ পৌর এলাকার চৈতারপাড়া নামক স্থানে সুদ ও ঘুষ খাওয়া হারাম বলে মসজিদে হুজুরের বয়ান নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন।
আহতদের চিকিৎসার জন্য কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে এক পক্ষের হয়ে কালীগঞ্জ সরকারি শ্রমিক কলেজ শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হোসেন প্রিন্স প্রতিপক্ষকে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনায় পুলিশ আজ রবিবার ভোররাতে প্রিন্সসহ ৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে আটককৃতদের থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজের ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা থানা ঘেরাও করে।
আজ বেলা ১১টা ১২ মিনিটে কালিগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার এসআই সুশান্ত কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আসামিদের
কালিগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মসজিদে সুদ ও ঘুষ খাওয়া হারাম সংক্রান্ত বয়ানকে কেন্দ্র করে দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষে ১৪/১৫ জন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে।’
রাঙামাটি সদর উপজেলার সাতছড়ি ইউনিয়নে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। শনিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটি কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন।
ফরিদপুরে তরমুজবাহী ট্রাক, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার ত্রিমুখী সংঘর্ষে দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো একজন।
আজ রবিবার (১৬ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে ঢাকা-ফরিদপুর মহাসড়কে ফরিদপুর সদরের শিবরামপুর বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন আখ সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন করিমপুর হাইওয়ে থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী।
নিহতরা হলেন— মোটরসাইকেলচালক ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের নয়ন শেখ (২৪) ও একই ইউনিয়নের মদনদিয়া গ্রামের শাজাহান শেখ (৫২)।
এলাকা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের দিক থেকে আসা রাজবাড়ীগামী একটি তরমুজবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারালে একটি মোটরসাইকেল ও রিকশার সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেলের চালক নয়ন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। মোটরসাইকেল আরোহী নিহতের মা এবং অটোরিকশাচালক গুরুতর আহত হন।
তাদের উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে অটোরিকশাচালক মারা যান।
করিমপুর হাইওয়ে থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী জানান, রাজবাড়ীগামী নিয়ন্ত্রণ হারানো একটি তরমুজবাহী ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেল ও রিকশার সঙ্গে সংঘর্ষে মোটরসাইকেলচালক এবং অটোরিকশাচালকের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া মোটরসাইকেল আরোহী নিহতের মা গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তবে ট্রাকচালককে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
রমজানের শুরুতেই ঈদের বার্তা পৌঁছে যায় ঘরে ঘরে। তাই অনেকে রমজানের শুরুতেই ঈদের কেনাকাটায় নেমে পড়েন। ঈদ যত ঘনিয়ে আসে, তত বেশি জমে ওঠে কেনাকাটা। প্রতিবারের মতো এবারও ঈদে জমজমাট কুমিল্লার বিভিন্ন শপিং মল ও মার্কেট।
সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ক্রেতায় সরগরম থাকছে মার্কেগুলো। ফলে তাদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিক্রেতাদের।
নগরীর অভিজাত শপিং মল কিউ আর টাওয়ার, প্লানেট এসআর, নিউমার্কেট, সাত্তার খান কমপ্লেক্স, খন্দকার হক টাওয়ার, ময়নামতি গোল্ডেন টাওয়ার, আনন্দ সিটি সেন্টার, ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা ঘুরে দেখা গেছে, নতুন পোশাকে ঈদ উদযাপনে কেনাকাটা পুরোদমে জমে উঠেছে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষের পদচারণে মুখর নগরীর বিপণিবিতানগুলো।
বিশেষ করে পুরুষ ক্রেতার চেয়ে নারী ক্রেতার সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। পছন্দের পোশাক কিনতে ঘুরছেন এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে। ভারত সীমান্তঘেঁষা এ জেলার ফ্যাশন-সচেতন তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ভারতীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাক আর তরুণদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে কুমিল্লার বিখ্যাত খাদির পাঞ্জাবি। ক্রেতার চাপে ব্যবসায়ীদের দম ফেলার যেন সময় নেই।
একই চিত্র দেখা গেছে সড়কের পাশের ফুটপাতের দোকানগুলোতেও। নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা ভিড় করছেন সেসব দোকানে।
বিক্রেতারা বলছেন, অন্য বছরের তুলনায় এবার দ্রুত ঈদের বাজার জমে উঠেছে। ১০ রমজান থেকে পুরোদমে শুরু হয়েছে বেচাকেনা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ক্রেতার চাপ থাকছে।
দিন যত যাচ্ছে, ক্রেতাদের ভিড় ততই বাড়ছে।
প্লানেট এসআর শপিং মলের ব্যবসায়ী আরিফ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রতিবছরের মতো এ বছরও মোটামুটি কেনাকাটা শুরু হয়েছে। মধ্যরাত পর্যন্ত ক্রেতার সমাগম থাকছে। শেষ পর্যন্ত এমন থাকলে আশা করা যায় এ সিজনে ভালো লাভবান হব।
সাত্তার খান কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন, এবার জামদানি শাড়ি, পাকিস্তানি, ভারতীয়, নতুন ফারসি, রাজগুরু, বুটিকসহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ির চাহিদা তুঙ্গে। এ ছাড়া তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে পাকিস্তানি ও ইন্ডিয়ান থ্রি-পিস, বুটিক থ্রি-পিস ও আফগান ড্রেস। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভারতীয় থ্রি-পিস।
নগরীর চর্থা এলাকার বাসিন্দা খাদিজা আক্তার নামে এক ক্রেতা বলেন, সকালে এসেছি ছেলে-মেয়ে এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য ঈদের জামাকাপড় কিনতে। কিন্তু মার্কেটে এসে দেখি পা ফেলার জায়গা নেই। মানুষের ভিড়ে অসহনীয় গরম। এর মধ্যে দোকানদাররা জামা-কাপড়ের দাম চাচ্ছেন অনেক বেশি। ঘণ্টাখানেক ঘুরছি অতিরিক্ত দামের কারণে এখনো কোনো পোশাক কিনতে পারিনি।
আবদুর রহমান নামে আরেক ক্রেতা বলেন, বাচ্চাদের পোশাক উত্তাপ ছড়াচ্ছে। হাজার-পনেরো শ টাকার নিচে পছন্দ করার মতো কোনো পোশাক নেই। মার্কেটে এসে বাজেট মেলাতে পারছি না। পরিবারের সবার জন্য নতুন পোশাক কিনতে হলে ফুটপাতের দোকান ছাড়া বিকল্প উপায় নেই।
নিগার সুলতানা নামে এক তরুণী বলেন, আট হাজার টাকায় ভারতীয় ব্র্যান্ডের একটি থ্রি-পিস নিয়েছি। গতবারের তুলনায় এবার দাম একটু বেশি বলে মনে হচ্ছে।
মার্কেটের মতোই ফুটপাতেও জমজমাট বেচাকেনা চলছে জানিয়ে মাসুদ আলম নামে ভাসমান এক বিক্রেতা বলেন, মার্কেটের জিনিস আর আমাদের জিনিসের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। বরং আমাদের দোকান ভাড়া লাগে না। তাই দাম অনেক কম। ৫ রোজা থেকেই ভালো বিক্রি হচ্ছে। ঈদের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে এবং বিক্রিও ভালো হচ্ছে।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ঈদের বাজার নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আজ রবিবার থেকে ২৪ ঘণ্টা পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া যেসব এলাকায় অপরাধ বেশি সংঘটিত হয়, সেসব এলাকায় বিশেষ নজর দেওয়া হবে।