চুরির অভিযোগে চুন-বালু মেশানো পানি খাইয়ে যুবককে হত্যা

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে হেলাল মিয়ার মৃত্যু হয়েছে। গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

চুরির অভিযোগে চুন-বালু মেশানো পানি খাইয়ে যুবককে হত্যা

প্রথম নিউজ, সিলেট: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় গরু চুরির অভিযোগে এক যুবকের ওপর নির্মমতা চালানো হয়েছে। গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটুনি, এরপর চুন ও বালু মেশানো পানি খাওয়ানো হয় তাকে। এতে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম হেলাল মিয়া (৩৫)। তিনি গোয়াইনঘাট উপজেলার ডৌবাড়ি ইউনিয়নের ঘোষগ্রামের মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে হেলাল মিয়ার মৃত্যু হয়েছে। গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এ ঘটনার ৪ মিনিট ৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, গ্রামের একটি মাঠে এক যুবক ও এক কিশোরকে ঘিরে মানুষের জটলা। যুবক হেলালের হাত পিছমোড়া করে বাঁধা। তাকে মাটিতে ফেলে তার ওপরে উঠেন এক যুবক। ওই যুবক হেলালের দুই পা উপর দিকে তুলে ধরেন। তখন আরেকজন তাকে বেধড়ক পেটাতে থাকে। এ সময় হেলাল চিৎকার করছিলেন। একটু পরে হেলালের মুখ মাটিতে চেপে ধরে তাকে আরও পেটানো হয়। পাশেই বেঁধে রাখা হয়েছিল আরেক কিশোরকে। জড়ো হওয়া লোকজন গরু চুরির অভিযোগ করছিলেন। সেখানে একটি গরুও দেখা যায়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকালে হেলাল ও ওই কিশোরকে আটক করা হয়। পরে দিনভর তাদের ওপর চলে নির্যাতন। গোয়াইনঘাট থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ জানান, প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে গরু চোর সন্দেহে হেলালকে আটক করে জনতা মারধর করে। এরপর চুন ও বালু মেশানো পানি জোর করে খাওয়ানো হয়। মঙ্গলবার রাতে তাকে মধ্যজাফলং ইউনিয়ন অফিসে নিয়ে রাখা হয়। বুধবার সকালে হেলালের বমি ও রক্তযুক্ত পায়খানা শুরু হয়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়। 

ওসি আরও জানান, ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে। এ ঘটনায় আহত কিশোরকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডৌবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য হাফিজ উল্লাহ বলেন, ‘দুইজন চোরকে আটক করে খুব মারধর করা হয়েছে শুনেছি। পরে শুনি একজন মারা গেছে। এ ব্যাপারে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।’

স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার দুইজনকে আটক করে মারপিট করা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও আটকদের উদ্ধার না করেই পুলিশ ফিরে যায়। এ প্রসঙ্গে গোয়াইনঘাট থানার ওসি বলেন, ‘পুলিশ যাওয়ার পর গ্রামের লোকজন জানান আটক দুইজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের স্বজনরা নিয়ে গেছেন। এমন তথ্য পেয়ে পুলিশ ফিরে আসে।’