চট্টগ্রাম যেন জলে ভাসা ‘ভেনিস নগরী’

আজ রোববারের (৬ আগস্ট) ভারী বর্ষণে নগরজুড়ে থৈ থৈ করছে পানি।

চট্টগ্রাম যেন জলে ভাসা ‘ভেনিস নগরী’

প্রথম নিউজ, চট্রগ্রাম: একটানা অতি ভারি বর্ষণে চট্টগ্রাম পানিতে ভাসছে টানা তৃতীয় দিনের মতো। আগের দুদিনের মতো এদিনও সকাল হতে না হতেই বর্ষণে ডুবেছে চট্টগ্রাম নগরী। এ যেন জলে ভাসা ‘ভেনিস নগরী’।

আজ রোববারের (৬ আগস্ট) ভারী বর্ষণে নগরজুড়ে থৈ থৈ করছে পানি। তাতে করে কর্মজীবী নারী-পুরুষকে পড়তে হয়েছে বিপাকে। অনেকেই রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে গাড়ি না পেয়ে বাসায় ফিরে গেছেন। স্কুলমুখী বাচ্চারা পড়েছে বেশি বিপদে।

চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর, আগ্রাবাদ, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, কাপাসগোলা, বাদুরতলা, চকবাজার, ডিসি রোড, ফুলতলা, বাকলিয়া, কাতালগঞ্জ, আরাকান রোড, বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল সড়ক, তিন পোলের মাথা, রিয়াজউদ্দিন বাজারসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। দোকানের ভেতরে ঢুকে গেছে পানি। খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইয়ে অনেক ব্যবসায়ী সকাল থেকে দোকানই খুলতে পারেনননি। যারা খুলেছেন তাদের সবাই দোকানের ভেতর থেকে পানি সরাতে ব্যস্ত রয়েছেন।

চট্টগ্রাম পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম নগরীতে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২১৮ মিলিমিটার। এরমধ্যে রোববার (৬ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৬৩ মিলিমিটার।’

তিনি আরো বলেন, ‘২৪ ঘণ্টায় ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলে সেটিকে আমরা অতি ভারি বর্ষণ বলি। এর নিচে হলে ভারী বর্ষণ। গত ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রাম নগরীতে ২১৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তাই এটাকে অতি ভারি বর্ষণ বলা হচ্ছে। শনিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২১ মিলিমিটার।’

বিশ্বজিৎ চৌধুরী আরো বলেন, ‘অতি ভারি বর্ষণের কারণে পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে গেছে। তাই যেকোনো সময় বড় ধরনের পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটতে পারে। এদিকে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ঝুঁকিতে থাকা আকবরশাহ এলাকার বিজয় নগর ও ঝিল পাহাড়ে বসবাসরত ২৫০টি পরিবারকে দুটি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। মহানগরে ৬টি সার্কেলের মাধ্যমে জেলা প্রশাসনের কয়েকটি টিম জানমাল রক্ষার্থে কাজ করছে। মাইকিং করে মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে সরে যেতে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।

জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) একটি, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) দুইটি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্পের আওতায় ১১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। আগামী বছরের জুনে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।