গভীর ঘুমের জন্য প্রতিদিন যে কাজগুলো করবেন
বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করেও যদি ভালো ঘুম সম্ভব না হয় তবে হতাশ হবে না। সবকিছুরই সমাধান রয়েছে। কেবল সঠিক উপায় জানতে হয়।
প্রথম নিউজ, লাইফস্টাইল ডেস্ক: ভালো এবং গভীর ঘুম আমাদের স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করেও যদি ভালো ঘুম সম্ভব না হয় তবে হতাশ হবে না। সবকিছুরই সমাধান রয়েছে। কেবল সঠিক উপায় জানতে হয়। ঘুমের সমস্যা হলে তা কেন হচ্ছে সেই কারণ খুঁজে বের করতে হবে। এতে সমাধান সহজ হবে। ঘুম গভীর হলে তা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব রাখে।
গভীর ঘুম স্মৃতিশক্তি একত্রীকরণ, হরমোন নিয়ন্ত্রণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সামগ্রিক সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এইচটি লাইফস্টাইলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে, দ্য স্লিপ কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রিয়াঙ্কা সালোট বলেছেন, ‘নিখুঁত জীবনযাপনের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম বা সঠিক খাওয়ার দিকে মনোনিবেশ করা অপরিহার্য, এদিকে অনেকে গুরুত্ব দিলেও বেশিরভাগ মানুষ আরেকটি বিষয় ভুলে যায়। সেটি হলো ভালো ঘুম। আমাদের এমন অভ্যাস গড়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে যা আমাদের আরও ভালো এবং গভীর ঘুমে সহায়তা করে।’
প্রিয়াঙ্কা সালোট কিছু জিনিসের পরামর্শ দিয়েছেন, যা আপনি আপনার প্রতিদিনের রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এতে আপনার ঘুম আরও ভালো হবে এবং প্রতিটি দিন নতুন করে প্রাণশক্তি পাবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক গভীর ঘুমের জন্য আপনার করণীয় সম্পর্কে-
ঘুমের রুটিন মেনে চলা
নিয়মিত ঘুমের রুটিন থাকাটাই গভীর ঘুমের চাবিকাঠি। ঘুমাতে যাওয়ার এবং জেগে ওঠার নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুন। ঘুম গভীর হলে তা আপনাকে যথেষ্ট বিশ্রাম দেবে এবং পরবর্তী দিনের জন্য উৎফুল্ল রাখবে। মন এবং শরীরকে শান্ত করতে সাহায্য করার জন্য গভীর শ্বাস, ধ্যান বা যোগের মতো বিষয়গুলোও অনুসরণ করতে পারেন।
ঘুমের সহায়ক পরিবেশ
শান্ত পরিবেশের পাশাপাশি আপনার বিছানা, বালিশ এবং কমফোটারের গুণমানও ঘুমকে প্রভাবিত করে। আপনার শরীর এবং প্রয়োজন অনুসারে কাস্টমাইজ করে নেওয়া সঠিক বিছানা এবং ঘুমের আনুষাঙ্গিকগুলো থাকা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার বিছানা বা বালিশ নির্বাচনের সময় এদিকটাতে খেয়াল রাখুন। পছন্দের পাশাপাশি সেগুলো আরামদায়ক এবং স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক কি না, সেদিকেও খেয়াল রাখুন।
উদ্দীপক থেকে দূরে থাকুন
ক্যাফেইন, নিকোটিন এবং অ্যালকোহলের মতো উদ্দীপক গ্রহণ করা, বিশেষ করে সন্ধ্যার পরে এগুলো গ্রহণ করলে তা আপনার ঘুমকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এগুলো সার্কাডিয়ান রিদমে ব্যাঘাত ঘটায় এবং শরীরের জন্য ঘুমিয়ে থাকাকে কঠিন করে তোলে। এছাড়া, বিছানায় যাওয়ার আগে ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন। কারণ এটি অস্বস্তি এবং হজমের সমস্যা করতে পারে, যার ফলে ঘুমের চক্র ব্যাহত হয়।
ম্যাগনিফ্লেক্স ইন্ডিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর আনন্দ নিচানি বলেন, ‘অনেক কিছু রাতের ঘুমে ব্যাঘ্যাত ঘটাতে পারে। যেমন- মানসিক চাপ, পারিবারিক দায়িত্ব, অসুস্থতা ইত্যাদি। সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে, পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম সবার ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। সেজন্য ঘুমের মান উন্নত করতে কিছু জিনিস করতে পারেন। যেমন একটি নিয়মিত সময়সূচী মেনে চলার চেষ্টা করুন, ঘুমের আগে হালকা গরম পানিতে গোসল করুন এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে ধীরে কোনো সঙ্গীত শুনতে পারেন।
আনন্দ নিচানি পরামর্শ দিয়েছেন, ‘ঘুমাতে যাওয়ার আগে ইলেকট্রনিক ডিভাইস এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। কারণ ডিভাইস থেকে নির্গত নীল আলো ঘুমে ব্যাঘ্যাত ঘটাতে পারে। আপনার শোবার ঘরটিতে ঘুমের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে রাখুন। ঘরটিকে শীতল, শান্ত এবং অন্ধকার রাখার চেষ্টা করুন। সেইসঙ্গে একটি ভালো মানের বিছানা নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ। আপনার প্রতিদিনের রুটিনে এই টিপসগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে ঘুমের গুণমান এবং গভীরতা উন্নত করতে পারেন।