কোটি টাকার অস্ত্রোপচার বাংলাদেশে করা হয়েছে বিনামূল্যে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
প্রথম নিউজ, ঢাকা : মেরুদণ্ডে জোড়া লাগা দুই শিশুর সফল অস্ত্রোপচার শেষে তাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনিমেরুদণ্ডে জোড়া লাগা দুই শিশুর সফল অস্ত্রোপচার শেষে তাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)নুহা ও নাভা নামের দুটি শিশুর জোড়া মেরুদণ্ড আলাদা করার অপারেশন সাকসেসফুল হলো। এটি সাধারণ কোনও কাজ নয়। এখানে আমাদের অভীজ্ঞ বড় একটি চিকিৎসক টিম একটানা ১৩ ঘণ্টার বেশি সময় অপারেশন করে এই অসাধ্য কাজ সাধন করেছেন। এই অপারেশন ভারত বা বাইরের দেশে করতে গেলে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ হতো। কিন্তু বাংলাদেশে এই দুই অবুঝ শিশুর চিকিৎসা ব্যয় প্রধানমন্ত্রী নিজে বহন করেছেন।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকের ১০ তলায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বিএসএমএমইউ’র ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, নুহা ও নাভার মাসহ অন্যান্য সিনিয়র চিকিৎসকরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রী নিজে আমাকে এখানে আসতে বলেছেন। এর আগেও বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমরাই মাথায় জোড়া লাগা শিশুর সফল অপারেশন করেছি। সুযোগ পেলে আমরা যে আসলেই পারি এগুলো, এটা তারই প্রমাণ। চিকিৎসা ক্ষেত্রেও আমরা দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছি। আমি বলতে পারি, দায়িত্ব নিয়ে আমরা চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিলে বাংলাদেশ থেকে এখন জটিল সব রোগেরই চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।
423541862_1100878140950678_3504621712557051243_n১৫ ঘণ্টার অপারেশনে আলাদা করা হয় মেরুদণ্ডে জোড়া অবস্থায় জন্ম নেওয়া দুই শিশুকে, তাদের অবস্থার খোঁজ নেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি অপার সম্ভাবনার দেশ। আমাদের দেশে প্রচুর শিক্ষার্থী প্রতি বছর মেডিক্যাল পড়ালেখা শেষ করে চিকিৎসক হচ্ছেন। আমাদের চিকিৎসকরা যেমন মেধাবী তেমন দক্ষ। শুধু একটু সুযোগসুবিধা বাড়াতে হবে এবং তাদের দায়িত্ব অনুযায়ী ভরসা দিয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। তাহলে বাংলাদেশ থেকে কোনও রোগীকে আর আগামীতে বিদেশ যেতে হবে না। কিছুদিন আগেই আমরা ভুটানের ক্যান্সার আক্রান্ত এমন এক মেয়েকে চিকিৎসা দিয়ে ভালো করেছি যার চিকিৎসা ভারত ও ব্যাংককেও সম্ভব হয় নাই। কাজেই বাংলাদেশ পারে না এমন কোনও কাজ নাই। বাংলাদেশেই এখন সব রোগের চিকিৎসা সুবিধা আছে।
বাংলাদেশ থেকে এইডস, যক্ষা, ম্যালেরিয়া রোগ নির্মূলে অর্থায়ন বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অন্যতম দাতা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফান্ড। মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দফতরে তার সঙ্গে বৈঠকে গ্লোবাল ফান্ডের কর্মকর্তা জিয়নগাইভার জ্যাকব এই আশ্বাস দেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অনুরোধে অর্থায়ন বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। এসময় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর আহমেদুল কবীর এবং গ্লোবাল ফান্ডের প্রগ্রাম কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।