কক্সবাজারে হোটেল-রেস্তোরাঁয় ৭০ শতাংশ ছাড়ের নামে প্রতারণা

কক্সবাজার আগত পর্যটকরা বলছেন, মেলা উপলক্ষে ৭০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার কথা থাকলেও ১০ শতাংশও দিচ্ছে না হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলো। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। 

কক্সবাজারে হোটেল-রেস্তোরাঁয় ৭০ শতাংশ ছাড়ের নামে প্রতারণা

প্রথম নিউজ, কক্সবাজার : বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে কক্সবাজারে সপ্তাহব্যাপী পর্যটন মেলার আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন ও বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি। সাত দিনব্যাপী মেলা উপলক্ষে আবাসিক হোটেলগুলোতে ২৫-৭০ শতাংশ ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি ও জেলা প্রশাসন। তবে মেলা উপলক্ষে কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে ছাড় না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

কক্সবাজার আগত পর্যটকরা বলছেন, মেলা উপলক্ষে ৭০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার কথা থাকলেও ১০ শতাংশও দিচ্ছে না হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলো। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। 

কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলন ফোরামের সদস্য সচিব এইচ এম নজরুল ইসলাম তার ফেসবুকে লিখেছেন , কক্সবাজারের পর্যটনশিল্পের ১২টা বাজাচ্ছে মূলত রেস্তোরাঁগুলো। এদের কারণে পুরো পর্যটনশিল্পের দুর্নাম। তাদের গলাকাটা বাণিজ্যের কারণে প্রভাব পড়েছে পর্যটন মৌসুমেও। পর্যটন দিবস কী জানে না কাচ্চি ডাইন। খাবার হোটেলে ১৫-২০ শতাংশ ডিসকাউন্ট দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু কাচ্চি ডাইনে ১ শতাংশও ডিসকাউন্ট নেই পর্যটন দিবসে। তাহলে কোন কোন হোটেলে ডিসকাউন্ট দেবে এটি বলে দেওয়া উচিত ছিল।, প্রতারিত হচ্ছেন পর্যটকরা। এরা শুধু ব্যবসায়িক মনোভাব নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে। প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে কঠোর নয় কেন?

কুমিল্লা থেকে আগত কাউসার আলম নামে এক পর্যটক বলেন, ভোরে কক্সবাজার পৌঁছে হোটেল খুঁজি। পর্যটক মেলা উপলক্ষে যে ডিসকাউন্ট (ছাড়) দেওয়ার কথা ছিল বাস্তবে তা নেই। অনলাইনে আগে তাদের যে রেট ছিল বর্তমানেও একই অবস্থা। এগুলো এক প্রকার পর্যটকদের সঙ্গে প্রতরণা ছাড়া আর কিছুই নয়।

ঢাকা থেকে আগত সাইরিন-নোমান দম্পতি বলেন, কলাতলী রেস্তোরাঁ নামক একটি হোটেলে সকালে নাস্তা করি। আমাদের দুইজনের বিল আসে ৬০০ টাকা। একজন রেস্তোরাঁর কর্মচারী এসে একটা বিল হাতে ধরিয়ে দেয়। সেখানে ডিসকাউন্টের (ছাড়) কোনো কথা উল্লেখ ছিল না। রেস্তোরাঁর কর্মচারীকে ডেকে মেলা উপলক্ষে ছাড়ের কথা বললে উল্টো কিসের মেলা বলে হেসে ওঠেন ওই রেস্তোরাঁর কর্মচারী। এই থেকে বুঝা যায় পর্যটক দিবস উপলক্ষে ছাড়ের নামে পর্যটকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। 

ঢাকা থেকে সপরিবারে আগত পর্যটক জিকু বলেন, সি গাজীপুর রিসোর্ট নামে একটি হোটেলে মেলা উপলক্ষে আমাদের ৬০ শতাংশ ছাড় দিয়েছে। তবে কোনো রেস্তোরাঁয় ছাড় দিচ্ছে না। 

পর্যটক ফারহান-তামান্না দম্পতির কাছে পর্যটন উৎসব সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, কোথায় মেলা হচ্ছে আমরা তা জানি না। কই কোনো খবরে কিংবা প্রথম সারির গণমাধ্যমেও বিষয়টি চোখে পড়েনি। আর কিসের ছাড়ের কথা বলছেন। কক্ষ বলেন কিংবা খাবার কোথাও তো ছাড় পাইনি আমরা। তবে বিশেষ ছাড় নিয়ে কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি নঈমুল হক টুটুল বলেন,  ৫০ শতাংশ পর্যন্ত যে ছাড়ের কথা প্রশাসন বলছে, তা নিয়ে মালিকদের সঙ্গে কোনো আলাপ হয়নি। 

কক্সবাজারের আবাসিক হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, আমরা উৎসবের জন্য আর্থিক সহযোগিতা করেছি। এছাড়া আমাদের সমিতির মালিকানাধীন ননএসি রুমগুলো মেলা চলাকালে ৮০০ টাকা ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এখনো পর্যটকের তেমন সাড়া পাইনি।
 এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মাসুম বিল্লাহ বলেন, যে হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির অন্তর্ভুক্ত তারা মূলত ডিসকাউন্ট (ছাড়) দেবে। তবে যে অভিযোগ এসেছে সেগুলো আমরা দেখছি।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom