আমরা মানুষের কাছে ‘পজিটিভ এনার্জি’ হতে চেয়েছি,শারমিন সুলতানা সুমি

আমরা মানুষের কাছে ‘পজিটিভ এনার্জি’ হতে চেয়েছি,শারমিন সুলতানা সুমি

প্রথম নিউজ, অনলাইন:   দেশের গ্লোবাল ব্যান্ড চিরকুট। দেশ-বিদেশে তাদের গানের শ্রোতা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। যাদের জন্য স্টেজ শোয়ের পাশাপাশি নতুন গান প্রকাশ করে থাকে দলটি। এরই ধারাবাহিকতায় ব্যান্ডটি এবার তাদের চতুর্থ অ্যালবাম ‘ভালোবাসাসমগ্র’-এর প্রথম গান প্রকাশ করেছে।
 অ্যালবামে আছে ১০টি গান। সবটির কথা ও সুর করেছেন দলপ্রধান শারমিন সুলতানা সুমি। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন সুদীপ কুমার দীপ।

অ্যালবামের গানগুলো কী ধরনের?
আমরা মানুষের কাছে সব সময় পজিটিভ এনার্জি হতে চেয়েছি।
এবারের গানগুলোও তেমন। মন থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যে কথা-সুর এসেছে সেটা নিয়েই গান করেছি। গানগুলোতে আছে ভালোবাসা, সহমর্মিতা। একটি গানে এক্সপেরিমেন্ট করেছি।
‘চিরকুট’ ঘরানার বাইরে করেছি গানটা। শ্রোতারা সব গান শোনার পর নিজেরাই বুঝে নিতে পারবেন কোন গানটা আলাদা।

১০টির মধ্যে ‘চিরকুট’ ব্যান্ডের সদস্যদের সবচেয়ে ভালো লাগা গান কোনটি?
এটা নিয়ে আমরাও আলোচনা করেছিলাম। আসলে নির্দিষ্ট করে নিজেরাও বলতে পারিনি কোন গানটা সবচেয়ে ভালো লাগার। তবে ব্যক্তিগত পছন্দের কথা বললে বলব ‘হিয়া’, ‘ডাক’ আর ‘উত্তরে ভাল না’ গান তিনটির কথা।
সবগুলো গানই আমরা অন্তর থেকে করেছি, মন থেকে করেছি। সেই কারণে কোনটিকে রেখে কোনটির কথা বলব সেটা বুঝতে পারছি না।

ভাঙা-গড়ার পর ‘চিরকুট’ নতুন লাইনআপ নিয়ে পথ চলছে। এখনকার লাইনআপ নিয়ে কী বলবেন?
‘চিরকুট’-এর পথচলা দীর্ঘ ২৩ বছর। এই সময়ে আমাদের সঙ্গে অনেকে যুক্ত হয়েছে আবার একক ক্যারিয়ার গড়তে আমাদের ছেড়েও চলে গেছে। একটা বিষয় খেয়াল করলে দেখবেন, প্রথম থেকেই আমি ফ্রেশারদের নিয়ে কাজ করেছি। এবার যে ছেলেগুলো আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রান্ত, দিব্য, ইয়ার, শুভ্র—চারজনেরই প্রথম কোনো পূর্ণাঙ্গ অ্যালবাম এটা। শুরুতে জানতাম না, গতকাল (সোমবার) আড্ডা দেওয়ার সময় ওরা জানাল। শুনে খুব ভালো লাগল, মেধাবী এই তরুণদের সংগীতজীবনের একটা অধ্যায় তৈরি হলো ‘চিরকুট’-এর হাত ধরে।

আমাকে অনেকেই অনেকবার বলেছে, নিজের নামে ব্যান্ড করতে, করিনি। আমি কখনো নিজেকে বড় করে তুলতে চাইনি। সব সময় চেয়েছি ‘চিরকুট’ একটা স্কুল হোক, এখানে এসে তরুণরা শিখুক, প্রাকটিস করুক। আমি আর পাভেল অরিন বাদে আর যে ছেলেরা এখন লাইনআপে আছে, ওরা প্রত্যেকে কিন্তু বেশ কয়েক বছর ‘চিরকুট’-এর টাচে ছিল। আমরা শুধু গান করি তা নয়, আমাদের একটা ফিলোসফিক্যাল জার্নিও রয়েছে। বর্তমানে আমাদের সদস্যসংখ্যা সাতজন। সবাই মিলে একটা পরিবার।

তুলনামূলক কি কনসার্টে কম পাওয়া যাচ্ছে ‘চিরকুট’কে?
আসলে কি কম পাওয়া যাচ্ছে? আমার তো মনে হয় না। জানুয়ারিতেও ব্যাক টু ব্যাক কনসার্ট করলাম আমরা। তারপর তো রোজা চলে এলো। আর মাঝের দুই-তিন মাস আমরা রীতিমতো লকডাউনে ছিলাম। অ্যালবামের ১০টি গান তৈরি করতে গিয়ে বাইরের জগৎ একদম ভুলে গিয়েছিলাম আমরা। পূর্ণ মনোনিবেশ ছিল গানেই। একটা কথা বলি, আমরা কিন্তু কনসার্ট মাথায় রেখে ব্যান্ড করিনি। হ্যাঁ, কনসার্টের মাধ্যমে শ্রোতাদের সঙ্গে একটা সংযোগ তৈরি হয়। তবে করতে গেলে অনেকগুলো আনুষঙ্গিক বিষয় থাকে। মতে মিলতে হয়। কমফোর্ট ফিল না করলে আমরা সাধারণত কনসার্ট করি না।

চলচ্চিত্রের নতুন কোনো গান করছেন?
এর মধ্যে প্রস্তাব থাকলেও নতুন গান করতে পারিনি। অ্যালবামটার বাইরে আমরা কিছু মাথায় নিতে পারিনি গত তিন মাস। আজ (গতকাল) অ্যালবামটা প্রকাশের পর একটু হালকা লাগছে। এবার নতুন কিছু নিয়ে ভাবতে পারব।

‘চিরকুট’ সব সময় বাংলা গানকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরে আসছে। এ বছর আন্তর্জাতিক কোনো সম্মেলনে অংশ নেবেন?
এখনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি। গ্লোবালি একটা অস্থিরতা তো চলছেই। তবে আমাদের আন্তর্জাতিক কানেকশন আছে। আমাকে আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় আমন্ত্রণ জানিয়েছে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে ক্লাস নেওয়ার জন্য। এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। এর মধ্যে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে অবশ্যই জানাব।