আছিয়া হত্যা মামলা: হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড, খালাস ৩

আছিয়া হত্যা মামলা: হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড, খালাস ৩

প্রথম নিউজ, মাগুরা: মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আছিয়া আক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যার মামলায় প্রধান আসামি হিটু শেখকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। শনিবার (১৭ মে) মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এ রায় ঘোষণা করেন। একই মামলায় বাকি তিন আসামি জাহেদা বেগম, সজিব শেখ ও রাতুল শেখকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আলোচিত এই মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মাত্র ২১ দিনেই সম্পন্ন হয়। ঘটনার মাত্র দুই মাস ১১ দিনের মাথায় মামলার রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে দেশের বিচার ব্যবস্থায় একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত ৬ মার্চ মাগুরা সদর উপজেলার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় আছিয়া। এরপর গুরুতর অবস্থায় তাকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতাল পরে ফরিদপুর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটায় ১৩ মার্চ ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে সে।

ঘটনার পর ৮ মার্চ আছিয়ার মা আয়েশা আক্তার হিটু শেখসহ চারজনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ চার আসামিকেই গ্রেপ্তার করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মো. আলাউদ্দিন ১৩ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২৩ এপ্রিল চার্জগঠনের পর ২৭ এপ্রিল শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ, যা শেষ হয় ৭ মে।

আসামি হিটু শেখ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ১৫ মার্চ। বিচার চলাকালে সাংবাদিকদের সামনে বারবার নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও আদালতের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করেন। তার এই জবানবন্দির ভিত্তিতে এবং অন্যান্য সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করে বিচারক তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। অন্যদিকে বাকি তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়।

আছিয়ার ওপর পাশবিক নির্যাতনের খবর প্রকাশের পর মাগুরাসহ সারাদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। স্থানীয় আইনজীবীরাও ঘোষণা দেন, অভিযুক্তদের কেউ কোনো আইনি সহায়তা দেবেন না।