অসুস্থতাজনিত কারণে মারা গেলেন নাইজেরিয়ার সেনাপ্রধান

অসুস্থতাজনিত কারণে মারা গেলেন নাইজেরিয়ার সেনাপ্রধান

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: অসুস্থতাজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল তাওরিদ লাগবাজা। মৃত্যু সময় তার বয়স ছিলো ৫৬ বছর। তবে ঠিক কোন ধরনের অসুস্থতায় তিনি মারা গেছেন তা জানা যায়নি। বুধবার (৬ নভেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাইজেরিয়ার সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল তাওরিদ লাগবাজা ৫৬ বছর বয়সে “অসুস্থতার কারণে” মারা গেছেন বলে দেশটির প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু ঘোষণা করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে লাগোসে তিনি মারা যান। তবে তার অসুস্থতার সঠিক তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র বায়ো ওনানুগা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বলেছেন, জেনারেল লাগবাজার মৃত্যুতে তার পরিবারের প্রতি ‘সমবেদনা’ প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট টিনুবু। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “প্রেসিডেন্ট টিনুবু লেফটেন্যান্ট জেনারেল লাগাবাজার চির শান্তি কামনা করেন এবং জাতির জন্য তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে সম্মান জানান।” এতে আরও বলা হয়েছে, সেনাপ্রধানের মৃত্যু নাইজেরিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর জন্য উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হিসেবে সামনে এসেছে। কারণ দেশটিতে তিনি “অনেক অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা অপারেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন”।
মূলত সেনাপ্রধান হলেন নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদমর্যাদার সামরিক কর্মকর্তা। জেনারেল লাগবাজাকে ২০২৩ সালের জুন মাসে এই পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল। আর তার কিছুদিন আগেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন টিনুবু। তবে সেনাপ্রধান হওয়ার পরও তিনি প্রায়শই তার দায়িত্ব থেকে দূরে থাকতেন — কখনও কখনও অপ্রকাশিত অসুস্থতার জন্য দেশের বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন — এবং কিছু সময়ের জন্য তাকে জনসমক্ষেও দেখা যায়নি। এতে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছিল দেশটিতে।
তবে তার দায়িত্বের এই স্বল্প মেয়াদে নাইজেরিয়ায় ইসলামপন্থি বোকো হারাম গ্রুপের যোদ্ধাদের আক্রমণ এবং অপহরণের ঘটনা, বিশেষ করে দেশের উত্তর ও মধ্য অংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে এ বছরের শুরুর দিকে কুড়িগায় ২৮০ জনেরও বেশি শিশুকে গণঅপহরণের ঘটনাও রয়েছে। এছাড়া একের পর এক অপ্রতিরোধ্য নিরাপত্তা উদ্বেগের মুখেও জেনারেল লাগবাজা নিশ্চিত করেছিলেন যে— সেনাবাহিনী দেশের গণতন্ত্রে হস্তক্ষেপ করবে না, বিশেষ করে বেশ কয়েকটি প্রতিবেশী দেশ সামরিক অভ্যুত্থানের সম্মুখীন হওয়ার পরেও। তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের লোক এবং এটাকে ছেঁটে ফেলার কোনো ইচ্ছা নেই।
এছাড়াও তিনি ২০০৩ সালে মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে (ডিআর কঙ্গো) জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৮৭ সালে নাইজেরিয়ান ডিফেন্স একাডেমিতে যোগদান করে তার সামরিক কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি পেনসিলভানিয়ার ইউএস আর্মি ওয়ার কলেজ থেকে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। মৃত্যুকালে স্ত্রী মারিয়া এবং দুই সন্তানকে রেখে গেছেন জেনারেল লাগবাজা।