১২০০ ইজিবাইক-রিকশা-ভ্যানে করে রংপুরে সমাবেশে নেতা-কর্মীরা
পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বিকল্প হিসেবে বিশাল বহর নিয়ে বড়বাড়ি ও সৈয়দপুর থেকে আসা নেতা-কর্মীদের এমন ঢলে উচ্ছ্বসিত সবাই। বেলা ১১টার মধ্যে পৃথকভাবে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থল কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে এসেছেন তারা।
প্রথম নিউজ, রংপুর: রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দিতে লালমনিরহাটের বড়বাড়ী ও নীলফামারীর সৈয়দপুর থেকে ১২০০ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, ভ্যান ও রিকশায় করে হাজার হাজার নেতা-কর্মী রংপুরে এসেছেন। এর মধ্যে শুধু বড়বাড়ি থেকে পাঁচ শতাধিকের বেশি ইজিবাইকে করে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রংপুরের সাতমাথা এলাকায় এসে পৌঁছান দলের নেতা-কর্মীরা। আর হাজার হাজার নেতা-কর্মীসহ সৈয়দুপর থেকে প্রায় ৭০০ রিকশা-ভ্যানের একটি বহর এসেছে।
পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বিকল্প হিসেবে বিশাল বহর নিয়ে বড়বাড়ি ও সৈয়দপুর থেকে আসা নেতা-কর্মীদের এমন ঢলে উচ্ছ্বসিত সবাই। বেলা ১১টার মধ্যে পৃথকভাবে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থল কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে এসেছেন তারা।
লালমনিরহাটের বড়বাড়ি থেকে প্রায় পাঁচ শতাধিক ইজিবাইকে করে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি নেতা-কর্মী এসেছেন বলে জানান হারুন অর রশিদ নামে বিএনপির এক নেতা। সকাল ৮টার দিকে তারা রংপুর শহরে প্রবেশ করেন। তাদের মুখে বিভিন্ন স্লোগানের পাশাপাশি হাতে ছিল ধানের শীষ আর বাঁশের লাঠিতে বাঁধা জাতীয় পতাকা। সারিবদ্ধভাবে একে একে ইজিবাইকগুলো সাতমাথা অতিক্রম করে পার্কের মোড়ে গিয়ে জমায়েত হয়। পরে সেখান থেকে বিশাল একটি মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলের দিকে যান তারা।
অন্যদিকে সৈয়দপুর থেকে আসা ৭০০ রিকশা-ভ্যানের বহরটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সৈয়দপুর জেলা বিএনপির নেতা আব্দুল খালেক ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লোকমান হাকিম। শনিবার সকালে সৈয়দপুর কামারপুকুর, চিকলী ও খিয়ার জুম্মা নামক স্থান থেকে সমাবেশের উদ্দেশে রওনা দেয় ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যানগুলো।
সৈয়দপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকার জানান, রংপুর পরিবহন মালিক সমিতির ডাকা দুই দিনের ধর্মঘটের কারণে বাস-ট্রাক সড়কে চলাচল না করায় বিকল্প হিসেবে এই পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে। ৭০০ রিকশা-ভ্যানের বহরে সৈয়দপুরের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড এবং পৌর বিএনপির শত শত নেতা-কর্মী যোগ দিয়েছেন।
এদিকে ভোর থেকেই উত্তরের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার দলীয় নেতা-কর্মীরা ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন ছোট যানে করে ভেঙে ভেঙে সমাবেশে যোগ দিতে রংপুরে আসছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রধান সড়কগুলোতে খণ্ড খণ্ড মিছিলের চাপ বাড়ছে, বাড়ছে স্লোগানের প্রতিধ্বনিও।
এদিকে সড়ক পথে প্রশাসনিক হয়রানির প্রতিবাদ ও তিন চাকার যানবাহনসহ মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে ৩৬ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন চলেছে। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট চলবে আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। বিএনপির গণসমাবেশের দুদিন আগে ডাকা পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে বন্ধ নেই তিন চাকার যানসহ কার, মাইক্রোবাস, পিকআপ ভ্যান, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল চলাচল। বরং আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে ছোট ছোট এসব যানবাহনের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। তবে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
প্রসঙ্গত, নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন স্থানে গুলিতে দলের নেতা-কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদসহ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার রংপুরে তাদের চতুর্থ বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে। দুপুর ২টায় রংপুরের ঐতিহাসিক কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে বিএনপির গণসমাবেশ শুরু হবে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews