হামলা নিয়ে হিরো আলমের চিঠি মার্কিন দূতাবাসে
আমি বিশ্বাস করি, আপনাদের কাছে আমার পাঠানো মেইল তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হওয়ার কথা জানিয়ে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। গত ২৪শে মে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে। এর অধীনে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রদানের ঘোষণা দেয় ওয়াশিংটন। হিরো আলম চিঠিতে বলেন, তার ওপর এই আক্রমণ যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি অনুযায়ী নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সরাসরি বাধা হিসেবে গণ্য হয়।
চিঠির শুরুতে হিরো আলম বলেন, আমি আশরাফুল হোসেন আলম আগামী ১৭ই জুলাই অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। এর আগে ১৬ই জুন আমি আপনাদের জানিয়েছিলাম, আমি ভয় পাচ্ছি যে নির্বাচন কমিশন আমার নমিনেশন প্রত্যাখ্যান করবে। তারা শেষ পর্যন্ত তাই করেছিল। তবে পরে আমি আপিল করে নমিনেশন ফেরত পেয়েছিলাম। আমি বিশ্বাস করি, আপনাদের কাছে আমার পাঠানো মেইল তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
এরপরই হিরো আলম লিখেন যে, প্রার্থিতা ফিরে পেলেও প্রচারণা চালাতে গিয়ে তিনি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হচ্ছেন। চিঠিতে তিনি বলেন, সম্প্রতি সাততলা বস্তি এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিরের সরাসরি নির্দেশে তিনি এবং তার অনুসারীদের ওপর হামলা হয়। স্থানীয়ভাবে এই আওয়ামী লীগ নেতা ‘কালা নাসির’ নামে পরিচিত। তিনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার। এ হামলায় হিরো আলমের এক সমর্থক এবং প্রচারকর্মী গুরুতর আহত হন।
ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনের এই স্বতন্ত্র প্রার্থী অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সমর্থকরা তার যাওয়ার আগে থেকেই সেখানে অবস্থান নিয়েছিল। তারা সেখানে কালা নাসির ও ঢাকা-১৭ আসনে শাসক দলের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ এ. আরাফাতের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছিল। এতে প্রমাণিত হয় যে, এই হামলা ছিল পূর্ব-পরিকল্পিত। এই ঘটনায় ভোটার ও আমার সমর্থকদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের বড় গণমাধ্যমগুলোতে ওই হামলার খবর ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। হিরো আলম বলেন, আমি বিশ্বাস করি এই ঘটনার কারণে সাধারণ ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে ভয় পাবে এবং ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকবে।
হিরো আলম চিঠিতে জানান, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি নির্বাচন কমিশনে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে কোনো ফলাফল ছাড়াই তাকে ফিরতে হয়। পরে তিনি একটি এফআইআর দায়ের করারও চেষ্টা করেন। সব প্রমাণ ও মেডিকেল সার্টিফিকেটসহ তিনি বনানী থানায় গেলেও থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান তার এফআইআর গ্রহণ করেননি। বরঞ্চ তাকে এক টুকরো কাগজ নিয়ে লিখিত আকারে অভিযোগ লিখে দিতে বলা হয়।
চিঠির শেষে হিরো আলম মার্কিন দূতাবাসকে বলেন যে, আমি মনে করি তার সঙ্গে হওয়া এমন আচরণ যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি অনুযায়ী সরাসরি নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাধা হিসেবে গণ্য হয়। এ ঘটনার মধ্যদিয়ে ভোটারদের ভয় প্রদর্শন করা হয়েছে এবং সহিংসতা সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে বাধা দেয়া হয়েছে। হিরো আলম ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের উদ্দেশ্যে বলেন, অন্য কোনো উপায় না থাকায় আমি আপনাদের জানানো ও বিবেচনার স্বার্থে এই চিঠি লিখেছি। চিঠির সঙ্গে হামলার ভিডিও ফুটেজ ও ছবি যুক্ত করে দেন তিনি।