সরকার নয় বিএনপিই হবে খেলার রেফারি: মির্জা ফখরুল
মির্জা ফখরুল বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারকে সরানো হবে। বিএনপিকে আরও শক্তি সঞ্চয় করতে হবে। নয়ন-শাওনের মতো আরও রক্ত দিতে হবে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: লড়াই শুরু হয়ে গেছে এমন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারকে সরানো হবে।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরবঙ্গ ছাত্র ফোরামের যৌথ উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভা হয়।
সরকারের অপশাসনে ব্যবসায়ীরা খুব খারাপ সময়’ পার করছে বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে একটি খবরের কাগজে বড় বড় ব্যবসায়ীরা সমস্যা কথা উঠেছে। প্রত্যেক বড় বড় ব্যবসায়ী একটা কথা বলছেন, আমরা খুব খারাপ সময়ে মধ্যে আছি। আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের কাছে এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে, আমরা আমাদের শ্রমিকদেরকে তাদের যে মজুরী দেবো সেই মজুরীর টাকা পর্যন্ত আমাদের কাছে থাকছে না। সব তো বলার চেষ্টা করে যে, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে নাকী এটা হচ্ছে। হয়তবা কিছুটা আছে। কিন্তু শুরুটা করেছো তুমি অনেক আগের থেকে। দেশের সমস্ত সম্পদকে লুট করছো, ১০ বছরের ৮৬ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছো। গত এক বছরেই শুধুমাত্র ৭৮ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছো। যে দেশের অর্থনীতিতে সরকারের লোকেরা পুরো সম্পদ লুট করে পাচার করে নিয়ে যায় সেই দেশের অর্থনীতি কি থাকতে পারে।”
তিনি বলেন, যখন সংকট আছে সেই সংকটকে মোকাবিলা করার জন্য তখন তার যে অর্থনীতি, তার যে যে রিজার্ভ থাকে সেটা দিয়ে সে কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করে। ব্যবসায়ীরা বলছেন এই সময়ে যদি আমরা প্রণোদনা পেতাম, এই সময়ে যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুবিধা পেতাম তাহলে হয়ত আমরা দাঁড়িয়ে থাকতে পারতাম। ব্যাংকগুলো শুনেছেন পত্রিকা লিখছে যে, এলসি খোলা যায় না। কারণ তাদের ডলার নেই, ডলার দিতে পারছে না। রিজার্ভের টাকা তো লোপাট করে ফেলেছে আগে থেকেই এবং এতো বেশি লোপাট করেছেন যে, নিজেই ডিফেন্সিভ হয়ে বলছেন, না আমরা রিজার্ভ চিবিয়ে খাইনি। আপনারা চিপিয়ে খাননি আমরা জানি, আপনারা গিলে ফেলেছেন এবং সেগুলো আবার পাচার করে দিয়েছেন, এখানে নাই তো। প্রমাণিত সত্য । এতো কথা বলার আমার দরকার নাই। আপনি সাধারণ মানুষের কাছে যান, রিকশা শ্রমিকের কাছে যান, হকারের কাছে যান সেই বলবে যে, এই সরকার চোর।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষ জেগে উঠেছে। মানুষ কিন্তু পিছিয়ে নেই। প্রত্যেকটা সমাবেশে আমার এই বৃদ্ধ বয়সে আমাকে যে অনুপ্রাণিত করেছে যে, এখন আরেকটা মুক্তিযুদ্ধ সেই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদেরকে এদের পরাজিত করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় নেতা কামরুজ্জামান রতন একটা মিথ্যা কেইসে যেখানে শহীদুল ইসলাম শাওনকে মেরে ফেলেছিলো। উল্টো আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে তাকে গ্রেফতার করেছে। আজকে সকাল তার স্ত্রী আমাকে ফোন করে বললো, আরেক ফলস কেইসে ঢুকিয়ে রতনকে তিনদিনের রিমান্ড নিয়েছে।এদের কী বিবেকও কাজ করে না। আমি খুব পরিস্কার করে বলতে চাই, আমি বিচার বিভাগকে বলতে চাই, বিচারকদের প্রতি সন্মান রেখে বলতে চাই দয়া করে ন্যায় বিচার করুন। কারণ এদেশে বহু প্রমাণ আছে-বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা আজ জেগেছে সেই জনতা। সুতরাং কোনটাই পার পাবেন না।
তিনি বলেন, বার করে আমরা বলেছি, আবারো বলছি, ১৯৭১ সালে দেশের জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে এখন গণতন্ত্রের জন্য ৩৫ লক্ষ মানুষকে আসামী করেছো,আমার ৭ জন যোদ্ধা প্রাণ দিয়েছে। এর মূল্য অবশ্যই তোমাদেরকে দিতে হবে। এখনো সময় আছে আমি আগে বলেছি, এখনো বলছি যে, সরে দাঁড়ান, নিরাপদে সরে দাঁড়ান। তা না হলে জনগনের মধ্যে যে উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হয়েছে সুনামীর মতো তাদেরকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে এবং এর নেতৃত্বে আছেন আমাদের তারেক রহমান তারুণ্যের প্রতীক।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ১০ ডিসেম্বর সমাবেশকে ভয় পেয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলছেন ওবায়দুল কাদের। সরকার নয়, বিএনপি খেলার নিয়ম নির্ধারণ করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
উত্তরবঙ্গ ছাত্র ফোরামের উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান থোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসার মোহাম্মদ ইয়াহিয়া প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews