স্মার্ট বাংলাদেশ অদৃশ্য কারাগার: রিজভী

আজ বুধবার (৩১ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে সংগঠনটির সদস্য সচিব নিপুন রায় চৌধুরীর উপর হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। 

স্মার্ট বাংলাদেশ অদৃশ্য কারাগার: রিজভী

প্রথম নিউজ, ঢাকা: দেশ স্মার্ট হবে, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হচ্ছে সারাদেশের মানুষকে এক অদৃশ্য কারাগারে ঘিরে রাখা। এটাই হচ্ছে হাছান মাহমুদের স্মার্ট বাংলাদেশ।

তথ্যমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করে তিনি আরো বলেন, এই অবৈধ সরকারের তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ স্মাট বাংলাদেশ হবে। তাকে জিজ্ঞেস করতে চাই, স্মার্ট বাংলাদেশ মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ হচ্ছে মানবিক বাংলাদেশ। তাহলে দেশ এতদিন মানবিক বাংলাদেশ ছিল না, এটা হাছান মাহমুদ স্বীকার করে নিলেন। স্মার্ট বাংলাদেশ কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে কি নিপুনের উপর হামলা? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে কি আদালত পাড়ায় আইনজীবীদের উপর হামলা করা? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে গায়েবি মামলা দেওয়া? স্মার্ট বাংলাদেশে দেখেছি ইলিয়াস আলী নেই, চৌধুরী আলম নেই। স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হচ্ছে সারাদেশের মানুষকে এক অদৃশ্য কারাগারে ঘিরে রাখা।  

আজ বুধবার (৩১ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে সংগঠনটির সদস্য সচিব নিপুন রায় চৌধুরীর উপর হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। 

রিজভী বলেন, সামনে নির্বাচন আর এই নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা অনেক তামাশা ও বায়োস্কোপ দেখাবেন। নিপুনের উপর হামলাও বায়স্কোপের একটি অংশ। সেদিন ঢাকা জেলা বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশে আমি প্রধান অতিথি ছিলাম। নিপুন মঞ্চে আসতে না আসতেই শুনলাম তার মাথায় ইটের আঘাত করা হয়েছে। তার সারা শরীর পোশাক রক্তে রঞ্জিত হয়েছে। সরকার কাপুরুষ না হলে একজন নারীর গায়ে হাত দেয়? নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক বেগম সেলিমা রহমানের নেতৃত্বে সারাদেশে যেখানেই নারী শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে তিনি (নিপুন) ছুটে গেছেন। বাংলাদেশের পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ যেখানে অন্যায় হয়েছে তার প্রতিবাদে তিনি ছুটে গেছেন।

রাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, দেশে দুঃশাসন থাকলে কর্তৃত্ববাদী একনায়কতন্ত্র থাকলে দেশের মানুষ কেউ নিরাপদে থাকতে পারবে না।

বিএনপির এই মুখপাত্র অভিযোগ করে বলেন, যারা ক্যাসিনো করেছে, ব্যাংক লুটপাট করেছে, কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে তাদের আদালতে হাজিরা দিতে হয় না। আর বিএনপির লোকদেরকে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোর্টে লাব্বাইক বলতে হয়। কেন? কারণ বিএনপির নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার ভোট ডাকাতির প্রতিবাদ করেছে। অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদ করেছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সহধর্মিনীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিদিন সাক্ষী নেওয়া হচ্ছে কেন? কারণ এটাও নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার একটা বায়োস্কোপ। গতকাল কয়েকজন আইনজীবী এর প্রতিবাদ করেছে এর জন্য আওয়ামী লীগের গুণ্ডাবাহিনী তাদের উপর হামলা করেছে এবং তাদের কয়েকজন এখনো হসপিটালে ভর্তি। শেখ হাসিনা নির্বাচনের আগে আরো এরকম আরো নৃশংস ঘটনা ঘটাবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের পতন ঘটাতে হবে। শেখ হাসিনার পতন ঘটাতে হবে। এদের পতন করতে না পারলে দেশে আরো নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হবে। আমাদের একটাই দাবি, নির্দলীয় নিরপক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তিনি বলেন, অনেকেই বলে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে। কথা বলার স্বাধীনতা দিতে হবে। কে দিবে? শেখ হাসিনার পতন হলেই এটা প্রতিষ্ঠিত হবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আর দেশের মানুষের স্বাধীনতা আসবে? আসবে না। তার পতন হলেই দেশের মানুষ কথা বলার স্বাধীনতা পাবে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।

নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহবায়ক ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।