সব প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয়ের রিটার্ন দাখিলের নির্দেশ ইসির
প্রথম নিউজ, ঢাকা : দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থীর নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচনী ব্যয়ের রিটার্ন দাখিল, বিবরণীয় দলিলপত্র সংরক্ষণ, পরিদর্শন ও কপি প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সম্প্রতি ইসি উপসচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে জানানো হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৪৪গ এর দফা (১) অনুসারে নির্বাচিত প্রার্থীর নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার পর হতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্টকে (যিনি নির্বাচনী এজেন্ট নিয়োগ করেননি, তিনি নিজেই তার নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে গণ্য হবেন) ফরম-২২-তে এফিডেভিটসহ সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের নিকট নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব দাখিল করতে হবে।
তাছাড়া নির্বাচনী এজেন্টকে রিটার্নিং অফিসারের নিকট দাখিল করা রিটার্ন ও এফিডেভিটের অনুলিপি রেজিস্টার্ড ডাকযোগে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়েও পাঠাতে হবে। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অর্থাৎ নির্বাচনে বিজয়ী-পরাজিত সব প্রার্থীকে নির্বাচনী বায়ের রিটার্ন দাখিল করতে হবে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও নির্বাচনী ব্যয়ের রিটার্ন অবশ্যই দাখিল করতে হবে। এমনকি কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনে কোন ব্যয় না হলে তাও নির্ধারিত ফরমে উল্লেখ করে রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৪৪গ অনুযায়ী কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্বাচনী ব্যয়ের রিটার্ন (ফরম-২২) যথাযথভাবে দাখিল না করলে অথবা এ সংক্রান্ত কোনো আদেশ লঙ্ঘন করলে আদেশের অনুচ্ছেদ ৭৪ অনুযায়ী তিনি শাস্তিযোগ্য অপরাধের দায়ে দায়ী হবেন। আদেশের অনুচ্ছেদ ও অনুসারে উক্ত অপরাধের জন্য জরিমানাসহ কমপক্ষে ২ (দুই) বৎসর ও অনধিক ৭ (সাত) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
নির্বাচনী ব্যয়ের রিটার্ন দাখিল সংক্রান্ত উল্লিখিত বিধান সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়ে দেবেন। তারপরও যদি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উক্ত বিধান লঙ্ঘন করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। যেক্ষেত্রে নির্বাচনের বিরুদ্ধে নির্বাচনী মামলা করা হয়নি, সেক্ষেত্রে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার দিন হতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। যেক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগে মামলা বিচারাধীন থাকে ও হাইকোর্ট বিভাগ উক্ত মামলা সম্পর্কে কোনো আদেশ দান করেন তবে আদেশ দানের তিন মাসের মধ্যে রিটার্নিং অফিসারকে উপযুক্ত আদালতে মামলা করতে হবে। মামলার জন্য নির্বাচন কমিশনের পূর্বানুমতির প্রয়োজন নেই।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৪৪খ অনুচ্ছেদের (১) ধারা অনুযায়ী সম্ভাব্য তহবিলের উৎসের বিবরণী, নির্বাচনী ব্যয়ের রিটার্ন ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য বিবরণী এবং দলিল দস্তাবেজ রিটার্নিং অফিসার তার অফিসে বা সুবিধাজনক অন্য কোনো স্থানে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করবেন।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৪৪খ অনুচ্ছেদ ও নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮ এর ২৮ বিধি অনুসারে উল্লিখিত সংরক্ষিত দলিল-দস্তাবেজ ও বিবরণী ব্যয়ের রিটার্ন অফিস চলাকালীন সময়ে একশ টাকা হারে ফি প্রদান সাপেক্ষে জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য খোলা থাকবে। উল্লিখিত বিবরণী, ব্যয়ের রিটার্ন এবং দলিলের কপি বা তার উদ্ধৃতাংশ, কোন ব্যক্তির পেশ করা দরখাস্তে তার অনুলিপি বা উদ্ধৃতাংশ প্রতি পৃষ্ঠার জন্য একশত টাকা ফি প্রদান সাপেক্ষে সরবরাহ করা হবে।
নির্বাচনী ব্যয়ের বিবরণী দাখিসল সংক্রান্ত বিভিন্ন ফরম (ফরম-২২, ২২ক, ২২৭, ২২৭) ইতোমধ্যে প্রেরণ করা হয়েছে এবং ফরমগুলো প্রত্যেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে প্রদানে নিশ্চিত করতে হবে।
নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহের জন্য সম্ভাব্য আয়ের উৎস ও নির্বাচনী ব্যয়ের বিবরণী দাখিল সংক্রান্ত তথ্য নির্বাচন কমিশনকে অবহিতকরণ
নির্বাচনের পর নির্বাচিত প্রার্থীর নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার পর ৩০ ত্রিশ দিনের মধ্যে সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পূরণকৃত ফরম-২২, ২২৩, ২২৩, ২২৭ এর নমুনায় হলফনামাসহ দাখিল করেছে কি না তা নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করতে হবে। যে সব প্রার্থী আইনের উল্লিখিত বিধান পালনে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করতে হবে।