নৌকার সমর্থকদের হামলায় জানে বেঁচে আসছি: স্বতন্ত্র প্রার্থী

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় চাটমোহর পৌর সদরের নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।

নৌকার সমর্থকদের হামলায় জানে বেঁচে আসছি: স্বতন্ত্র প্রার্থী

প্রথম নিউজ, পাবনা: পাবনা-৩ আসনের চাটমোহরে নির্বাচনী গণসংযোগ, পথসভা করার সময় ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ মাস্টারের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মকবুল হোসেনের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় চাটমোহর পৌর সদরের নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় আব্দুল হামিদ বলেন, ‘শুক্রবার রাতে নৌকা সমর্থকদের হামলায় জানে বেঁচে আসছি। হয়ত শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইনি। নাহলে জীবনটাই চলে যেত। এসব ঘটনায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

তিনি বলেন, শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে চাটমোহর উপজেলার কাটাখালি, খৈরাশ, বামনগ্রাম ও কামালপুরে গণসংযোগ ও পথসভা করি। কাটাখালি ও খৈরাশ এলাকায় আমাদের পথসভা ও গণসংযোগে বাধা দেওয়া হয়। ওই সময় ৩০ থেকে ৪০টি মোটরসাইকেলে করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর অনুসারীরা এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ চালায়। তখন আমরা জীবন বাঁচাতে দ্রুত অন্য পথ ধরে ওই এলাকা ত্যাগ করি।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ অভিযোগ করেন, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং চাটমোহরের সার্কেল অফিসারকে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তারা আমার ফোন ধরেননি। এমনকি আমাকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করেননি। পরে শুনেছি তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছিল, কিন্তু আমার সঙ্গে তারা দেখা করেনি।

তিনি আরও বলেন, প্রায় প্রতিদিনই আমিসহ আমার কর্মী-সমর্থক ও অনুসারীরা নানা হুমকি ধামকি এবং জীবনের নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি কোনো অভিযোগ দিলে সেটা গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেওয়া হচ্ছে না। বালুচর খেলার মাঠে নির্বাচনী সভা করার অনুমতি চাইলেও তারা সে অনুমতি দিতে নানা ধরনের টালবাহানা করছেন।

হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং চাটমোহর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আগাগোড়াই পক্ষপাতমূলক আচরণ করে আসছেন। তারা আমার অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিচ্ছেন না। একের পর এক নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, নেতাকর্মীদেরকে মারধর ও হুমকি ধামকি দেওয়া হলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না প্রশাসন থেকে।

নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে আমার একটাই চাওয়া, রাষ্ট্রযন্ত্র পক্ষপাতমূলক আচরণ না করে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি করছি। আমার জনপ্রিয়তা ও ভোটের জোয়ারে নৌকার প্রার্থী দিশাহারা হয়ে একের পর এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। আমি তার এ ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধের জন্য জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য ভোট করতে প্রধানমন্ত্রীর যে নির্দেশনা তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেদুয়ানুল হালিম বলেন, খবর পেয়ে আমি পুলিশ কর্মকর্তাসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ সত্য নয়। চাটমোহর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুল ইসলাম বলেন, তিনি কি কারণে এসব অভিযোগ করছেন জানি না। কোনো পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে না। আমরা প্রার্থীদের অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নিচ্ছি।