সুদানে তীব্র লড়াই, শক্তিশালী ঘাঁটি দখলে নিলো আরএসএফ

সুদানে তীব্র লড়াই, শক্তিশালী ঘাঁটি দখলে নিলো আরএসএফ

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে সামরিক বাহিনীর সাথে দেশটির আধা-সামরিক বাহিনীর সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করেছে। দুই পক্ষই ব্যাপক লড়াই চালাচ্ছে এবং এই ভারী সংঘর্ষের মধ্যেই দেশটির শক্তিশালী একটি ঘাঁটি দখলে নিয়েছে র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)।

ঘাঁটিটি ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত একটি পুলিশ ইউনিটের মূল ঘাঁটি। সোমবার (২৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পুলিশ ইউনিটের মূল ঘাঁটি দখল করে নেওয়ার কথা জানিয়েছে আরএসএফ। এক বিবৃতিতে আধাসামরিক এই বাহিনী বলেছে, তারা সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশের দক্ষিণ খার্তুমের বৃহৎ ঘাঁটির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

পরে এই বাহিনী তার যোদ্ধাদের ওই স্থাপনার ভেতরে আনন্দ উদযাপন করার ফুটেজ পোস্ট করে যেখানে গুদাম থেকে গোলাবারুদের বেশ কিছু বাক্স সরিয়ে ফেলার দৃশ্যও দেখা যায়।

আরএসএফ পরে জানায়, ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তারা ১৬০টি পিক-আপ ট্রাক, ৭৫টি সাঁজোয়া যান এবং ২৭টি ট্যাংকও দখলে নিয়েছে। রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে ওই ভিডিও ফুটেজ বা আরএসএফের বিবৃতি যাচাই করতে সক্ষম হয়নি। এছাড়া সুদানের সেনাবাহিনী বা পুলিশের পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।


গত ১৫ এপ্রিল সুদানে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে লড়াই শুরু হয়। প্রাণঘাতী এই লড়াই ১১তম সপ্তাহে পড়েছে এবং গত শনিবার রাতে থেকে খার্তুম, বাহরি এবং ওমদুরমান - এই তিনটি শহরে যুদ্ধের তীব্রতা আরও বেড়েছে।

এছাড়া পশ্চিম দারফুর অঞ্চলের বৃহত্তম শহর নিয়ালায় সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সহিংসতার তীব্রতা বৃদ্ধির কথাও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। পশ্চিম দারফুরের এল জেনেইনায় জাতিগত হামলা এবং মাসালিত সম্প্রদায়ের লোকদের হত্যার ঘটনায় গত শনিবার জাতিসংঘ সতর্কতাও উচ্চারণ করেছে।

রয়টার্স বলছে, চলমান যুদ্ধে খার্তুম এবং এল জেনেইনা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও গত সপ্তাহে দারফুরের অন্যান্য অংশে এবং দক্ষিণে কর্ডোফানে উত্তেজনা ও সংঘর্ষ বেড়েছে। মূলত জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরবের নেতৃত্বে সম্মত হওয়া যুদ্ধবিরতি ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে লড়াই আরও তীব্র হয়েছে।

আর এর জেরে গত সপ্তাহে আলোচনা স্থগিত করা হয়।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, লড়াই শুরুর পর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে স্থল যুদ্ধে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীকে মোতায়েন করেছে সেনাবাহিনী। এছাড়া ইতোপূর্বে বেশ কয়েকটি অঞ্চলে যুদ্ধ বাহিনী হিসাবে এই পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করা হয়েছিল এবং এমনকি ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলা করতেও এই বাহিনীকে ব্যবহার করা হয়।

অবশ্য বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অত্যধিক শক্তি প্রয়োগের অভিযোগে গত বছর সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।