লুটপাট আর দুর্নীতি হালাল করতেই জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: মির্জা ফখরুল

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে কৃষকদলের বিক্ষোভ সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি

লুটপাট আর দুর্নীতি হালাল করতেই জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: মির্জা ফখরুল
বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

প্রথম নিউজ, ঢাকা: লুটপাট আর দুর্নীতি হালাল করতেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার; এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে কৃষকদলের বিক্ষোভ সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি। ভোলায় ছাত্রদল ও স্বেচ্চাসেবক দলের দুই নেতাকে হত্যা এবং জ্বালানি তেল ও সারের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে কৃষকদল।

 সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকতে বহু হত্যা করেছে সরকার। ভোলায় নুরে আলম হত্যা তারই ধারাবাহিকতা। এ ঘটনায় দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন মির্জা ফখরুল। অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ভোলায় পুলিশের গুলিতে দুজন নিহত এবং ১৬ জন আহত হওয়ার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার গ্রেপ্তার দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, অযৌক্তিকভাবে শুধুমাত্র রাষ্ট্র ক্ষমতা ব্যবহার করে পুলিশ-র‌্যাব ব্যবহার করে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছেন এবং ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বহু হত্যা করেছেন গুম করেছেন খুন করেছেন তার ধারাবাহিকতায় আমাদের নুরে আলম এবং আব্দুর রহিমকে হত্যা করা হয়েছে। আজকে আমি পরিষ্কারভাবে জানতে চাই, আমাদের দাবি উত্থাপন করতে চাই, যে পুলিশ কর্মকর্তা আমরা শুনেছি ওসি তদন্ত আরমান, কি অবস্থা করেছিল তাদের গুলি করলেন পয়েন্ট দিয়ে...। এই পুলিশ অফিসারের গ্রেপ্তার চাই এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, হঠাৎ করে মধ্যরাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। কি সর্বনাশ হয়েছে, প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়বে, কৃষকের সারের দাম বাড়বে। অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, অর্থনীতি খারাপ হয়ে যাবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে বিশ্বে তেলের দাম কমে আর আমাদের দেশে বাড়ে। কৃষকরা চোখে অন্ধকার দেখছে। এভাবে আর হবে না। এদেশের মানুষ এভাবে আর চলতে দেবে না। এই সরকারকে আর টিকতে দেওয়া যায় না।

রাজনৈতিক ঐক্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, আমি গতকালও বলেছি নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হই। এই সরকার কিছু মানুষকে ধনী করছে যারা আরও বেশি ধনী হয়ে গেছে আর যারা গরীব তাদের আরো গরিব করেছে। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের পকেটে তো ঘুষের টাকা আছে লুটের টাকা আছে, আমাদের পকেটে তো জীবন চলার টাকা নেই।

সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, অবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে তারপর জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে বলেও জানান তিনি।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, 'আমাদের ছাত্রনেতা নুরে আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুর রহিমকে হত্যা করা হয়েছে। আমি ভোলায় ও বরিশালে গিয়েছিলাম। নুরে আলমের ৫ বছরের ছোট্ট মেয়ে আমার কাছে এসে বলল- বাবাকে নিয়ে আসেন নাই? বিশ্বাস করেন এই কথার জবাব আমি দিতে পারি নাই। এই কথার জবাব একটাই যারা আমার ভাইদেরকে হত্যা করেছে তাদেরকে এই দেশ ছাড়া করতে হবে। তাদের এই দেশে থাকার কোন অধিকার নাই।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে একটা কথা আছে ‘ভাত দেওয়ার মুরোদ নাই কিল মারার গোসায়’। আমাদের সরকার প্রধানের অবস্থা এরকম ভাত দেওয়ার মুরোদ নাই কিল মারার গোসায়। এমন একটা জিনিস নাই যেটার দাম বাড়ে নাই। শুধু মাত্র মানুষের জীবনের দাম কমেছে।

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, কৃষকরা ভাত খাওয়ায় আপনাদের। সেই কৃষকদের সারের দাম বাড়িয়েছেন। শ্রমিকরা উৎপাদন করে তাদের কোন ন্যায্য মূল্য নাই। এই দেশের মানুষ খুব কষ্টে আছে। তিনি বলেন, কৃষকদলের এই সমাবেশ থেকে নিশ্চিত হয়ে আমি বলতে পারি। এই রৌদ্রের মধ্যে আপনারা দাঁড়িয়ে থাকতে পেরেছেন। আমি বিশ্বাস করি আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশ আসলে আপনারা রাস্তায় নেমে এই সরকারের বিদায় হওয়ার জন্য একটা শেষ কথা বলতে পারবেন।

এ সময় তিনি সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামী দিনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য। দেশনায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য এদেশে আন্দোলনে রাস্তায় থাকবেন এই আহবান করি।

জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় এবং সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমানুল্লাহ আমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল,  যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপি ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom