মিয়ানমার থেকে উড়ে এসে বাংলাদেশে পড়ল মর্টার শেল
রোববার বেলা আড়াইটার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে ৩৪ ও ৩৫ নম্বর সীমান্ত পিলার এলাকায় শেল দুটি পড়ার কথা জানায় পুলিশ।
প্রথম নিউজ, কক্সবাজার: মিয়ানমার দিক থেকে দুটি মর্টার শেল এসে পড়েছে বাংলাদেশের মাটিতে। রোববার বেলা আড়াইটার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে ৩৪ ও ৩৫ নম্বর সীমান্ত পিলার এলাকায় শেল দুটি পড়ার কথা জানায় পুলিশ। তবে এ সময় কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও স্থানীয়দের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। অনেকে ওই গ্রাম ছেড়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামের আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। পুলিশ সুপার তারিকুল সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমারের দুটি মর্টার শেল জিরো লাইন থেকে বাংলাদেশের আধা কিলোমিটার অভ্যন্তরে ঘুমধুম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের তুমব্রু সীমান্তে এসে পড়ে। এর মধ্যে একটি উত্তরপাড়া জামে মসজিদের পাশে, অপরটি ওই মসজিদ থেকে ২০০ গজ দূরে এসে পড়েছে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। সীমান্তে বিজিবি সদস্যরা সতর্কাবস্থায় রয়েছে। তিনি আরও বলেন, মর্টার শেলগুলো আমাদের দিকে টার্গেট করে ছোড়া হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি খুব সম্ভব মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সঙ্গে কোনো বিদ্রোহী গোষ্ঠীর গোলাগুলির কারণে আমাদের সীমান্তে এসে পড়তে পারে। স্থানীয় বাসিন্দা সরওয়ার আলম বলেন, রোববার বিকালে বিকট শব্দে গোলাটি উত্তর পাড়ার আয়াজের বাড়ির কাছে এসে পড়ে। পরে আরও একটি গোলা কাছাকাছি রাস্তায় নিক্ষেপ করা হয়। আমরা আতঙ্কে আছি।, জানি না কখন কি হয়। এ কারণে এ গ্রাম ছেড়ে অনেকে পাশের গ্রামে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ গণমাধ্যমকে বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে ওপারে গোলাগুলি হচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রে জেনেছি রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এতদিন পাহাড়ে গোলা ছুড়লেও আজকে উত্তর পাড়ায় মর্টার শেলগুলো পড়েছে, স্থানীয়রা আতঙ্কে আছে। ঘটনাস্থলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে জানতে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তর দায়িত্বরত ৩৪ বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কর্তব্যরত কেউ ফোন রিসিভ করেননি। তবে বিজিবির হেড কোয়ার্টারের পরিচালক (অপারেশন) মেজর ফয়েজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনার পর পরই সীমান্তে কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সীমান্তে কর্মরত বিজিবির জোয়ানেরা।
এদিকে রাখাইনে উত্তেজনার কারণে ঘুমধুমের দক্ষিণ কোনাপাড়া সীমান্তের শূন্যরেখায় বাস করা ৬২১টি পরিবারের ৪ হাজার ২০০ রোহিঙ্গারাও আতংকিত হয়ে পড়েছেন। শূন্য রেখার আশ্রয় শিবিরে বাস করা রোহিঙ্গা ছৈয়দ হোসেন বলেন, হঠাৎ করেই রাখাইনে তুমুল সংঘর্ষ হচ্ছে, আমরা আতংকে আছি কখন জানি আমাদের হতাহত হতে হয়। মিয়ানমারের বিজিপি চৌকি বসিয়ে আমাদের নজরদারি করছে, নিজ দেশে আদৌ ফেরত যাবো কিনা জানি না। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি বাংলাদেশ- মায়ানমার সীমান্তে মায়ানমারের উত্তর মংডুর ৩৮নং সীমান্ত পোস্ট সংলগ্ন এলাকায় মায়ানমারের সেনাবাহিনী ও রাখাইনের বিচ্ছিন্নবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। এছাড়াও রাখাইনের পালেতুয়া এলাকায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩৭ জন মিয়ানমারের সেনাসদস্য নিহত হয়েছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews