বড় হুমকির মুখে পুতিন
একই সঙ্গে রেডিও বার্তায় মস্কো অভিযানের কথাও ঘোষণা করেছে কুখ্যাত এই ‘ভাড়াটে খুনিদের দল’। যা আবার ‘পুতিনের নিজস্ব সেনা’ নামেও পরিচিত।
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করল ওয়াগনার বাহিনী। একই সঙ্গে রেডিও বার্তায় মস্কো অভিযানের কথাও ঘোষণা করেছে কুখ্যাত এই ‘ভাড়াটে খুনিদের দল’। যা আবার ‘পুতিনের নিজস্ব সেনা’ নামেও পরিচিত। ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের দাবি, তার বাহিনীর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালাচ্ছে মস্কোর সামরিক বাহিনী। ওয়াগনারের আকস্মিক বিদ্রোহে গভীর সংকটের মুখোমুখি হয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে স্বাধীন সামরিক বিশ্লেষক পাভেল ফেলগেনহাউয়ার বলেছেন, পুতিন তার শাসনামলে সবচেয়ে বড় হুমকির মুখে পড়েছেন। বর্তমানে তার সামনে যে চ্যালেঞ্জ দেখা যাচ্ছে তা খুবই গুরুতর। এবারই প্রথম সামরিক এবং বেশ কার্যকরী কোনো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন তিনি। এই সামরিক বিশ্লেষকের ধারণা, পুতিন এখন তার অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইও করবেন।
সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সাংবাদিক নিক প্যাট্রন এক বিশ্লেষণে লিখেছেন, রুশ প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আগামী ২৪ ঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিট প্যাট্রন বলেছেন, এই বিদ্রোহ আসন্ন ছিল চলমান যুদ্ধের অব্যবস্থাপনার কারণে।
অপরদিকে এটি অসম্ভব ছিল কারণ যারাই পুতিনের বিরুদ্ধে যান, তাদের গুম করে দেওয়া হয় অথবা বিষপ্রয়োগের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। দুই দশকের বেশি সময় ধরে রাশিয়া শাসন করে আসা দেশটির এই প্রেসিডেন্ট অতীতে কখনোই এমন পরিস্থিতিতে পড়েননি। এবারের এই সংকট সামলে ক্ষমতায় টিকে থাকা তার জন্য কঠিন হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বলছেন, এবারের এই সংকট সামলে ক্ষমতায় টিকে থাকা তার জন্য কঠিন হতে পারে। যদি রাশিয়ার অভিজাতরা এখন নিজেদের বাঁচাতে চায় তাহলে তাদের স্বদেশীদের ওপরই গুলি চালাতে হবে।
নিক প্যাট্রন বলেছেন, ধারণা করা হচ্ছে ওয়াগনার গত কয়েকদিন ধরেই এ বিদ্রোহের পরিকল্পনা করেছে। বাহিনীর প্রধান প্রিগোজিনের একটি পরিকল্পনা ছিল। বিদ্রোহ করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তন আনতে প্রেসিডেন্টকে বাধ্য করবেন। কিন্তু শনিবার পুতিন জাতির উদ্দেশে যে ভাষণ দিয়েছেন, তাতে তিনি বুঝিয়েছেন প্রিগোজিনের এ পরিকল্পনা সফল হবে না। বর্তমানে যা চলছে সেটি রাশিয়ার অভিজাত শ্রেণি এবং ভাড়াটে সেনা ওয়াগনার-দুই পক্ষের জন্যই অস্তিত্ব রক্ষার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই বিশ্লেষক বলেছেন, প্রিগোজিন হয়তো বিদ্রোহে জয়ী হবেন না, তবে দুর্বল হয়ে যাওয়া পুতিন আগামী কয়েক মাসে নিজের শক্তি প্রমাণের জন্য অযৌক্তিক অনেক কিছু করতে পারেন।