বাড়ি ঢুকতে না পেরে রাস্তার পাশে বসবাস, হাজির ইউএনও
ভুক্তভোগী হাসান আলী (৪০) কালিগঞ্জ উপজেলার মদাতি ইউনিয়নের কিশামত মদাতি গ্রামের মৃত মোনা শেখের ছেলে।
প্রথম নিউজ, লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় ঘর তুলে বন্ধ করে দেওয়া হয় চলাচলের রাস্তা। এতে তিনদিন ধরে রাস্তার পাশে প্লাস্টিকে মোড়ানো ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছিল একটি পরিবার। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। পরে শনিবার (১০ জুন) দুপুরে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহির ইমাম ও মদাতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবারটিকে উদ্ধার করেন। পরে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে প্রতিপক্ষের ঘর ও সুপারি গাছ তুলে পরিবারটির বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা অবমুক্ত করেন।
ভুক্তভোগী হাসান আলী (৪০) কালিগঞ্জ উপজেলার মদাতি ইউনিয়নের কিশামত মদাতি গ্রামের মৃত মোনা শেখের ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার মদাতি ইউনিয়নের কিসামত মদাতি গ্রামের ভ্যানচালক হাসান আলী প্রায় ৩০ বছর আগে ৪ শতক জমি কিনে বসবাস করে আসছেন। এদিকে একই গ্রামের প্রতিপক্ষ সহিদার, আব্দুল কুদ্দুস, বুলবুল ও আমিনুর বুধবার (৭ জুন) হাসান আলীর পরিবার একটি মামলায় লালমনিরহাট আদালতে গেলে তার বাড়ির চলাচলের রাস্তায় টিনশেড ঘর নির্মাণ করে রাস্তা বন্ধ করে দেন। আদালত থেকে ফিরে হাসান আলীর পরিবার আর বাড়িতে প্রবেশ করতে না পারেনি। পরে রাস্তার ধারে প্লাস্টিকে মোড়ানো ঝুপড়ি ঘরে পরিবার নিয়ে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেই তিনদিন ধরে অবস্থান করেন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান ও কালীগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পায়নি পরিবারটি। বিষয়টি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে প্রশাসনের টনক নড়ে।
স্থানীয় প্রতিবেশী আব্দুল করিম (৬০) বলেন, এই রাস্তা দিয়ে ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে চলাচল করা হয়। মামলার জের ধরে হাসান আলীর রাস্তা তার প্রতিবেশী আব্দুল কুদ্দুস ও আমিনুররা বন্ধ করে দেয়। এই পরিবারটি অসহায় অবস্থায় তিনদিন ধরে রাস্তার পাশে রাত্রী যাপন করে।
ভুক্তভোগী ভ্যানচালক হাসান আলী বলেন, প্রতিপক্ষদের দেওয়া সিআর মামলায় পরিবার নিয়ে লালমনিরহাট আদালতে হাজিরা দিতে যাই। এই সুযোগে প্রতিপক্ষরা আমার বাড়ি যাওয়ার রাস্তায় ঘর তৈরি করে চলাচল বন্ধ করে দেয়। পড়ে আমি ও আমার পরিবার নিরুপায় হয়ে রাস্তার পাশে প্লাস্টিকের ঝুপড়িতে তিনদিন ধরে অবস্থান করি। এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানা ও চেয়ারম্যানকে অভিযোগ করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
অভিযুক্ত আব্দুল কুদ্দুস ও সহিদার রহমান বলেন, আমাদের বাপ দাদার পৈত্রিক জমির ওপর দিয়ে রাস্তা। এটি কোনো সরকারি রাস্তা নয়। তাই ওই জায়গাটা খালি থাকায় ঘর নির্মাণ করেছি। মদাতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় তিন-চারটি পরিবার অবরুদ্ধ ছিল। আজ ইউএনও ঘটনাস্থলে এসে রাস্তা অবমুক্ত করে দিয়েছেন।
কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান বলেন, রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি মৌখিক জানিয়েছেন। আমি তাকে ইউএনও মহোদয়ের কাছে যেতে বলেছি। কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহির ইমাম বলেন, মদাতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে এসে কয়েকটি পরিবারের চলাচলের রাস্তা অবমুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।