পুলিশ ফাঁড়ি ও দোকানে আগুন দিলেন বিক্ষুব্ধ রাবি ছাত্ররা

স্থানীয়রা বিনোদপুর বাজারসংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীরের বাইরে থেকে শিক্ষার্থীদের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করছেন। পালটা আক্রমণে রাবি শিক্ষার্থীরাও স্থানীয়দের লক্ষ্য করে প্রাচীরের ভেতর থেকে বাইরে ইটপাটকেল ছুড়ছেন।

পুলিশ ফাঁড়ি ও দোকানে আগুন দিলেন বিক্ষুব্ধ রাবি ছাত্ররা
পুলিশ ফাঁড়ি ও দোকানে আগুন দিলেন বিক্ষুব্ধ রাবি ছাত্ররা

প্রথম নিউজ, রাবি : বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। স্থানীয়রা বিনোদপুর বাজারসংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীরের বাইরে থেকে শিক্ষার্থীদের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করছেন। পালটা আক্রমণে রাবি শিক্ষার্থীরাও স্থানীয়দের লক্ষ্য করে প্রাচীরের ভেতর থেকে বাইরে ইটপাটকেল ছুড়ছেন। এ রিপোর্ট লেখার সময় শনিবার রাত ৯টার পরও সংঘর্ষ চলছিল। উভয়পক্ষের সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর পুলিশ ফাঁড়িসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীর ঘেঁষে থাকা দোকানগুলো আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জলকামান ও টিয়ারশেল ছুড়ছে পুলিশ। শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর।

সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম। আহত শিক্ষার্থীদের অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন, আবার অনেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া একজন স্থানীয় আহত হওয়ার খবর জানা গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে আহত শিক্ষার্থীদের নাম জানা যায়নি।

জানা গেছে, বগুড়া থেকে ইসলাম ট্রাভেলসের বাসে রাজশাহী আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আলামিন আকাশ। বাসে সিটে বসাকে কেন্দ্র করে গাড়ির ড্রাইভার শরিফুল ও কন্ডাক্টর রিপনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় আকাশের। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেট এসে আবারও কন্ডাক্টারের সঙ্গে ঝামেলা বাধে। তখন স্থানীয় এক দোকানদার এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং স্থানীয় দোকানদারে ওপর চড়াও হন। বিষয়টির মীমাংসা করতে ঘটনাস্থলে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া গেলে তার বাইকে আগুন লাগিয়ে দেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের হামলায় আহত রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আল জাবের আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, বাসের কন্ডাক্টর ও স্থানীয়দের হামলা থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে রক্ষা করতে ঘটনাস্থলে যাই। এ সময় তারা আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের শতাধিক ছাত্র আহত হয়েছেন। আমরা সবাই হাসপাতালে এসেছি চিকিৎসা নিতে। চারুকলা অনুষদের আহত শিক্ষার্থী আকাশ জানান, আমি রাস্তার ওপরে ছিলাম, হঠাৎ স্থানীয়রা আক্রমণ করেন। এলোপাতাড়ি মারতে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত মাথা, হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত নিয়ে অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন। গুরুতর আহত  ২৫ জন শিক্ষার্থীকে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। আহতের পরিমাণ বেড়েই চলছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালাচ্ছে। র‌্যাবও এ অভিযানে অংশ নিচ্ছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: