পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারে সিরিজ বৈঠক আজ

পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারে সিরিজ বৈঠক আজ

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারে আজ ওয়াশিংটনে পৃথক চারটি বৈঠকে বসছেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশের নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন। ৮ই সেপ্টেম্বর দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্র গেছেন তিনি। নিউ ইয়র্কে দু’দিন কাটিয়ে বুধবার ওয়াশিংটন পৌঁছেছেন মিস্টার উদ্দিন।    বৃহস্পতিবার মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের রাজনীতিবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত আন্ডার সেক্রেটারি জন বাসসহ বাইডেন প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

ঢাকা ও ওয়াশিংটনের দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্র রাতে মানবজমিনকে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার রাতে পররাষ্ট্র সচিব ওয়াশিংটন পৌঁছান। তার আগে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের চলমান অধিবেশনে সোমবার থেকে ছিলেন তিনি।

সূত্র বলছে, মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি জন বাসের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন ওয়াশিংটনে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক লিন্ডসে ফোর্ড, উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিচার্ড ভার্মা, সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। প্রথম সফর হিসেবে তার সম্মানে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর একটি ভোজের আয়োজন করছে, সেই ভোজে বাইডেন প্রশাসনের ইনফ্লুয়েনশিয়াল কর্মকর্তাদের যোগদানের কথা রয়েছে। যার অন্যতম ইনফ্লুয়েনশিয়াল ব্যক্তিত্ব হচ্ছেন দক্ষিণ এশিয়া বিশেষত বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বিষয়গুলো দেখভালে দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লু।

সূত্র বলছে, কেবল তাই নয়, পররাষ্ট্রসচিব শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া এবং দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী শেলবি স্মিথ–উইলসনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।  

ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও পলায়নের পর গত ৮ই আগস্ট নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর ঢাকার কোন কর্মকর্তার ওয়াশিংটনে এমন সিরিজ আলোচনা এটাই প্রথম। অবশ্য গত ১৫ সেপ্টেম্বর  যুক্তরাষ্ট্রের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করেছে। ঢাকার বৈঠকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সংস্কারের উদ্যোগে বন্ধু হিসেবে পাশে থাকার আগ্রহ ব্যক্ত করেছে ওয়াশিংটন। তাছাড়া বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সহযোগিতার নানা বিষয়েও কথা হয়েছে। সেই আলোচনার ধারাবাহিকতায় এবারের ওয়াশিংটন বৈঠকগুলো হচ্ছে।

স্মরণ করা যায়, গেল মাসের শেষ দিকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে চিরাচরিত প্রথা ভেঙে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একান্তে আলোচনা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কাছাকাছি সময়ে অভিন্ন ভেন্যুতে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, সংস্কার প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার জোরালোভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে চায়। তবে তা অতীতের মতো নয়, বরং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ নতুন বাস্তবতায় দ্রুততার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। এ কারণে আজ এবং আগামীকালের ওয়াশিংটন বৈঠকগুলো খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। ধারণা মিলেছে, সেখানে সামগ্রিকভাবে বিভিন্ন খাতে সংস্কার, অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শ্রম ও মানবাধিকার, সুশাসন, দুর্নীতি দমন, সন্ত্রাসবাদ দমন, প্রতিরক্ষা, স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা সংকটসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হবে।