পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ ভিসি’র অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের তথ্য

ইউজিসির অনুসন্ধানে বলা হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে চার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মূল বেতনের বাইরেও বিশেষ ভাতা, দায়িত্ব ভাতা, স্যাংচুয়াল ভাতাসহ বিভিন্ন নামে প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত ভাতা গ্রহণ করেছেন। 

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ ভিসি’র অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের তথ্য

প্রথম নিউজ, অনলাইন: দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক বাজেটের অর্থ ব্যয়ে ২০ ধরনের অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। এসব অনিয়মে নাম এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরদেরও (ভিসি)। এক অনুসন্ধানে চার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস  চ্যান্সেলরের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের তথ্য পেয়েছে ইউজিসি। অনুসন্ধানে বলা হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে চার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মূল বেতনের বাইরেও বিশেষ ভাতা, দায়িত্ব ভাতা, স্যাংচুয়াল ভাতাসহ বিভিন্ন নামে প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত ভাতা গ্রহণ করেছেন। 

অনিয়ম পাওয়া চার ভিসি হলেন- বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ভিসি অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ভিসি অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া।

নিয়মানুযায়ী ভিসিরা বেতনের বাইরে চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতা এবং যাতায়াত ভাতাসহ সরকারি বিধি অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা ২০ শতাংশ অ্যালাওয়েন্স পেতেন। এরপর এই নিয়ম বাতিল করা হয়। কিন্তু এই চার ভিসি মূল বেতনের বাইরে পৃথক ভাউচার দেখিয়ে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ভাতা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, নিয়মের বাইরে কেউ অতিরিক্ত ভাতা গ্রহণ করলে তাকে সেই অর্থ ফেরত দিতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে অর্থ ব্যয়ের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এই অনিয়মের বিষয়ে তাদের জানানো হয়েছে এবং সংশোধন করতে বলা হয়েছে। এখন তারা যদি এটি সংশোধন করে অর্থ ফেরত দেন তবে সমাধান হয়ে যাবে। তা না হলে পরবর্তীতে অডিট আপত্তি হবে।

ইউজিসি চিহ্নিত বিধিবহির্ভূত আর্থিক সুবিধা নেয়া ২০ খাত হচ্ছে- উচ্চতর স্কেলে বেতন প্রদান; বিধিবহির্ভূত ভাবে পঞ্চম গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তাকে তৃতীয় গ্রেড প্রদান; ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি ও স্কেল প্রদান, এমনকি যোগদানের তারিখ থেকে পদোন্নতি; অননুমোদিত পদে নিয়োগ, আপগ্রেডেশন ও বেতন প্রদান; অনর্জিত ইনক্রিমেন্ট প্রদান; বেতনের বাইরে নানা নামে ভিসি হিসেবে অতিরিক্ত অর্থগ্রহণ; বাংলোতে বসবাস সত্ত্বেও বাড়ি ভাড়া গ্রহণ; পূর্ণ বাড়ি দেয়ার পরও কম নেয়ার উদ্দেশ্যে বর্গফুটের হিসাবে ভাড়া গ্রহণ; মফস্বলের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-জনবলকে সিটি করপোরেশনের হিসাবে বাড়ি ভাড়া প্রদান; এর বাইরেও সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া প্রদান; সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন করে সেশন বেনিফিট প্রদান; পিআরএলের পরিবর্তে এলপিআর প্রদান; বিদ্যুৎ-গ্যাস বিল ভর্তুকি দেয়া; গবেষণা-মোবাইল-টেলিফোন-ইন্টারনেট ভাতা প্রদান, নিয়মের বাইরে বই ভাতা দেয়া; ড্রাইভারদের নবম থেকে পঞ্চম গ্রেডে বেতন দেয়া; চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে সরকারের আর্থিক নীতিমালা লঙ্ঘন এবং যৌথ বীমা বা কল্যাণ তহবিলে (অর্থ) স্থানান্তর। ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ৫৫ দফা নির্দেশনা অনুমোদন করেন। পাশাপাশি কৃচ্ছ সাধনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেয়া ৯ নির্দেশনাও অনুমোদন করে।