আবেদ খানের দাবি করা ৩০০ কোটি টাকার বাড়ি সরকারের মালিকানায় থাকবে: আপিল বিভাগ

আজ প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন।

আবেদ খানের দাবি করা ৩০০ কোটি টাকার বাড়ি সরকারের মালিকানায় থাকবে: আপিল বিভাগ

প্রথম নিউজ, ঢাকা: সাংবাদিক আবেদ খান ও এস নেহাল আহমেদের দাবি করা ধানমন্ডির ৩০০ কোটি টাকার বাড়ি সরকারের মালিকানায় থাকবে বলে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আজ প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন। রাজধানীর ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কের ২৯ (তৎকালীন ১৩৯/এ) নম্বর বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে বাদ দিতে প্রথম কোর্ট অব সেটেলমেন্টের দেওয়া রায় বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট। এই রায়ের বিরুদ্ধে এস নেহাল আহমেদ নামের এক ব্যক্তির করা লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) ওপর এ রায় দেন আপিল বিভাগ।

ওই বাড়ি নিয়ে পৃথক দুটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ২১ নভেম্বর কোর্ট অব সেটেলমেন্টের রায় বাতিল করে হাইকোর্ট রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে নেহাল আহমেদ চলতি বছর লিভ টু আপিল করেন। গত সপ্তাহে এ সংক্রান্ত শুনানিতে আপিল বিভাগ বাড়ি নিয়ে কোর্ট অব সেটেলমেন্টে করা দুটি মামলার নথি রাষ্ট্রপক্ষকে দাখিল করতে বলেন। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপক্ষ গতকাল রোববার নথি দাখিল করে ও শুনানি হয়। রাষ্ট্রপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাড়িটির তৎকালীন মালিক ছেড়ে যাওয়ার পর সরকার সেটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি ঘোষণা করে। এই সম্পত্তির উত্তরাধিকার হিসেবে মালিকানা দাবি করে আবেদ খানসহ তাঁর পরিবারের ৯ সদস্য ১৯৮৯ সালে কোর্ট অব সেটেলমেন্টে মামলা করেন। এই মামলায় ১৯৯২ সালে কোর্ট অব সেটেলমেন্টের দেওয়া রায়ে বাড়িটির পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্তিকে সঠিক বলা হয়। এরপর বাড়িটিকে পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদ খান ২০১৫ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ৬ জুলাই হাইকোর্ট রুল দেন।

অন্যদিকে ১৯৮৭ সালের এক আবেদন দেখিয়ে নেহাল আহমেদ একই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে ১৯৯৬ সালে কোর্ট অব সেটেলমেন্টে আরেকটি মামলা করেন।  এ মামলায় ১৯৯৭ সালের ১৬ জুলাই এক রায়ে বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে অবমুক্ত করতে এবং নেহাল আহমেদ বাড়ির দখল পেতে পারেন বলে উল্লেখ করা হয়। এই রায়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সরকারের পক্ষে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালে একটি রিট করে। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই হাইকোর্ট রুল দেন। আবেদ খান ও সরকার পক্ষের পৃথক রিটের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে গত বছরের ২১ নভেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। এই রায়ে নেহালের পক্ষে সেটেলমেন্ট কোর্টের দেওয়া রায় বাতিল এবং আবেদ খানের রিট খারিজ (রুল ডিসচার্জ) হয়।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান গণমাধ্যমকে জানান, বাড়িসহ ধানমন্ডির ওই জায়গার আয়তন এক বিঘা। পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে বাড়িটি এখন সরকারের দখলে আছে। নেহাল আহমেদের পক্ষে ১৯৯৬ সালে কোর্ট অব সেটেলমেন্টে রায় হয়। এই রায় বাস্তবায়ন চেয়ে তিনি হাইকোর্টে পৃথক রিট করলে হাইকোর্ট তাঁর পক্ষে সিদ্ধান্ত দেন। এর বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে সরকারপক্ষ আপিল করে। গত বছর হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে নেহাল আহমেদ লিভ টু আপিল করেন। সরকারপক্ষের আপিল ও নেহালের করা লিভ টু আপিলের ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়। আপিল বিভাগ আগামীকাল আদেশের জন্য দিন রেখেছেন।