উপহারের ঘরে ভোগান্তি: দু’মাসেও মেলেনি পানি-বিদ্যুৎ, খুলে পড়ছে দরজা-জানালা
ঘরে ওঠার দুমাসেও পানি-বিদ্যুৎ না পেয়ে চরম ভোগান্তিতে বসবাস করছে তারা। শুধু তাই নয়, ঘরের দরজা, জানালা ও দেওয়ালের পলেস্তারা খুলে পড়ছে এখনই।
প্রথম নিউজ, কলাপাড়া (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে চতুর্থ পর্যায়ে জমিসহ ঘর পেয়েছিল ৬৪ পরিবার। ঘরে ওঠার দুমাসেও পানি-বিদ্যুৎ না পেয়ে চরম ভোগান্তিতে বসবাস করছে তারা। শুধু তাই নয়, ঘরের দরজা, জানালা ও দেওয়ালের পলেস্তারা খুলে পড়ছে এখনই। উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের নয়াপাড়া খালের দুপাশে নির্মিত জমিসহ ভূমিহীন ৬৪টি পরিবারকে ঘর উপহার দেয় সরকার। ৩১ মার্চ উপজেলা প্রশাসন ঘর বুঝিয়ে দিলে বেশিরভাগ পরিবারই বসবাস শুরু করে।
উপকারভোগীদের অভিযোগ, ঘরে উঠেই তারা দরজা জানালা ভাঙা পেয়েছে। কর্তৃপক্ষ মেরামত করলেও ফের জানালা খুলে পড়ছে। দেওয়ালের পলেস্তারা উঠে গেছে। সামান্য বৃষ্টিতে চলাচলের রাস্তায় পানি জমেছে। হালকা বাতাসেও কাঁপছে ঘরগুলো। তারা আরও জানান, ঘর বুঝে পাওয়ার দিন বিদ্যুৎ লাইনের জন্য প্রতি পরিবার থেকে ৫৬৫ টাকা করে দেওয়া হয় এবং দ্রুত খাবার পানির জন্য টিউবওয়েল দেওয়ার কথা বললেও এখনো পর্যন্ত এগুলো থেকে বঞ্চিত তারা।
৪২ নম্বর ঘরের বাসিন্দা মোসা. রাবেয়া বেগম বলেন, ঘর দিয়েছে সরকার আমরা খুশি হয়েছি। কিন্তু এখন ঘরে থাকার মতো কোনো অবস্থা নেই। ঘরের মাকতা (চালা) দিয়া পানি পড়ে। হালকা বাতাস হলে নড়েচড়ে ওঠে। তিনি আরও বলেন, যেদিন ঘর পেয়েছি সেদিন টাকা দিয়েছি বিদ্যুতের জন্য। কিন্তু দুমাস হলো পানি বিদ্যুৎ কিছুই পাইনি। এভাবে হলে ঘর ছেড়ে যেতে হবে।
ষাটোর্ধ্ব হাবিব নামের এক বাসিন্দা বলেন, অন্যগ্রাম থেকে খাবার পানি টেনে আনা, গোসল সারতে হয়। এভাবে আর কতদিন? বিদ্যুৎ নাই। আমাদের জমিসহ ঘর দিলেও শুধু জমিটুকু পেয়েছি সঠিকভাবে অন্য সবকিছুতেই সমস্যা। ইউএনওকে জানানোর পর বলেছেন ব্যবস্থা করছি। কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা হয়নি। আমরা খুবই দুর্ভোগে আছি। দ্রুত এগুলোর সমাধান চাই।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ঘর বুঝিয়ে দেওয়ার পর আমরা সার্বক্ষণিক ওখানে তদারকি করছি। টিউবওয়েল ও বিদ্যুতের বিষয়ে আমাদের বোর্ড মিটিং হয়েছে। আশা করি শিগগির সবগুলোর সমাধান হবে, যাতে তারা ভালোভাবে বসবাস করতে পারে।