উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল আগেই নির্ধারিত করা: রিজভী
প্রথম নিউজ, ঢাকা : উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল আগেই নির্ধারিত, এখন শুধু ঘোষণা করা বাকি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের পর এখন আবার আওয়ামী সাদা পোশাকধারী বাহিনী নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। ছাত্র, যুবক, শ্রমিক, বুদ্ধিজীবীসহ অধিকার বঞ্চিত জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। নতুন করে গুম ও বিরোধদলের ওপর আক্রমণ প্রতিদিনের সংবাদে পরিণত হয়েছে।
দেশের ‘বিপজ্জনক পরিস্থিতি’তে মানুষের মনোযোগ ভিন্ন খাতে সরিয়ে দিতে সরকার অশান্তি জিইয়ে রাখার কৌশল গ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা নিজের আর পরিবারের আর্থিক অবস্থা গুছিয়ে নেওয়ার ধান্দায় রয়েছে। এতে করে সারাদেশ আজ বিপর্যস্ত। ঢাকাতেই বেড়েছে আওয়ামী হিংস্রতার মাত্রা।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, নিজ কক্ষে তিন ঘণ্টা আটকিয়ে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের দুই নেতা নাফিউল ইসলাম জীবন এবং তার বন্ধু ইউনুস খানকে মারধর ও নির্যাতন করা হয়েছে। পিস্তল দেখিয়ে পায়ে গুলি করার হুমকি দেওয়া হয়।
ছাত্রলীগকে ‘সন্ত্রাসী’ বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে এরা হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ছে ছাত্রদের ওপর। হামলা চালাচ্ছে সাধারণ মানুষের ওপরও। জীবন—জীবিকা সব কেড়ে নিঃস্ব, রিক্ত ও বিপর্যস্ত করছে। ছাত্রলীগ-যুবলীগ দেশের সবচেয়ে খতরনাক বিপদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদে ভোটারবিহীন নির্বাচনে কেউ চেয়ারম্যান হলে হাতিশালে হাতি ও ঘোড়াশালে ঘোড়ার অভাব হয় না। আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী—এমপি ও নেতাদের স্বজন ছাড়া অন্য কেউ নির্বাচিত হতে পারে না। ভোটের প্রয়োজন হয় না। ফলাফল নির্ধারিত থাকে, সেটিই ঘোষিত হয়।
রিজভী আরও বলেন, উপজেলা প্রতিষ্ঠানকে করা হয়েছে লুটেরা ও দস্যুদলের আখড়া। এমনও দেখা যাচ্ছে ভোটারবিহীন নির্বাচনে দুবার উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে ১০০ বিঘার বেশি জমির মালিক। অথচ আইন অনুযায়ী ৬০ বিঘার বেশি জমি থাকতে পারে না। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি যতই উচ্চারিত হয় ততই সরকারের কাছে জেল—জুলুমের প্রয়োজনীয়তা বাড়ে।
যে দেশে গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটাও নেই সেই দেশে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, পঞ্চগড়ে তেঁতুলিয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিক আব্দুল জলিল ও ইয়াসিন নিহত হয়েছেন। ভারত যেন এখন সরাসরি রক্তাক্ত আগ্রাসন চালাচ্ছে বাংলাদেশে। আর এটি সম্ভব হয়েছে ডামি সরকারের আত্মা বিক্রির জন্য।
রিজভী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে দুজন বাংলাদেশি নিহত হওয়ায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। অথচ ভারতের এই রক্তাক্ত নির্মমতার বিষয়ে তিনি নিশ্চুপ। তাদের সব কসুর মাফ করে দেন।