আ.লীগ ও তার দোসরেরা জোরপূর্বক ভোটাধিকার হরণ করায় জনগণ ব্যথিত ও সংক্ষুব্ধ: বিএনপি
আজ বুধবার সকালে গুলমাণে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রথম নিউজ, ঢাকা: আওয়ামী লীগ ও তার সুবিধাভোগী দোসরেরা আরও একবার জোরপূর্বক ভোটাধিকার হরণ করায়, বাংলাদেশের জনগণ ব্যথিত, মর্মাহত ও সংক্ষুব্ধ বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ।
আজ বুধবার সকালে গুলমাণে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইমলাম খান, ড. আব্দুল মইন খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির উপদেষ্টা ডা. সিরাজুল ইসলাম, তাহসিনা রুশদির লুনা, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, হারুন অর রশিদ প্রমুখ।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ৭ জানুয়ারি যে প্রহসনমূলক ডামি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তার উদ্দেশ্য জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা বা আকাঙ্খার প্রতিফলন ছিল না। বরং, নির্বাচনের নামে এটি ছিল জাতির সঙ্গে একটি সহিংস প্রতারণা, যার উদ্দেশ্য অবৈধভাবে, অনৈতিকভাবে ও অসাংবিধানিকভাবে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখা। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে, ভোট ডাকাতির অভিনব সব পন্থা অবলম্বন করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে কলঙ্কিত ইতিহাস তৈরি করে তারই ধারাবাহিকতায় ডামি প্রার্থী, ডামি দল, ডামি ভোটার ও ডামি পর্যবেক্ষকদের সমন্বয়ে মঞ্চস্থ হয়েছে ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচন। গত ১৫ বছর ধরে গণবিদ্বেষী সরকার যে দুর্নীতি-দুঃশাসন ও দমন-দুরৃত্তায়ন চালিয়েছে, সমাজের প্রতিটি শ্রেণী ও পেশার মানুষ তাতে বৈষম্য, অবিচার ও নি'পীড়ণের শিকার হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই, আওয়ামী লীগ ও তার সুবিধাভোগী দোসরেরা আরও একবার জোরপূর্বক ভোটাধিকার হরণ করায়, বাংলাদেশের জনগণ ব্যথিত, মর্মাহত ও সংক্ষুব্ধ। এই জনরোষ আবারও প্রমাণ করেছে, আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুধু গণবিরোধীই নয়, এটি পরিপূর্ণভাবে ব্যর্থ ও অন্তঃসারশূন্য। দেশব্যাপী নজিরবিহীন হুমকি-ভীতি উপেক্ষা করে, ভাগ-বাঁটোয়ারার নির্বাচনে, শতকরা ৫ ভাগেরও কম ভোটার উপস্থিতি একটি সুস্পষ্ট বার্তা দেয়। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ, তথা ১২ কোটি ভোটারের প্রায় সকলের এই ঐক্য মূলত, জনগণের আদালতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক বিচার। স্বাধীনতাকামী জনগণ সমস্বরে - প্রবলভাবে জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও ৬২টি গণতন্ত্রমনা রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত সঠিক ও যৌক্তিক।
বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মুল উদ্দেশ্য গণমানুষের ন্যায্য দাবী দাওয়া আদায়ের আকাঙ্খা পূরণের লক্ষে শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য মানুষের কাছে যাওয়া, মানুষকে সম্পৃক্ত করা, জনমত সৃষ্টি করা, গণতন্ত্রহীনতার যে পরিস্থিতি সেটি থেকে উত্তরণের জন্য শেখ হাসিনার অধীনে প্রহসনের ভোট বর্জন করা। বিএনপির আবেদনে সাড়া দিয়ে, নির্বাচনকে বর্জন ও ফলাফলকে প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে, জনগণ প্রমান করেছে, বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান গণআকাঙ্খারই প্রতিফলন। বিএনপির সাথে একাত্র হয়ে গণমানুষের এই নীরব প্রতিবাদ, এই স্বতঃসৃফুর্ত সমর্থন, বস্তুত বিএনপির রাজনীতির সফলতা তথা বিজয়ের বহিপ্রকাশ। অন্যদিকে, ইলেকশনের নামে সিলেকশন নাটক মঞ্চস্থ করতে, আওয়ামী লীগের যে সহিংসতা- নাশকতা, প্রকৃত কোনো বিরোধী দলীয় প্রার্থী না থাকার পরও যে অনিয়ম-কারচুপি, ভোটার উপস্থিতি বাড়িয়ে দেখানোর জন্য নির্বাচন কমিশন ও রাষ্ট্রযন্ত্রের যে অদ্ভূত-অবিশ্বাস্য দাবি এবং এসব ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষিতে যে অভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক সমালোচনা-হতাশা- সেখানেই আওয়ামী লীগের নৈতিক পরাজয় নিহিত। ১৫ বছর ক্ষমতা কুক্ষিগত রেখে- দলীয় সাংগঠনিক প্রচেষ্টা ও রাষ্ট্রীয় প্রশাসনিক ক্ষমতা, তথা অবৈধ বল প্রয়োগ করেও Ñ ন্যুনতম ভোটার জমায়েতে অক্ষম আওয়ামী লীগ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের দ্বারা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এর কারণ, এই রাজনৈতিক অপশক্তি ও তার উচ্ছিষ্টভোগীদের বাইরে, বাংলাদেশের প্রতিটি ব্যক্তি, পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের অধিকার, স্বাধীনতা ও মর্যাদা কেড়ে নিয়েছে অনির্বাচিত সরকার। বিদ্যমান দুর্বিষহ অবস্থা থেকে পরিত্রানের জন্য, বাংলাদেশের প্রধান ও বিপুল জনসমর্থিত রাজনৈতিক দল হিসেবে, দেশবাসী তাকিয়ে আছে বিএনপির দিকে, এটি আমরাও উপলব্ধি করি। একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের সাফল্যের ষে মানদন্ড- অর্থাৎ জনগণের সমর্থন, জনমত গঠন, সাংগঠনিক শক্তিমত্তা, সদস্য সংখ্যা- প্রতিটি মানদন্ডে বিএনপির সাফল্য বারবার প্রমাণিত হয়েছে। দেশজুড়ে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির সমাবেশেসুমূহে, যেভাবে লক্ষ-লক্ষ মানুষ উপস্থিত হয়েছেন, ঢাকার সকল মহাসমাবেশে যেভাবে ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষের সমাগম হয়েছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন ধারাবাহিক জনস্রোত অভূতপূর্ব। স্বল্প সময়ের আয়োজনে, রাষ্ট্রযান্ত্রের সর্বপ্রকার প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে, বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচিতে, জনগণের যে স্বতঃস্ফুর্ত উপস্থিতি, তা একাধারে বিএনপির জনসম্পৃক্ততা ও সাংগঠনিক সক্ষমতারই বহিঃপ্রকাশ।
তিনি বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে, বিএনপির মতো আর কোন রাজনৈতিক দল কি আছে, যার ৫০ লক্ষেরও বেশি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা রাজনৈতিক মামলা দায়ের করা হয়েছে? কোন অপরাধে, আমাদের ২ হাজার ৭০০ এরও বেশি নেতা-কর্মীকে শেখ হাসিনা ও তাঁর অনুগত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী হত্যা করেছে? কেন প্রায় ৭০০ জন নিরপরাধ মানুষকে গুম করেছে? কিসের ভিত্তিতে, বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাকস্বাধীনতা হরণ করে, একের পর এক সাজানো মামলার পাতানো রায় দেওয়া হচ্ছে? বানরের পিঠা ভাগের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ, ২৫ হাজারেরও বেশি নেতা-কর্মীকে কেন ফ্যাসিস্ট সরকার পরিকল্পিতভাবে গ্রেপ্তার করেছে? এই সময়ে, বিএনপির রাজনীতি করার অপরাধে কেন ১১ জন কর্মীকে কারাগারে হত্যা করেছে? এই প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরেই নিহিত, দেশের বৃহত্তম ও জনপ্রিয়তম রাজনৈতিক দল হিসেবে, গণতন্ত্রের পক্ষের প্রধান শক্তি হিসেবে, বিএনপির আত্মত্যাগ, তথা সার্থকতা। কারণ, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতে এবং শান্তিপূর্ণ ও অহিংস কর্মসূচিতে, বিএনপি মোকাবেলা করে চলেছে সহিংস-সশ¯্র শেখ হাসিনা সরকারকে। অন্যদিকে ক্ষমতার মোহে অন্ধ আওয়ামী লীগ, একটি দানবীয় অপশক্তিতে পরিণত হয়ে, মানবাধিকার লঙঘনকে ধারণ করেছে ঘৃণ্য রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে। গত ১৫ বছর ধরে, বিএনপির সাথে জড়িত প্রতিটি ব্যক্তি ও পরিবারের উপর যে নৃশংস অত্যাচার-অবিচার হয়ে আসছে, দেশী-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমের অজস্র প্রতিবেদনে তা লিপিবদ্ধ। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে শামিল হওয়ার অপরাধে, ফ্যাসিবাদের সাথে আপোষ না করার অজুহাতে, বিএনপির ৫০ লক্ষ নেতা-কর্মী তাঁদের নাগরিক জীবন থেকে বঞ্চিত। আমাদের প্রত্যেকে, প্রতিদিন, পুলিশি নিপীড়ন ও বিচার বিভাগের অবিচারের শিকার হচ্ছি। গায়েবি ও বানোয়াট মামলায়, কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়াই, তালিকা করে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বিএনপি ও সকল অঙ্গ-সংগঠনের সর্বস্তরের সদস্যদের বিরুদ্ধে। তৃণমূল থেকে সর্বোচ্চ নেতৃত্ব পর্যন্ত বিস্তৃত-নির্বিচার এই গণতালিকা ও সাজানো রায় থেকে - বাদ পড়েন না এমনকি মৃত বা গুম ব্যাক্তিরাও, যারা এক সময় বিএনপির যেকোনো পর্যায়ের নেতৃত্বে ছিলেন। মৃত ব্যক্তির ভোট প্রদানের অপসংস্কৃতি শুরু করেই ক্ষান্ত হয়নি শেখ হাসিনার রাষ্ট্রযন্ত্র এখন তারা মৃত বিএনপি সদস্যদের নামে নাশকতার মামলা দিচ্ছে, এমনকি সেই কল্পিত ঘটনায় ফরমায়েসী সাজাও দিচ্ছে! মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাধ্য করা হচ্ছে হাতকড়া-ডাÐাবেড়ি পড়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে, বাবা-মা'র জানাজায় অংশ নিতে। বাড়িতে-বাড়িতে চলছে ছাত্রলীগ- পুলিশের যৌথ অভিযান ও হামলা। ভেঙে দিচ্ছ, লুটে নিচ্ছে, ব্যবসা-বাণিজ্য, স্থাপনা-সম্পদ। কখনোবা নেতা-কর্মীদের না পেলে, গ্রেফতার-নির্যাতন করছে ভাই-বাবা-মা-স্ত্রী-সন্তান বা পরিবারের অন্য সদস্যদের। দেশজুড়ে, পাড়ায়-মহল্লায়-ওয়ার্ডে, জনগণের মাঝে বিএনপির উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ এতটাই ভীত যে, পুলিশি সহায়তায় ও মিথ্যা মামলায়, নেতা-কর্মীদের বাড়ি ও এলাকা ছাড়া করছে। মানবেতর জীবনে বাধ্য করছে, হাওরে-ধানক্ষেতে-রাজপথে। এই আক্রোশ, এই আক্রমণ, এই অত্যাচার - যেন বিএনপির গণসম্পৃক্ততার কাছে পরাজিত, গণঅভ্যুত্থানের ভয়ে শংকিত গণবিরোধী আওয়ামী লীগের ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার মরিয়া প্রয়াস। সময়ের সাথে, বিএনপির আন্দোলনের মাত্রা যত বেড়েছে, নজিরবিহীন গুম-খুন, হামলা-মামলার মাধ্যমে, সরকারের জিঘাংসা-নির্ধাতনের মাত্রা ততো বেড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, বিএনপির মতো একটি সফল গণতান্ত্রিক দলকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হয়েছে পাশবিক হাসিনা সরকার ও তার অধীনস্থ রাষ্ট্রযন্ত্রের চিহিত অংশ। কিন্তু, এভাবে কি একটি জনপ্রিয় গণতান্ত্রিক বিরোধী দলকে দমন করা সম্ভব? সম্ভব নয় বলেই, আওয়ামী লীগ চাচ্ছে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ছুড়ে ফেলে, ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, বাংলাদেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করে ধিকৃত বাকশাল ফিরিয়ে আনতে। বিএনপির প্রতি জনগণের সমর্থন, আর জনগণের দাবি আদায়ে বিএনপির সংকল্প - এই বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ অনুধাবন করে যে - একটি অবাধ, সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বচিন হলে - দেশের প্রায় সকল আসনে ধানের শীষের কাছে নৌকার অবশ্যম্ভাবী পরাজয়ের পাশাপাশি, এমনকি গোপালগঞ্জে খোদ শেখ হাসিনাও হেরে যেতে পারে। বিএনপির নিরঙ্কুশ জনভিত্তির বিপরীতে আওয়ামী লীগের এই রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব, শেখ হাসিনাকে আরও বেশি জনবিদ্বেষী করে তুলেছে, বাড়িয়েছে রাষ্ট্রযন্ত্রের উপর নির্ভরশীলতা। আর তাই, জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপির ষে শান্তিপূর্ণ সংগ্রাম, সেটিকে প্রতিহত করতে হাসিনার আস্থা নেই নিজ দলের উপর, ভরসা নেই নিজ নেতা- কর্মীদের উপর। আওয়ামী লীগের ভঙ্গুর সাংগঠনিক কাঠামো নয়, শেখ হাসিনার খুঁটি ও ফ্যাসিবাদের ভিত্তি রাষ্ট্রযান্ত্রের একটি সুবিধাভোগী অংশ। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, প্রশাসন ও আদালতের কতিপয় সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক বিবেচনায় পদোন্নতি ও সুযোগ-সুবিধা পেয়ে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারে পরিণত হয়েছেন। তাঁরাই আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠনে পরিণত করেছেন বিচার বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, দুদকসহ সাংবিধানিক ও বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানসমূহকে। ষড়যন্ত্রমুলকভাবে লিপ্ত রয়েছেন, বিএনপির লক্ষ-লক্ষ নেতা-কর্মীকে বন্দুকের গুলিতে, গ্রেনেড মেরে, মিথ্যা মামলায় দমিত করার অপচেষ্টায়। গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার নিজ অতিত্ব রক্ষার স্বার্থে - অবৈধ অর্থনৈতিক ও ভুরাজনৈতিক সুবিধা দিয়ে - আদায় করেছে ভারত, চীন ও রাশিয়ার সমর্থন। বিশেষত নতজানু পররাষ্ট্রনীতি, অসম দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, নামমাত্র মূল্যে ট্রানজিট সুবিধা, পানি সমস্যার সমাধানহীনতা, গোপন আদানি চুক্তিসহ, জাতীয় স্বার্থবিরোধী অজ¯্র প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং অভ্যন্তরীন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও আন্তর্জাতিক লবিং, যার প্রমাণস্বরূপ শেখ হাসিনা নিজেই বলেছিল, “ভারতকে যা দিয়েছি সারা জীবন মনে রাখবে” এবং ওবায়দুল কাদের দাবি করে, “৭ জানুয়ারির নির্বাচনের সময় ভারতই আওয়ামী লীগের পাশে দাঁড়িয়েছিল। শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ, আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাস, রাষ্ট্রযন্ত্রের একাংশের ধ্বংসযজ্ঞ এবং বিতর্কিত দেশসমূহের হস্তক্ষেপ Ñ এই সমন্বিত অপশক্তিকে উপেক্ষা করে, জনগণের সমর্থনকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার উৎস হিসেবে ধারণ করে - গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় অবিচল রয়েছে বিএনপি।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দানকারী দল হিসেবে, গণতন্ত্রকামী শক্তিসমূহকে সাথে নিয়ে, চলমান আন্দোলনকে চূড়ান্ত বিজয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বিএনপির অদম্য-দুঃসাহসী নেতা-কর্মীরা। তবে, গণতন্ত্রের পক্ষে-বিপক্ষের এই লড়াই, আজ কেবল আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির লড়াই নয়।বরং আজকের এই লড়াই, জনবিদ্বেষী সরকারের সকল দোসরের সঙ্গে বাংলাদেশের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষের লড়াই। এটি স্পষ্ট প্রতীয়মান, আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস ও ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগী যেসব দেশী-বিদেশী দোসর, তারা সক্রিয়ভাবে গণমানুষের অধিকার ও স্বাধীনতা খর্ব করে যাচ্ছে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মাধ্যমে। অন্যদিকে বিএনপির ক্ষমতার উৎস ও রাজনীতির সঞ্জীবনীশক্তি দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ। এই দেশটি যেমন আমাদের সবার, তেমনি আওয়ামী লীগের কবল থেকে দেশকে স্বাধীন করবার দায়িত্বও আমাদের সবার। সমাজের সকল বিবেকবান মানুষ যদি স্ব স্ব অবস্থান থেকে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন এবং সামর্থ অনুযায়ী ভূমিকা রাখেন, তবে ফ্যাসিবাদের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বাংলাদেশে যতবার গণতন্ত্র হরণ করা হয়েছে, ততবার লুণ্ঠিত সেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে বিএনপি। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে, আমাদের সংগ্রাম ছিল নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ। এর কারণ, আওয়ামী লীগের মতো সহিংস বা অগ্নিসন্ত্রাসের রাজনীতি নয়, জনমত গঠন ও গণজোয়ার সৃষ্টিই বিএনপি’র রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য। দেশের প্রায় সকল গণতন্ত্রকামী মানুষ দ্বারা সমর্থিত, উদার ও সহনশীল রাজনৈতিক ঐতিহ্যের ধারক দল হিসেবে, বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি বিস্তৃত সমাজের প্রতিটি স্তরে ও রাষ্ট্রের প্রতিটি কাঠামোতে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান অস্বাভাবিক অচলাবস্থা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে তার অনিবার্ধ পরিণতি ও সম্পূর্ণ দায় আওয়ামী লীগকেই বহন করতে হবে। গণতান্ত্রিক অধিকারকে রুদ্ধ করার এই অশুভ প্রক্রিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কুটনৈতিক সংকটকে ঘনীভূত করে তুলবে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রমাণ করে, এই দলটি কখনোই নিয়মতান্ত্রিকভাবে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রপরিচালনা করেনি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের আগ পর্যন্ত, আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতার স্বাদ পায়নি। আওয়ামী লীগ তার ছয় দফা আন্দোলনের জন্য ক্ষমতায় আসীন হয়নি বা দেশ স্বাধীনও করতে পারেনি। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল জিয়াউর রহমানের ডাকে, স্বাধীনতার ঘোষণায়, উদ্দীপ্ত দেশপ্রেমিক স্বশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, বিডিআর, আনসার এবং ছাত্র-জনতার সাহসী লড়াইয়ের মাধ্যমে। লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত হয়েছিল প্রিয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালে ২৫ শে মার্চ মধ্যরাতে পাক হানাদার বাহিনীর আক্রমণের আগে আওয়ামী লীগ দেশের জনগণকে স্বাধীনতা যুদ্ধের কোন রূপরেখা কিম্বা মুক্তিযুদ্ধের কর্মকৌশল দিয়ে যায়নি। একজন সাধারণ সৈনিক হয়েও, রাষ্ট্রদোহিতার ঝুঁকি নিয়ে, শহীদ জিয়া যদি ২৬ মার্চ গণআকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা না দিতেন, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা পেতে হয়তো আরও অনেক সময় লাগতো!
আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধকে দলীয় সম্পত্তি বা হাসিনার পারিবারিক সম্পদ বানানোর ঘত অপচেষ্টাই করুক, বাস্তবতা হলো, তৎকালীন দিক-নির্দেশনাহীন জাতিকে, নেতৃত্বের স্পৃহা যোগায় প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা। যেখানে ব্যর্থ হয়েছিল আওয়ামী লীগের রাজনীতি, সেখানেই প্রস্ফুটিত হয়েছিল একজন সৈনিক হিসেবে দেশ, দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি শহীদ জিয়ার ভালোবাসা। রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে, তাঁর স্বাধীনতার ঘোষণাতেই প্রতিধ্বনিত হয়েছিল, গণমানুষের মুক্তির আকাঙ্খা, মুক্তিযোদ্ধারা ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিলেন যুদ্ধে, স্বাধীন করেছিলেন দেশ। স্বাধীন বাংলাদেশে জিয়াউর রহমান ফিরে যান ব্যারাকে, নিজ সামরিক দায়িত্বে। জিয়ার ডাকে, জনগণের অংশগ্রহণে যে মুক্তিযুদ্ধ, তার বিজয়ের সুফল হিসেবে, রাজনৈতিক নেতৃত্ব গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু তাদের শাসনামল ছিল দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অপশাসন ও অব্যবস্থাপনার নিকৃষ্ট উদাহরণ।
রাষ্ট্রপরিচালনায় আওয়ামী লীগ সরকারের যে ব্যর্থতা, তার খেসারত দিতে হয়েছিল পুরো বাংলাদেশি জাতিকে দূর্ভিক্ষে অকাতরে প্রাণ দিয়ে। যে সরকারের আমলে ১৫ লক্ষ লোক না খেয়ে দুর্ভিক্ষে মারা যায়, তার চাইতে অথর্ব-অযোগ্য-ব্যর্থ প্রশাসন, আর কি হতে পারে? শেখ হাসিনা বাকশালের মতো করেই বাংলাদেশে আবারও ৭৫ এর মত একদলীয় শাসন কায়েম করতে চাচ্ছে। হাসিনার একমাত্র সাফল্য, মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত রেখে পৃষ্ঠপোষকতা করছে লাগামহীন নৈরাজ্য ও লুটপাটে, চালাচ্ছে মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি। বিভিন্ন দেশের রাস্তা নির্মাণের ব্যয় তুলনা করে বিশ্বব্যাংক দেখিয়েছে, বাংলাদেশে প্রতি কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করতে খরচ পড়ে ১১ মিলিয়ন ডলার - যা কিনা বিশে^ সর্বোচ্চ! শুধু রাস্তই নয়, প্রতিটি খাতের প্রতিটি খরচেই হাসিনা সরকারের অস্বাভাবিক লুটপাটে বাংলাদেশ আজ দেউলিয়া হওয়ার পথে।
প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,
গণমাধ্যমে আমরা দেখেছি, ৩৬ হাজার কোটি টাকার মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নাকি পৃথিবীর সবচেয়ে খরচবহুল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র! পায়রাতে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার কোটি টাকার যে সমুদ্রবন্দর হচ্ছে, এটি এযাবৎকালে সর্বোচ্চ খরচবহুল সমুদ্রবন্দর। রূপপুরের ১ লক্ষ ১৪ হাজার কোটি টাকায় যে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, এটিও পৃথিবীর সর্বোচ্চ খরচের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র! একইভাবে, সাড়ে ৩৩ হাজার কোটি টাকার ষে মেট্রোরেল প্রজেক্ট, প্রতি কিলোমিটার হিসেবে, সেটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যাবহুল। শুধু তাই না, প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার বিমানবন্দর-গাজীপুর র্যাপিড বাস ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পটি পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিআরটি লাইন! শেখ হাসিনা সরকারের ব্যর্থতায়, বাংলাদেশের এমন দুর্বিষহ অবস্থা যে- রাস্তা, ব্রিজ, রেল, বন্দর, বিদ্যুৎকেন্দ্র - যখন যেটি বানানো হচ্ছে -সেটিই দুনিয়ার সর্বোচ্চ খরচের প্রকল্প হয়ে যায়! এই যে মেগা প্রজেক্টের নামে লক্ষ-লক্ষ কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে - গেøাবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির তথ্যমতে, বাংলাদেশ থেকে গত ১৫ বছরে ১৩ লক্ষ কোটি টাকার বেশি বিদেশে পাচার হয়েছে - বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে সরকারি যোগসাজশে ৮১ মিলিয়ন ডলার ডলার চুরি হয়েছে - এগুলো কার টাকা?
এই পুরো টাকা বাংলাদেশের জনগণের। জনগণের টাকা আত্বসাৎ করে, ইউরোপ-আমেরিকা-কানাডায় বেগমপাড়া গড়ে তুলেছে মাফিয়া চক্র। শুধু চলতি অর্থবছরে, সর্বক্ষেত্রে লাগামহীন ট্যাক্সের বোঝা চাপিয়ে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে ৫ লক্ষ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যে জনগণের কাঁধে চেপে বসেছে জনবিদ্বেষী মাফিয়া চক্র। অর্থাৎ, দেশের মানুষের রক্ত শুঁষে, তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমের উপার্জন থেকে এক বছরেই ৫ লক্ষ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে এর একটি বিশাল অংশ বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে আওয়ামী অপশক্তি। ব্যর্থ সরকার বাড়িয়ে চলছে বৈদেশিক খণের বোঝা, যা ইতিমধ্যে ছাড়িয়ে গিয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলার। বিদেশিদের কাছে খণের এই যে ১০ লক্ষ কোটি টাকা, তার সম্পূর্ণ দায়ভার বহন করতে হবে বাংলাদেশের জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে, আওয়ামী লীগকে নয়। এভাবেই জনগণের টাকা লুটে, দেশের নামে লোন নিয়ে উন্নয়নের নামে অর্থনীতিকে ধ্বংস করে, হাজার-হাজার কোটি টাকা কামাচ্ছে একেকজন আওয়ামী লীগ নেতা। ফরিদপুরের এক স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা দলীয় আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে, বিদেশে পাচার করেছে ২ হাজার কোটি টাকা। সরকারের নজিরবিহীন ব্যর্থতার মাঝে, অফিসিয়াল হিসেবে, ব্যাংকিং সেক্টরের খেলাপি খণের পরিমাণ ১ লক্ষ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা বাস্তবে অনেক বেশি। পুনঃতফসিল করা ঋণের স্থিতি তার থেকেও ভয়াবহ, প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এমন ঢালাও দুর্নীতি ও সমন্বয়হীনতায় যে তীব্র তারল্যের সংকট সৃষ্টি হয়েছে, এতে ব্যাংকগুলোতে শুধু ডলার নয়, বর্তমানে নেই টাকাও! বাজার ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতায় ও আওয়ামী সিন্ডিকেটের কারণে, প্রতিটি দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে, নাভিশ্বাস উঠছে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের। আয় না বাড়লেও, লাগামহীনভাবে বাড়ছে ব্যয়, বেড়ে চলেছে প্রতিটি পণ্যের দাম। একের পর এক রেকর্ড গড়ে, কখনো চালের দাম কেজি প্রতি ৭০ টাকা, মসুর ডাল ১৫০ টাকা; কখনো কাঁচা মরিচের কেজি ১০০০ টাকা, পেঁয়াজ ৩০০ টাকা; কখনো আদা প্রতি কেজি ৫০০ টাকা, এলাচ ৬,০০০ টাকা; আবার কখনো গরুর মাংস প্রতি কেজি ৯০০ টাকা, খাসির মাংস ১৩০০ টাকা। বাধ্য হয়ে অন্তত ঘ্রান পেতে, মানুষ লাইন ধরে মাছের বদলে পাঙ্গাশ মাছের কাঁটা কিনছে। এদিকে সরকারি হিসেবেই, বাংলাদেশের প্রায় ৪১ শতাংশ তরুণ, অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ২৯ লক্ষ তরুণ, নিষ্ক্রীয় ও বেকার, যদিও প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি। বাস্তবতাবিবর্জিত, বিতর্কিত ও ব্যর্থ শিক্ষা ব্যবস্থা বাড়িয়ে চলছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা, আর বিদেশিরা এসে দখল করছে চাকরির বাজার। দেশের স্বাস্থ্যখাত নিজেই এতো অসুস্থ যে, এর ভয়াবহ অব্যবস্থাপনায়, হাসপাতালের বেহাল দশায় ও জীর্ণ মেডিকেল যন্ত্রপাতির কারণে, সর্বজনীন আস্থাহীনতা বিরাজমান। ফলে জীবন বাঁচাতে, সুচিকিৎসা পেতে, বছরে ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ চিকিৎসার জন্য বাধ্য হয়ে বিদেশ যাচ্ছে। ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের যে বহুমাত্রিক ব্যর্থতা, তার প্রমাণ পাওয়া যায়, উন্নয়নের মহাসড়কে পথভ্রষ্ট রাজধানী ঢাকার দিকে তাকালেই। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জরিপে, বিশ্বের সকল শহরের মাঝে ঢাকার স্থান - সবচেয়ে দূষিত শহর, সবচেয়ে ধীরগতির শহর, যানজটের শীর্ষ শহর, দ্বিতীয় বসবাস অযোগ্য শহর, এবং দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর - ইত্যাদি পরিচয়ে স্বীকৃত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ শেখ হাসিনার অপশাসন থেকে, মুক্তি চায় বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ। জনগণের প্রত্যাশা, বিএনপির আন্দোলনের মাধ্যমে জনবিদ্বেষী ফ্যাসবাদের পতন ঘটবে, এবং দেশে আবারও সুশাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে। শহীদ জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে শুরু করে, ইতিহাসের সকল পালাবদলে এটি প্রমাণিত, বিএনপির ক্ষমতার উৎস জনগণ। বিএনপির শক্তি এই দেশের মানুষ। জনগণেরও বিশ্বাস, বিএনপি আবারও দেশকে মুক্ত করবে, দেশের মানুষকে গণতন্ত্র ও মুক্তি এনে দিবে। জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে, জনসমর্থনের প্রেরণায় - এবং রাজপথে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে - বিএনপির নেতৃত্বে বাংলাদেশে শীঘ্রই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে, ইনশাআল্লাহ। ১২ কোটি ভোটারের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিশ্চিত করে, শান্তিপূর্ণ ও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন মাধ্যমে, বিএনপি আবারও স্থাপন করবে একটি নির্বাচিত ও জবাবদিহিতামূলক সরকার!