আগ্রায় কথিত ৩২ বাংলাদেশি আটক
ইন্ডিয়া টুডের খবর
প্রথম নিউজ, ডেস্ক: অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে কথিত ৩২ বাংলাদেশিকে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করেছে ভারতের আগ্রা পুলিশ। জি২০ উপলক্ষ্যে অতিথিরা সেখানে যাবেন। এ জন্য তিনদিন আগেই এই গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হয়। এ খবর দিয়ে অনলাইন ইন্ডিয়া টুডে বলেছে, জি২০-এর অতিথিদের স্বাগত জানাতে আগ্রাকে সাজাতে পুরোদমে ব্যস্ত জেলা প্রশাসন ও পুলিশ। ১০ই ফেব্রুয়ারি অতিথিরা সেখানে যাবেন এবং অবস্থান করবেন ১২ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। একই ঘটনাকে সামনে রেখে ইন্টেলিজেন্স ডিপার্টমেন্টও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর ফলে তারা মঙ্গলবার সন্দেহজনক ৩২ কথিত বাংলাদেশিকে অবৈধভাবে প্রবেশের জন্য গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে ১৫ জন পুরুষ এবং ১৩ জন নারী। তাদের সঙ্গে আছে ৪টি শিশু। প্রাপ্ত বয়স্কদের পাঠানো হয়েছে জেলে।
শিশুদের রাখা হয়েছে কিশোর সংশোধনী প্রতিষ্ঠানে। বলা হয়েছে, ওইসব কথিত বাংলাদেশি আগ্রার আবাসবিকাশ কলোনির ৪ নম্বর সেক্টরে বেশ কিছু সেটেলমেন্ট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৩৫টি আধার কার্ড এবং একটি প্যান কার্ড। ভুয়া ডকুমেন্ট, প্রতারণা এবং ফরেনার্স অ্যাক্টের অধীনে তাদের সবার বিরুদ্ধে পুলিশ স্টেশন সিকানদ্রাতে মামলা করা হয়েছে।
আগ্রার ডিসিপি বিকাশ কুমার ইন্ডিয়া টুডে টিভিকে বলেছেন, এসব বাংলাদেশির বিষয়ে তথ্য পায় ইন্টেলিজেন্স বিভাগ। এ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তারা ওই এলাকা ঘেরাও করেন। সেখান থেকে বেআইনিভাবে বসবাসের অভিযোগে ৩২ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এর মধ্যে একজন হলেন হালিম নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেছেন, ১২ বছর ধরে আগ্রায় বসবাস করছেন। পশ্চিমবঙ্গ হয়ে এক এজেন্টের মাধ্যমে কয়েকজন সঙ্গীসহ ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। বাকিরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন স্থানে বসবাস করছেন। দালালের মাধ্যমে তিনি প্রস্তুতকৃত আইডি কার্ড পেয়েছেন। তারা বেশির ভাগই ফেলে দেয়া জিনিসপত্র কুড়িয়ে বেড়ান এবং তা বিক্রি করে হাওলার মাধ্যমে অর্থ পাঠান দেশে।
তথ্যমতে, বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তের মধ্যবর্তী গ্রামের ভিতর দিয়ে একটি নদী আছে। ওইসব গ্রামের দালালরা প্রতিজন মানুষকে নদী পাড় করে ভারতে প্রবেশ করিয়ে দেয়ার জন্য ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার রুপি পর্যন্ত নিয়ে থাকে। তারা গ্রামের পথ ধরে পৌঁছে যায় শিয়ালদা এবং হাওড়া। তারপর ট্রেনে চেপে চলে যান চেন্নাই, দিল্লি, আগ্রাসহ বিভিন্ন স্থানে। শুরু করেন ফেলে দেয়া জিনিসপত্রের ব্যবসা। হালিম বলেছেন, একটি আধার কার্ড, প্যান কার্ড এবং ভুয়া ডকুমেন্ট বানিয়ে নিতে খরচ করেছেন প্রায় এক হাজার রুপি। অনেকে আবার এলআইসি পলিসি করিয়ে নেন। এমন অনেক এজেন্ট সক্রিয় আছে আগ্রায়।
ডিসিপি বিকাশ কুমার বলেছেন, জব্দ করা ডকুমেন্ট যাচাই করে দেখা হচ্ছে। যাদেরকেই এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগ্রা থেকে আরও বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। আগ্রায় কমপক্ষে ২০০ বাংলাদেশির অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পেয়েছে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো। সমাজকর্মী বিজয় উপাধ্যায় বলেছেন, সিকান্দ্রা এলাকায় এমন ঘটনা এটাই প্রথম নয়। ২০১৯ সালে রুনাতকাতে বাংলাদেশিরা প্রবেশ করে পুরো একটি ফাঁকা প্লটে বসতি নির্মাণ করেন। পুলিশ তখন সাঈদুল হাসান গাজী নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে। সেখানে তিনি একটি বড় বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন। কিনেছিলেন একটি গাড়ি ও প্লট। ২০১৭ সালে ইতমাদুদাউলা এলাকা থেকে ফাতিমা নামে এক বাংলাদেশি নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সবজি বিক্রির আড়ালে তিনি নকল মুদ্রা বিতরণ করতেন।