অর্থমন্ত্রী একজন বোবা মানুষ, কথাই বলেন না- সংসদে চুন্নু
সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রথম নিউজ, অনলাইন: জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু অর্থ পাচারের বিষয়ে বলেছেন, এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীকে বার বার বলা হয়েছে ব্যবস্থা নিতে। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী একজন বোবা মানুষ। তিনি কথাই বলেন না। সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, যে দেশের অর্থমন্ত্রী কথা বলেন না, অর্থনীতি সম্পর্কে পার্লামেন্টে ব্রিফিং করেন না, সাংবাদিকদের কিছু জানান না সবশেষ অবস্থা সম্পর্কে। সেই দেশ কীভাবে চলবে আমি জানি না।
আমার প্রশ্ন হলো যার সম্পর্কে অভিযোগ এসেছে এক বিলিয়ন ডলারের, এটি সত্য কি না আমরা জানি না। যদি সত্য হয় তাহলে এটা অবশ্যই আমি মনে করি দেশদ্রোহিতার শামিল। এটা নিয়ে হাইকোর্ট থেকে একটি রিটও করা হয়েছে। সেখানে হাইকোর্ট অ্যান্টি করাপশন ডিপার্টমেন্টকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেটি না কি আবার আপিল বিভাগে গিয়ে স্থগিত আছে।
তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালোভাবে চলছে না। ডলারের সংকট, আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য করতে গিয়ে সরকার ইম্পোর্ট (আমদানি) নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের রিজার্ভের সমস্যা। রেমিট্যান্স কমে এসেছে। পত্রিকায় দেখি টাকা পাচার হচ্ছে। কয়েকদিন আগে ডেইলি স্টারসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দেখলাম এ অবস্থার মধ্যে একজন ব্যক্তির নাম এসেছে, যিনি বাংলাদেশের একজন বড় ব্যবসায়ী, কয়েকটি ব্যাংকের মালিক। তার সম্পর্কে এসেছে তিনি অন্য একটি দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে সিঙ্গাপুরে মার্কেট করেছেন এবং হোটেল কিনেছেন এক বিলিয়ন ডলার দিয়ে।
এই যে এতবড় একটি ঘটনার অনেক তথ্য প্রমাণসহ আমরা পড়েছি। এমন অনেক তথ্য দিয়েছে যেগুলো অবিশ্বাস করাও সমস্যা। আমি মনে করি বিষয়টি খুবই গুরুতর রাষ্ট্রের জন্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি অর্থমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন যে বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত করে দেখার জন্য, যে আসলেই কোনো বাংলাদেশি মানুষ কেউ এরকম এক বিলিয়ন ডলার সেখানে ইনভেস্ট করেছেন কি না। করলে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে তিনি কীভাবে এই টাকাটা পেলেন, কোন সোর্স থেকে আনলেন। বাংলাদেশ থেকে না নিলে কীভাবে এলো? সেটা সরকার তদন্ত করে দেখতে পারে।
চুন্নু বলেন, একজন কৃষক যে লোন নেয় এক লাখ টাকা বা দুই লাখ টাকা, লোন না পরিশোধ করলে তার নামে ওয়ারেন্ট হয়। একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লোন নিয়ে শোধ না করলে ওয়ারেন্ট হয়। একজন কৃষক যদি ঋণ দিতে না পারে তার সুদটা মাফ চায় ব্যাংকে আমরা সুপারিশ করি তারা মাফ করে না। কিন্তু একটা নাসা গ্রুপের ঋণের ২৫২ কোটি টাকা সুদ মাফ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের চারটি রিজন আছে সুদ মওকুফ করার। এই চারটি রিজনের কোনোটির মধ্যেই এটি পড়ে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের অবজারভার আপত্তি দিয়েছেন এই সুদ মাফ করা যাবে না, তারপরও ২৫২ কোটি টাকা সুদ মাফ করা হলো একজন ব্যক্তি ইন্ডাস্ট্রির লোনের। যেখানে গরীবের একটা লোন নেওয়ার পর সুদ মাফ করা হয় না। জাপা মহাসচিব এসব বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বিবৃতি দাবি করেন।