অবরোধের নামে চোরাগোপ্তা হামলাকারীদের ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান
প্রথম নিউজ, ঢাকা : স্বাভাবিক নয় অস্বাভাবিক পন্থায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। জনবিরোধী অবরোধকারীদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
তিনি বলেন, চলমান অবরোধ কর্মসূচি সংবিধান ও জনবিরোধী। জনগণের যান চলাচল বিঘ্নিত করা দেশের প্রচলিত আইন বিরোধী। যারা রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে অবরোধে জড়িয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
গত ২৮ অক্টোবরে হামলা নাশকতা, সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরসহ পুলিশ হত্যায় জড়িত কতজনকে পুলিশ শনাক্ত করেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, পুলিশের ওপর হামলা, যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, জড়িতরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। যেখানেই পালিয়ে যাক, যেভাবেই আত্মগোপন করুক না কেন, কোনোভাবেই তারা ছাড় পাবে না। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করবেই। এজন্য পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ, ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করছে। ইতোমধ্যে আমরা অনেককে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও আসামি গ্রেপ্তার করা হবে।
২৮ অক্টোবরের পর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে। সেই অবরোধ কর্মসূচির কারণে নাশকতা হচ্ছে, বাস জ্বলছে। ভীতি ছড়িয়েছে। গণপরিবহন চলাচল সীমিত হয়েছে। দূরপাল্লার বাস চলছে না। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবরোধ কর্মসূচির নামে যা চলছে তা জনবিরোধী। জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচল বিরোধী। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যারা অবরোধে জড়িয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা স্বাভাবিক নয়, অস্বাভাবিক পথে অবরোধ করছে, চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে। জনগণের জানমালের ক্ষতি করছে তাদের সম্পর্কে তথ্য দিন, ধরিয়ে দিন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বিএনপি মহাসমাবেশের নামে ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ, পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা এবং পুলিশ সদস্যকে হত্যার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয়ে একজন বাংলাদেশি হাজির হন একটি রাজনৈতিক দলের অফিসে। তিনি মিডিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। যা দেশের প্রচলিত আইন বিরোধী। প্রচলিত আইনে তাকে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। তার সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তাদের একজনকে আমরা ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছি। আরও যারা জড়িত ছিলেন তাদের আমরা গ্রেপ্তার করব। সেই চেষ্টা চলছে।
২৮ অক্টোবরের ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে পুলিশ প্রথম উসকে দিয়েছে। পুলিশ শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ উপায়ে মহাসমাবেশ আয়োজনে ধৈর্যের পরিচয় দিতে পারত কি না বা যা ঘটেছে তা এড়াতে পারত কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। মিডিয়ার মাধ্যমে সারাদেশের মানুষ সেদিনকার ঘটনা দেখেছে। পুলিশ নয় তারাই একের পর এক উসকানি দিয়েছে। পুলিশ শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেছে তাদের নিরস্ত্র করতে। দলটির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও পুলিশ কথা বলেছে, যারা বিশৃঙ্খলা করেছে তাদের সামলান না হলে আপনাদেরই মহাসমাবেশ কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হবে। একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও তারা কিছু করেননি। পরবর্তীতে হামলা ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ, পুলিশের ওপর আক্রমণ, পুলিশ সদস্য হত্যাসহ যে ধ্বংসযজ্ঞ তারা চালিয়েছে, বিশৃঙ্খলা করেছে; এটাই প্রমাণ করে যা যা ঘটেছে তাতে তাদের সায় ছিল, তাদের নির্দেশক্রমেই ঘটনাগুলো ঘটেছে।