সরকার গণতন্ত্রের কোনো মানদন্ড মানেনা: রিজভী
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: বর্তমান সরকার সকল গুণী ব্যক্তিকে আক্রমণ করছে জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এই সরকার গণতন্ত্রের কোনো মানদন্ড মানেনা। মানুষ মরলো নাকি বাঁচলো সেদিকে তাদের নজর নেই। তাদের মূল লক্ষ্য সোনার হরিণ নামক ক্ষমতা দখলে রাখা।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও ভাষা সৈনিক মরহুম শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন এর ১ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহিরুল হক শাহাজাদা মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হক, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন প্রমুখ। সবশেষে মরহুম শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া পরিচালনা করেন ওলামা দলের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন আমাদের কীর্তিমান মানুষদের একজন। কিন্তু আমরা তাদের মনে রাখিনা। অথচ এসব মানুষ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি আমাদের অনুপ্রেরণা। ছাত্র আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাণ পুরুষ। তাকে আমাদের বেশি বেশি মনে করতে হবে। এইভাবে মওদুদ আহমদ, সালাম তালুকদার, কেএম ওবায়দুর রহমান তাদেরও মনে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সব গুনী মানুষকে আক্রমণ করছে। ব্যারিস্টার রফিক উল হক কে আক্রমণ করেছিলেন। এখন ড. ইউনূসকে আক্রমণ করছেন। তিনি দেশের ছেলে নোবেল পুরস্কার পেয়ে দেশের সম্মান বয়ে এনেছেন। কিন্তু শেখ হাসিনার মনে কোথায় যেন ঈর্ষা কাজ করছে। আজকে এই সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘণ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস হয়। এটা তো প্রধানমন্ত্রী ও আবদুর রাজ্জাকদেরকে জবাব দিতে হবে। আমাদের ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম কোথায়?
রিজভী বলেন, আজকে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকার খুন করলে সেটা ঠিক। কেউ তার বিরুদ্ধে বললেই হয়ে গেলো মানবাধিকার লঙ্ঘণ। সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা কেউ বললে তার বিরুদ্ধে শুরু হয় নির্যাতন নিপীড়ন। আজকে আদিলুর রহমান খান শুভ্র একজন ভদ্র লোক ও আইনজীবী। তিনি এই সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন বিধায় তাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে একটা জরিপ করতেন। তিনি সাধারণ মানুষের মাঝে জরিপ করে দেখতেন যে, তিনি বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও আদিলুর রহমান খানকে যে সাজা দিয়েছেন তা জনগণ সমর্থন করে কি না? আসলে শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের কোনো মানদন্ড মানেন না। তার মানে হলো-তোরা যে যাই বলিস ভাই আমার সোনার হরিণ চাই (ক্ষমতা)।
সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের দিয়ে দাস শ্রমিক তৈরি করছেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা চিকিৎসা পায় না। অনেকেই কারাগারে মারা গেছেন। এবার তার টার্গেট উপরের দিকে। মূলত তিনি নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে চান। কিন্তু এবার গণতন্ত্রকামী সাধারণ মানুষ জেগে উঠেছে তারা রাস্তায় নেমেছে। সকল পেটোয়াকে রুখে দিবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজকে নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারণ করেছে। কই তারা তো একজন সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি। আসলে এরা ক্ষুধার সরকার। দুর্ভিক্ষের সরকার। মানুষ মরলো নাকি বাঁচলো সেদিকে তাদের দৃষ্টি নেই। এই সরকার নীল নকশা করে ক্ষমতায় আছেন। যে কারণে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে এখনও কারান্তরীণ রাখা হয়েছে।