সন্ধান চেয়ে সংবাদ সম্মেলনের আগে নিখোঁজের বাবা-ভাইকে নিয়ে গেল ডিবি
মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৩টার দিকে মাসরুর বাবা ও ভাই সেগুনবাগিচার ডিআরইউতে সংবাদ সম্মেলন করতে যান।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: ড্যাফোডিল ইন্সটিটিউট অব আইটির (ডিআইআইটি) নিখোঁজ শিক্ষার্থী মাসরুরের সন্ধান চাইতে ডাকা সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে তার বাবা ও ভাইকে তুলে নিয়ে গেছে গোয়েন্দা পুলিশ। মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৩টার দিকে মাসরুর বাবা ও ভাই সেগুনবাগিচার ডিআরইউতে সংবাদ সম্মেলন করতে যান। এসময় তাদের সঙ্গে কথা বলার কথা বলে সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। বিকাল ৩টায় ডিআরইউয়ের সাগর-রুনি মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাসরুরের বড় ভাই মেহেদী হাসান ও তার বাবা আবুল হাসেম রিকশাযোগে ডিআরইউতে আসেন। ডিআরইউয়ের সামনে নামা মাত্র কয়েকজন ডিবি পুলিশ সদস্য তাদের ধরে গলিতে নিয়ে যান। এরপর সাদা মাইক্রোবাসে তুলে সেগুনবাগিচা এলাকা ত্যাগ করেন।
এই দুইজনকে কেনো নেয়া হয়েছে এ বিষয়ে ডিবির পক্ষ থেকে স্পষ্ট কিছু বলা হয়নি। মাসরুরের পরিবারের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা একটি লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, গত ২৫ জুলাই ডেমরা বড়ভাঙ্গায় ফজর নামাজের পর নিকটাত্মীয়ের বাসার নিচ থেকে অজ্ঞাত কিছু ব্যক্তি ডিবি পরিচয়ে কালো কাপড়ে চোখ বেঁধে মাসরুরকে নিয়ে যায়। পরে পুলিশের কিছু সদস্য আত্মীয়ের (মাসরুরের মামা) বাসায় অভিযান পরিচালনা করেন। মাসরুরকে কেন তারা বাসায় আশ্রয় দিয়েছেন এই অভিযোগে মামা, মামার দুই শিশু-কিশোর সন্তান এবং ভাতিজাকে ব্যাপক মারধর করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডেমরা থানায় নিয়ে যান তারা।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, মাসরুরকে তারা পাননি, যদি তাকে হাজির না করা হয় তাহলে নাকি আটকদের লাশ বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হবে। এরপর মাসরুরের মামা, তার সন্তান এবং ভাতিজাকে সিএমএম আদালতে প্রেরণ করা হয়। সেখান থেকে সাজানো মামলায় তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয় যে, মাসরুরের কোন খোঁজ থানায় পাওয়া যায় না।
পাঁচদিন যাবৎ তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি। আশপাশের সব থানায় যোগাযোগ করেও তার ব্যাপারে কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। সে কোথায় কী অবস্থায় আছে, পরিবারের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, প্রশাসনের একটি অসমর্থিত সূত্রের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, তাকে সম্ভবত ডিবি অফিসে কিংবা র্যাব কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে থাকতে পারে, যা আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারিনি। এমতাবস্থায় আমরা তার জীবন নিয়ে অত্যন্ত শঙ্কিত, আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে মাসরুরের সন্ধান দাবি করছি।
প্রশাসনের প্রতি বিনীত অনুরোধ, দয়া করে আমাদের মাসরুরকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিন। পাশাপাশি মাসরুরের মামা ও তার পরিবারের সদস্যদের জামিনে মুক্তি এবং আরোপিত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।