লিফট কিনতে তুরস্কে যাচ্ছেন পাবিপ্রবির ৬ কর্মকর্তা
প্রকল্পের শিডিউল অনুযায়ী, শুরুতে ইউরোপিয়ান লিফট সংযোজনের কথা থাকলেও পরে তুরস্কের লিফট কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: লিফট কিনতে তুরস্কে যাচ্ছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল। বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন নতুন ভবনের জন্য লিফট কিনতে যাচ্ছেন তারা। প্রকল্পের শিডিউল অনুযায়ী, শুরুতে ইউরোপিয়ান লিফট সংযোজনের কথা থাকলেও পরে তুরস্কের লিফট কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) প্রকৌশলী লেফট্যানেন্ট কর্ণেল অব. জিএম আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দিন, বিশবিদ্যালয়ের প্রকৌশলী ফরিদ আহমেদ, উপ-প্রকৌশলী রিপন আলী, জিয়াউল আবেদীন ও প্রকল্প পরিচালক জিএম আজিজুর রহমান চলমান পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের বিভিন্ন স্থাপনার লিফট সংগ্রহের জন্য গঠিত প্রাক-জাহাজিকরণ পরিদর্শন দল তুরস্ক ভ্রমণ করবেন।
প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চিঠিতে ৯ মে থেকে ১৯ মে ভ্রমণের কথা উল্লেখ থাকলেও ৬ জুন ভ্রমণের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে আহ্বান করা টেন্ডার শিডিউলের মাধ্যমে লিফটগুলো কেনা হবে। এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, 'প্রকল্পের শর্ত অনুযায়ী উন্নয়ন প্রকল্পের প্রতিটি জিনিস যাচাই-বাছাই করে করা হচ্ছে। লিফট কেনার আগে তা চাহিদা অনুযায়ী হচ্ছে কিনা, সেটি যাচাই করে নেয়ার জন্য এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।'
কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলের কোনো অতিরিক্ত খরচ হবে না বলে দাবি করে তিনি বলেন, 'নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান (ঠিকাদার) এ ব্যয়ভার বহন করবে। এজন্য প্রকল্পের কোনো অতিরিক্ত অর্থ খরচ হবে না এবং বিশ্ববিদ্যালয়েরও কোনো অর্থ খরচ হবে না। ঠিকাদার তার কাজের শর্ত অনুযায়ী এর ব্যবস্থা করবেন। ইউরপিয়ান লিফটের পরিবর্তে তুরস্কের লিফট কেনা প্রসঙ্গে আজিজুর রহমান বলেন, 'প্রকল্প গ্রহণের সময়ের চেয়ে বর্তমানে লিফটের দামের ফারাক রয়েছে। তবে শিডিউল অনুযায়ী নির্ধারিত স্পেসিফিকেশন নিশ্চিত করেই লিফট কেনা হবে।'
উল্লেখ্য, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮০ কোটি টাকার কাজ ২০২১ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই দফায় সময় বাড়িয়ে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কাজের ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রকল্প অফিস। এদিকে লিফট কেনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা চলছে। কেনাকাটার নামে বিদেশ ভ্রমণ সরকারি অর্থের অপচয় ছাড়া কিছু নয় বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পাবনা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শিবজিত নাগ বলেন, 'উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ মানেই জনগণের অর্থ। উন্নয়ন প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে উন্নয়ন প্রকল্পের সঠিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে হবে।' পাশাপাশি জনগণের অর্থের যাতে কোনোভাবে নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।