লুটেরা ও দুর্বৃত্তদের বাজেট আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়: মির্জা ফখরুল
আজ বৃহস্পতিবার জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকী উলপক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন

প্রথম নিউজ, ঢাকা: জাতীয় অর্থবছর ২০২২-২০২৩ এর অনুমোদিত বাজেটকে লুটেরা ও দুর্বৃত্তদের বাজেট বলে আখ্যা দিয়েছেন বিএনপি। তাই বাজেট তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘বাজেট আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। এ বাজেট লুটেরা ও দুর্বৃত্তদের বাজেট। বাজেট হচ্ছে লুটেরাদের যাতে আরও লুট করতে পারে, নিজের সম্পদ বাড়ানোর বাজেট।’
আজ বৃহস্পতিবার জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকী উলপক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বার অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এ দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করেছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই লুটেরা, দুর্বৃত্ত সরকারের বাজেট মানেই টাকা লুট। আরও টাকা লুট করা। তাই বাজেট নিয়ে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই।’
বাংলাদেশে নির্বাচনব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আদালতে ন্যায়বিচার পাননি। বিচারিক–সন্ত্রাসের কারণে তিনি আজ গৃহে অন্তরীণ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। দলীয় তদন্ত কর্মকর্তা দিয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। একটা মামলায় তারেক রহমান খালাস পেলেন। যে বিচারক খালাস দিলেন, তাঁকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এই বিচারব্যবস্থা নিয়ে আমরা কী করতে পারি?
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই যে নির্বাচনব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেল, সংবিধান শেষ হয়ে গেল, এর জন্য দায়ী কিন্তু বিচার বিভাগের বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। তাঁর কারণে জাতি আজ ধ্বংসের দিকে। যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়ে গেল, তখন বেগম খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, এই জাতিকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হলো। আজ সমস্ত মানুষ তাঁদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। আজ মানুষ তাঁদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারেন না।
পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘পদ্মা সেতু হয়েছে ভালো কথা। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা বলছেন, আমি, আমরা তৈরি করেছি। কেন করেছেন? কেন করতে হয়েছে? কারণ, আপনারা চুরি করতে গিয়েছিলেন। বিশ্বব্যাংক টাকা দেবে বলেছিল। কিন্তু সেই বিশ্বব্যাংক আপনাদের কাছ থেকে টাকা তুলে নিল কেন? ঘটনা তো সত্য। মন্ত্রীকে বরখাস্ত করতে হয়েছিল। এটাই বাস্তবতা। প্রতিটি উন্নয়নের ধারাবাহিকতা থাকে এবং এই পদ্মা সেতুর প্রথম ফিজিবিলিটি বেগম খালেদা জিয়া সরকারের আমলে শুরু হয়েছিল দাবি করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ২০০৫ সালে জাপান সফরকালে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পদ্মা সেতুর ফান্ডিংয়ের (অর্থায়ন) ব্যাপারে তিনি (খালেদা জিয়া) কথা বলেছিলেন। পদ্মা সেতুর ভূমি অধিগ্রহণও বেগম খালেদা জিয়া সরকারের আমলে হয়েছিল।
এখন কেউ কথা বলতে সাহস পায় না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রত্যেক মানুষ কথা বলতে ভয় পায়। একেই বলে সত্যিকারের ফ্যাসিজম। কিছুদিন আগেও অনেক শ্রদ্ধাভাজন মানুষ টক শোতে কথা বলতেন। পত্রিকায় লেখালেখি করতেন। এখন কিন্তু কেউ কথা বলছেন না। এখন জীবনের নিরাপত্তা নেই।
পাকিস্তান মিলিটারি শাসনের দেশ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, পাকিস্তানের বিচার বিভাগ কত শক্তিশালী, তাদের আইনজীবীরা শক্তিশালী। আর বিচার বিভাগ এতই শক্তিশালী যে তারা সরকার পরিবর্তন করে দিতে পারে। পুলিশ কর্মকর্তাকে মারধরের মামলায় আইনজীবীদের রিমান্ডে নেওয়া প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, একজন আইনজীবীকে যদি রিমান্ডে যেতে হয়, তাহলে আমরা কোথায় যাব? কোথায় বিচার পাব? এটা কীভাবে সম্ভব? আওয়ামী লীগ বিচারব্যবস্থাকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে, কোনো মানুষের বিচার পাওয়ার সুযোগ নেই।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যাস্টিার কায়সার কামাল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সহআইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ জয়নুল আবেদীন, ইকবাল হোসেন, আইনজীবী বোরহান উদ্দিন, আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী প্রমুখ।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews