মার্কিন দুই কংগ্রেসম্যান ঢাকায়, ৩ দলের সঙ্গে বৈঠক আজ

বাংলাদেশের নির্বাচনকে ঘিরে ওয়াশিংটনের সঙ্গে বিদ্যমান টানাপড়েনের মধ্যেই ঢাকায় এসেছে ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং রিপাবলিকান পার্টির সমন্বয়ে গড়া দুই সদস্যের মার্কিন কংগ্রেসনাল টিম।

মার্কিন দুই কংগ্রেসম্যান ঢাকায়, ৩ দলের সঙ্গে বৈঠক আজ

প্রথম নিউজ, অনলাইন: মার্কিন কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসেছে। আজ থেকে তাদের সফরের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে। দিনের শুরুতে বঙ্গবন্ধু মিউজিয়ামে জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যদিয়ে তাদের সফরের কর্মসূচি শুরু হবে। মধ্যাহ্নভোজ-বৈঠক হবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিদের সঙ্গে। বাংলাদেশের নির্বাচনকে ঘিরে ওয়াশিংটনের সঙ্গে বিদ্যমান টানাপড়েনের মধ্যেই ঢাকায় এসেছে ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং রিপাবলিকান পার্টির সমন্বয়ে গড়া দুই সদস্যের মার্কিন কংগ্রেসনাল টিম। তারা আজ সরকারের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সোমবার তাদের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে কক্সবাজার যাওয়ার কথা রয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, হাওয়াই থেকে নির্বাচিত ডেমোক্রেট পার্টির কংগ্রেস সদস্য এড কেইস এবং জর্জিয়া থেকে নির্বাচিত রিপাবলিকান পার্টির কংগ্রেস সদস্য রিচার্ড ম্যাকরমিক মোট চার দিন বাংলাদেশে থাকছেন। ঢাকা সফরের সময় মার্কিন কংগ্রেসের দুই সদস্য আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদাভাবে মতবিনিময় করবেন। তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এরইমধ্যে জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

সেই হিসেবে দুই কংগ্রেস সদস্য এখানে তাদের অর্থায়ন কীভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে তা দেখবেন। পাশাপাশি এখন যে আর্থিক সংকট চলছে, তার প্রেক্ষাপটে নতুন করে আর কী করার আছে সেটিও তারা দেখবেন। স্মরণ করা যায়, কয়েক বছর ধরে মানবাধিকার ও সুশাসন নিয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মতপার্থক্য চলছে। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাব এবং বাহিনীটির সাবেক ও বর্তমান সাত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়।

এ অবস্থার মধ্যে গত মে মাসে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতাকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার হুমকি সংবলিত স্বতন্ত্র ভিসা নীতি ঘোষণা করে পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি জে. ব্লিনকেন, যা নিয়ে রাজনীতি এবং কূটনৈতিক অঙ্গনে রীতিমতো তোলপাড় চলছে। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ওয়াশিংটনের পাশাপাশি মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যরা বেশ সরব রয়েছেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মার্কিন কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন সদস্য পৃথকভাবে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে. ব্লিনকেন এবং জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধি লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ডকে চিঠি লিখেছেন। 

গণতন্ত্র এবং নির্বাচনের পাশাপাশি মার্কিন কংগ্রেসের এসব সদস্য মত প্রকাশ এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাসহ সামগ্রিকভাবে মানবাধিকার সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন। মানবাধিকার ও সুশাসন নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও বহুমাত্রিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিভাগের সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউ সদ্য ঢাকা সফর করে গেছেন। চলতি মাসের দ্বিতীয়ার্ধে প্রতিরক্ষা সংলাপে যোগ দিতে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো প্যাসিফিক কমান্ডের কৌশলগত পরিকল্পনা ও নীতিবিষয়ক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল টমাস জেমস। এ ছাড়া আগামী মাসের প্রথমার্ধে মার্কিন বাণিজ্য দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া-বিষয়ক সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চের ঢাকা আসার কথা রয়েছে।