বিষের বোতল হাতে কলেজছাত্রীর অনশন

মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার বাইশাকান্দা ইউনিয়নের বেরশ গ্রামের গনেশ বৈরাগীর বাড়িতে আমরণ অনশন শুরু করেন ওই কলেজছাত্রী।

বিষের বোতল হাতে কলেজছাত্রীর অনশন

প্রথম নিউজ, ধামরাই: ঢাকার ধামরাইয়ে বিষের বোতল হাতে নিয়ে বিয়ের দাবিতে এক পুলিশ কনস্টেবলের বাড়িতে অমরণ অনশনে বসেছেন কলেজ পড়ুয়া এক তরুণী। বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তিনি এ বাড়ি ছাড়বেন না। বিয়ে না হলে বিষপানে  আত্মহত্যা করবেন বলে জানান।

মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার বাইশাকান্দা ইউনিয়নের বেরশ গ্রামের গনেশ বৈরাগীর বাড়িতে আমরণ অনশন শুরু করেন ওই কলেজছাত্রী। এর আগে সোমবার সকালের দিকে তিনি ওই বাড়িতে গিয়ে ওঠলে তাকে দেখেই পুলিশ সদস্য সুব্রত বৈরাগী পালিয়ে যান। পরে তাকে মারধর করে ওই বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় পরিবারের লোকজন।  এ ঘটনায় ওই কলেজছাত্রী বিষের বোতল হাতে নিয়ে মঙ্গলবার সকালে ফের ওই বাড়িতে গিয়ে আমরণ অনশনে বসেছেন। সুব্রত উপজেলার বাইশাকান্দা ইউনিয়নের বেরশ গ্রামের গনেশ বৈরাগীর ছেলে। তিনি বর্তমানে টাঙ্গাইলের  ধনবাড়ী থানায় কর্মরত আছেন বলে জানা গেছে।

ওই তরুণী মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার কাট্রাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।  তিনি বর্তমানে সাভার উপজেলার  একটি ভাড়াবাসায় পরিবারসহ থাকেন। ওই তরুণী ঢাকার মোহাম্মদপুর লালমাটিয়া কলেজের অনার্স ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী।

ওই তরুণী বলেন, গত দেড় বছর আগে আমার সঙ্গে সুব্রতর পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে শুরু হয় প্রেমের সর্ম্পক। আমি প্রথম দিকে পাত্তা দেয়নি। কিন্তু আমাকে কলেজে গিয়ে মাঝেমধ্যে বিরক্ত করতেন। এ নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করেছিল। এরপর তিনি আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন; আমিও রাজি হই। আমাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিভিন্ন জায়গায় বেড়ানোর কথা বলে সুব্রত আমার সঙ্গে কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন। তবে আমি তাকে বার বার নিষেধ করার পরও তিনি আমার কথা মানেননি। এতদিন পর্যন্ত ভালোভাবেই চলছিল। গত বৃহস্পতিবার বিয়ের কথা বলি সুব্রতকে। কিন্তু এরপর থেকে সুব্রত আর আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেন নাই।  কোনো উপায় না পেয়ে আজ সকালে ওদের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেই। এরপর সুব্রতর মা-বাবা ও বোন আমাকে পিটিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন। 

ওই তরুণী আরও বলেন, এখন যদি সুব্রত আমাকে বিয়ে না করে তাহলে আমি এই বাড়িতে আত্মহত্যা করব। এলাকার লোকজন মীমাংসার জন্য এক জায়গায় বসবে বলে জানিয়েছেন। তারা যদি সঠিক বিচার না করে, তাহলে আমি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করব।

বাইশাকান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ওই মেয়ের সঙ্গে পুলিশ সদস্যের দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক। এর আগেও আমার কাছে বিচার চেয়েছিল, আমি পুলিশ সদস্য সুব্রতকে হাজির হতে বলে ছিলাম। কিন্তু তিনি হাজির হননি। তবে আমি চাই মেয়েটাকে বিয়ে করুক।

বাইশাকন্দা ইউনিয়নের বিট পুলিশের এসআই মো. ফয়েজ বলেন, একটা মেয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন করছে তা আমি জানি না। তবে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।